শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: পঞ্চায়েত ভোটের (panchayat election) আগে তুফানগঞ্জে (tufangunj) দলের 'অন্তর্কলহ' (innerfighting) ঘিরে অস্বস্তি বাড়ছে কোচবিহার (coochbehar) জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের। দিনদুয়েক আগে তুফানগঞ্জ দু'নম্বর ব্লক কমিটি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রকাশ্যে মুখ খুলে ছিলেন দলের পুরনো নেতারা। এবার সেই নেতাদের বিরুদ্ধে মিছিল করলো তৃণমূলের অন্য অংশ।
কী হল?
নতুন ব্লক কমিটি ঘোষণার পর থেকে তৃণমূলের অন্দরের দ্বন্দ্ব যে থামার লক্ষণ নেই, তা মোটামুটি স্পষ্ট। কমিটি পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে দিনদুয়েক আগে খোদ তৃণমূলনেত্রী ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা-কর্মীদের একাংশ। এঁদের মধ্যে ছিলেন তুফানগঞ্জ ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি স্বপন সাহা। ছিলেন প্রাক্তন ব্লক সভাপতি রথীন মণ্ডল-সহ অন্যান্য পুরনো নেতারাও। এদিন সেই নেতাদের বিরুদ্ধে পথে নেমে মিছিল করে তৃণমূলের অন্য অংশ। নেতৃত্ব দেন দু'নম্বর ব্লক সভাপতি চৈতি বর্মন বড়ুয়া। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই ঘটনায় যে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের অস্বস্তি বাড়িয়েছে তা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না রাজনৈতিক মহলের। যদিও এ নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন তাঁরা।
কীসের প্রতিবাদে চিঠি?
সম্প্রতি তুফানগঞ্জ ২ নম্বর ব্লকে তৃণমূলের ব্লক কমিটি গঠন করা হয়। ব্লক সভাপতি করা হয় সিপিএম থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া চৈতী বর্মন বড়ুয়াকে। দলের একাংশ নেতা-কর্মীর অভিযোগ, এর নেপথ্যে রয়েছে মোটা অঙ্কের টাকার লেনদেন। তুফানগঞ্জ (২) পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা স্বপন কুমার সাহার অভিযোগ ছিল, দলে পুরনোরা গুরুত্ব পাচ্ছে না। ২০২১ -র বিধানসভা ভোটে যাঁরা দলের হয়ে কাজ করেননি, তাঁদের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে কমিটিতে। অভিযোগ ছিল তাঁর। এই পরিস্থিতিতে গত শনিবার, শালবাড়িতে বৈঠক করে, ব্লক কমিটি পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠান তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের একাংশ। যদিও তুফানগঞ্জ (২) ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি বলেন চৈতী বর্মন বড়ুয়া তখনই জানিয়েছিলেন. এই বৈঠক পার্টি বিরোধী। তাঁর কথায়, 'রাজ্য আমাকে ব্লক সভাপতি করেছে। টাকা দিয়ে নয়, অনায্য দাবি। সবাইকে নিয়ে চলার চেষ্টা করছি। গ্রুপবাজি করছে ওরা।' পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূলের অন্দরের বিবাদ প্রকাশ্যে আসতেই কটাক্ষ করে বিজেপি। যদিও তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতিকে ফোন করা হলে তিনি সে দিন কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগে, তৃণমূলের রাজ্য সহ সভাপতি ও কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্য়ান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলেন, দলের পুরনো কর্মীরা ভাল নেই।উত্তরবঙ্গের এই হেভিওয়েট নেতার পেজে এমন পোস্টে চাঞ্চল্য ছড়ায়। তবে কি পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলের অন্দরে সিঁধ কেটে ঢুকে পড়েছে অন্তর্কলহ?
আরও পড়ুন:গোলপার্কের কাছে পরিত্যক্ত বাড়িতে আগুন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় দমকলের ২ ইঞ্জিন