শান্তনু নস্কর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: পঞ্চায়েত ভোট (Panchayat Election 2023) যতই এগিয়ে আসছে, ততই কি দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবায় (Gosaba) তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল (TMC Infighting) প্রকট হয়ে উঠছে? হালের একটি ঘটনায় সে রকমই ইঙ্গিত। গত কাল অর্থাৎ রবিবার, দলীয় একটি কর্মী বৈঠকে গোসাবার বিধায়ক সুব্রত মণ্ডলকে বিশ্বাসঘাতক বলেন কুমিরমারি গ্রাম পঞ্চায়েতেরই তৃণমূল প্রধান দেবাশিস মণ্ডল। আর তার পর থেকে ফের অক্সিজেন পায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জল্পনা।


কী বলেন পঞ্চায়েত প্রধান? 
বিধায়ক নিজের গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় পরিবারতন্ত্র চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ ছিল দেবাশিস মণ্ডলের। এতেই শেষ নয়। তাঁর দাবি, বিজেপির সঙ্গে গোপন আঁতাত রেখে দলের ক্ষতি করছেন সুব্রত।  সর্বোপরি বিধায়কের বাবা একজন অযোগ্য সন্তানের জন্ম দিয়েছেন বলেও আক্রমণ শানান কুমিরমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। শুধু দেবাশিষ নন, রাধানগর তারানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের যুব তৃণমূলের সভাপতি হাসান মোল্লাও তির্যক আক্রমণ করেন বিধায়ককে। তিনি দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত, ইডি তাঁকেও ডাকবে বলে দাবি করেন এই যুব তৃণমূল নেতা। পাশাপাশি বিধায়ককে ষাঁড় বলেও কটাক্ষ করেন হাসান, এমনই দাবি। রবিবারের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন গোসাবা ব্লক তৃণমূলের নেতৃত্বরাও। তাঁদের সামনেই এভাবে একের পর এক বিধায়ককে কটাক্ষ করেন তৃণমূল নেতারা। যদিও বিধায়কের বক্তব্য, 'আমাকে গালাগালি দিয়ে লাভ নেই। যাঁরা দিচ্ছেন, তাঁরা হয়তো জনমানসে গ্রহণযোগ্যতা হারানোর সিঁদুরে মেঘ দেখছেন। ভয় পাচ্ছেন। দল যে সার্ভে করছে, তাতে হয়তো তাঁরা আতঙ্কিত। হয়তো মনে করছেন, আগামী দিনে টিকিট পাবেন না। তাই এই সব বলছেন।'


আগেও সমালোচনা...
গত মাসের শেষ দিকে তৃণমূলের পার্টি অফিসের কর্মিসভায় দাঁড়িয়ে দলীয় কর্মীদের সামনে গোসাবার তৃণমূল বিধায়ক সম্পর্কে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি  সুবিদালী ঢালি। সুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে বিজেপির সঙ্গে আঁতাঁতের অভিযোগ আনেন তিনিও। বলেন, "বিজেপির লোকগুলিকে দলে স্থান দেওয়ার বিরোধিতা করেছিলাম। চরম বিরোধিতা করেছিলাম। সেই প্রতিহিংসায় উনি আমাদের পাঠানখালি অঞ্চল ও গোসাবা ব্লকে দুটি করে পার্টি অফিস করেছেন। বিজেপির লোকেদের মাথায় তুলেছেন। তাঁদের দলের পতাকা হাতে তুলে, শৃঙ্খলা না মেনে ব্যক্তিগতভাবে উনি চালিয়ে যাচ্ছেন।" যদিও অঞ্চল সভাপতি ও ব্লক কার্যকরী সভাপতির এই অভিযোগকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাননি তৃণমূল বিধায়ক। সুব্রত মণ্ডল বলেন, "আমাদের দলের লোক কেউ এটা বলবে না। যাঁরা বলছেন, নিন্দুকরা বলছেন। আমাদের দল সুশৃঙ্খলভাবে চলে । আমাদের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সুচিন্তিত লোকজন আছেন সমস্ত জায়গায়। এই ধরনের ব্যক্তিগত কে কোথায় মন্তব্য করছেন, তা নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করতে চাই না।" যদিও এই ঘটনার এক মাস পেরোতে না পেরোতেই ফের এক অভিযোগ বিধায়কের বিরুদ্ধে।


আরও পড়ুন:কোন্নগরে ধুন্ধুমার, সুকান্তকে রিষড়ায় ঢুকতে বাধা, ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা বিজেপি কর্মীদের