কলকাতা: সন্দেশখালিকাণ্ডের জেরে এখনও সরগরম বাংলার রাজনীতি। সেই আবহেই কলকাতার ব্রিগেডে তৃণমূলের 'জনগর্জন' সভা। লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের এই ব্রিগেড জনসমাবেশ একাধিক কারণে গুরুত্বপূর্ণ। এই সমাবেশ থেকেই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করতে চলেছে জোড়াফুল শিবির। আর ব্রিগেডের সেই মঞ্চে উঠেই মা-মাটি-মানুষের উদ্দেশে মাথানত করলেন দলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। (Abhishek Banerjee)


দুর্নীতি মামলায় একের পর এক নেতার নাম জড়িয়েছে এক দিকে, অন্য দিকে, সন্দেশখালিকাণ্ড অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে তৃণমূলকে। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল BJP এবং তাদের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব লাগাতার  সেই নিয়ে জোড়াফুল শিবিরকে কোণঠাসা করে চলেছে। সেই আবহেই রবিবার দুপুরে কলকাতার ব্রিগেডে তৃণমূলের এই 'জনগর্জন' সমাবেশ, ঘোষণার মাত্র ১২ দিনের মাথায়। (TMC Jonogorjon Sabha)


লোকসভা নির্বাচনের আগে এই 'জনগর্জন' সমাবেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তৃণমূলের কাছে, যার মধ্য়ে অন্যতম হল, BJP-র বাড়বাড়ন্তের মধ্যেও শক্তি প্রদর্শন, নবীন-প্রবীণ ঐক্যপ্রদর্শন এবং কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে গোটা বাংলাকে বার্তা দেওয়া। যে কারণে এই সভা ঘিরে গোড়া থেকেই তৎপরতা ছিল তুঙ্গে। নিজে দাঁড়িয়ে থেকে এই সমাবেশে তদারকি করতে দেখা যায় অভিষেককে। 


আরও পড়ুন: Jono Gorjon Sabha Live: ব্রিগেডের জনগর্জন সভায় পৌঁছলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়


রবিবার দুপুরে মমতার কিছু ক্ষণ আগেই এদিন ব্রিগেডের মঞ্চে পৌঁছন অভিষেক। সভামঞ্চে উঠে ব়্যাম্প দিয়ে হেঁটে সোজা মানুষের মাঝে পৌঁছে যান তিনি। ভিড় মেপে দেখেন। আর তার পরই সকলের সামনে নতজানু হয়ে বসে পড়েন। মাথা ঠেকিয়ে প্রণাম নিবেদন করেন মা-মাটি-মানুষকে। চারিদিক তখন 'অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ' স্লোগানে মুখরিত। 


সাষ্টাঙ্গ প্রণাম নিবেদন করে মা-মাটি-মানুষকের প্রতি বিনয় দেখালেও, BJP-কে রেয়াত করেননি অভিষেক। জানান, ১২ দিনের মাথায় ঐতিহাসিক সমাবেশের আয়োজন করে দেখিয়ে দিয়েছে তৃণমূল। যারা তৃণমূলের মেয়াদ গুনছে, এই সমাবেশ বাংলা থেকে সেই বহিরাগতদের বিসর্জন-যাত্রায় সিলমোহর দিল। BJP নয়, বাংলার খেটে খাওয়া মানুষ যে তৃণমূলের পাশে, এই সভাই তার প্রমাণ বলে জানান অভিষেক।


লোকসভা নির্বাচনের আগে এদিন ফের ঘর বনাম বাহিরের তত্ত্ব তুলে ধরেন অভিষেক। তাঁর বক্তব্য, "BJP-র বহিরাগত নেতারা বড় বড় ভাষণ দিয়েছেন। BJP-র কাছে সব আছে, তৃণমূলের সঙ্গে আছে মানুষ। আগামীর রায়, স্বৈরাচারীর বিদায়। যারা বাংলা বোঝে না, বাংলার মন বোঝে না, তার থেকে বাংলার গ্যারান্টি নেবেন আপনারা?" শুধুমাত্র নির্বাচনী স্বার্থেই বাংলায় BJP-র বহিরাগত নেতাদের আনাগোনা শুরু হয়েছে বলেও এদিন দাবি করেন অভিষেক। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর কত বার বাংলায় এসেছিলেন মোদি, প্রশ্ন তোলেন তিনি। লোকসভা নির্বাচনের আগে ফের কেন্দ্রীয় BJP নেতৃত্বের আনাগোনাও নির্বাচনী স্বার্থে বলে জানান।