আবির দত্ত, কলকাতা: গরুপাচারকাণ্ডে সিবিআই-এর দায়ের করা মামলাকে 'ফলস কেস' বললেন অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। জামিন দেওয়ার জন্য বিচারকের কাছে আর্জি বীরভূমের তৃণমূলের (TMC) সভাপতির। বললেন, "শরীর ভাল নেই। আসানসোলে ফিরিয়ে দিন আমাকে।" ভার্চুয়াল শুনানি চলাকালীন দিল্লিতে বিচারকের কাছে আর্জি অনুব্রতর (Cattle Smuggling Case)।


তিহাড় জেল থেকে ভার্চুয়াল শুনানিতে হাজির অনুব্রত


বৃহস্পতিবার দিল্লিতে ভার্চুয়াল মাধ্যমে শুনানি চলছিল। তিহাড় জেল থেকে সেই শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন অনুব্রত এবং তাঁর দেহরক্ষী হিসেবে একসময় কাজ করা সায়গল হোসেন। শুনানি চলাকালীন প্রথমে অনুব্রতকেই প্রশ্ন করেন বিচারক। কেমন আছেন জানতে চাইলে অনুব্রত বলেন, "আমার শরীর ভাল নেই।"


আরও পড়ুন: Sukanya Mondal: কেবল গরু পাচারই নয়, অনুব্রত-কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের নাম জড়ায় নিয়োগ দুর্নীতিতেও


আসানসোল জেলে ফিরতে চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন অনুব্রত। সেই আবেদনের কী অবস্থা জানতে চান বিচারক। তাতে অনুব্রত জানান, মামলা চলছে। বিচারক মনে করলে তাঁকে আসানসোল জেলে ফিরিয়ে দিতে পারেন। এর পরই বিস্ফোরক দাবি করেন অনুব্রত। সিবিআই-কে কাঠগড়ায় তুলে বলেন, "এমনিতে সব ঠিক আছে। কিন্তু সব মামলা মিথ্যা। আমাকে জামিন দিন।"


সিবিআই-এর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অনুব্রত


অনুব্রতর জবাব শুনে বিচারক জানান, অনুব্রতর কথা শুনলেন তিনি। কিন্তু এসব অর্থহীন। কারণ আদালতের কাছে শুধুমাত্র কাগজেরই মূল্য় রয়েছে। তাঁর বিষয়টি দেখছে আদালত। তবে সিবিআই-এর বিরুদ্ধে অনুব্রতর এই অভিযোগ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে, বিশেষত গতকালই যখন গরুপাচার মামলার তদন্তে অনুব্রত-কন্যা সুকন্যাকে গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।


সুকন্যাকে আজ রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে পেশ করবে ED. সুকন্যার বিরুদ্ধে ইডি-র হাতিয়ার হতে চলেছে তাঁর এবং তাঁর বাবার ঘনিষ্ঠদের বয়ানই। ইডি-র দাবি, আর্থিক লেনদেন সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল ছিলেন সুকন্যা। আর্থিক লেনদেনে সরাসরি যুক্ত ছিলেন অনুব্রত-কন্যা। ইডি-র দাবি, তদন্তে দেড়শো-দু’শো ব্যাঙ্কে নগদ জমার রসিদ মেলে। টাকার অঙ্ক ছিল ১০ কোটির বেশি। যা নগদে জমা পড়েছে।


ইডি-র দাবি, অনুব্রতর পরিচারক, রাঁধুনি, সুকন্যার গাড়ি চালকরা বিভিন্ন সময়ে ব্যাঙ্কে গিয়ে টাকা জমা করেছেন। কে টাকা পাঠিয়েছে জানতে চাইলে তাঁরাই সুকন্যার নাম করেন। ইডি সূত্রের খবর, তথ্যপ্রমাণ দেখালেও সুকন্য়া জবাব এড়িয়েছেন। বারবার দাবি করেন, সব জানেন বাবা আর তাঁদের চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট মণীশ কোঠারি। ইডি-র দাবি, সুকন্যার দাবি যে ঠিক নয়, তা জানান অনুব্রত-ঘনিষ্ঠরাই। গতকালও বাবার দিকেই দায় ঠেলায়, সুকন্যাকে গ্রেফতার করা হয়।  


ইডি-র দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, শুধু অনুব্রত নন, সুকন্যাও নির্দেশ দিতেন। রাইস মিল ও অন্যান্য ক্ষেত্রে টাকা লেনদেনে সরাসরি যুক্ত ছিলেন সুকন্যা। কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি, জায়গা-জমি ছাড়াও ব্যাঙ্কে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের কোনও সদুত্তর সুকন্যা দেননি বলে ইডি-র দাবি। আজ রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে এই সমস্ত তথ্যপ্রমাণ পেশ করে অনুব্রত-কন্যাকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে ইডি।