বোলপুর (বীরভূম) : নজিরবিহীনভাবে বিজেপির অন্তঃর্দ্বন্দ্ব শুক্রবার চলে এসেছে প্রকাশ্যে। আর আর যে ঘটনা নিয়ে বিজেপির বর্তমান ও প্রাক্তন রাজ্য সভাপতিকে নজিরবিহীনভাবে আক্রমণ করলেন অনুব্রত মণ্ডল। পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার দাঁইহাটে বিজেপির বিশেষ সাংগঠনিক বৈঠকে লঙ্কাকাণ্ড বাঁধে শুক্রবার। প্রাক্তন ও বর্তমান রাজ্য সভাপতির সামনেই তুমুল মারামারিতে জড়িয়েছেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। মাটিতে ফেলে একে অপরকে মারধর চলেছে। দিলীপ ঘোষকে শুনতে হয়েছে গো ব্যাক স্লোগান। আর যা নিয়ে বিজেপির প্রাক্তন ও বর্তমান রাজ্য সভাপতিকে ব্যক্তি আক্রমণের পাশাপাশি খোঁচা দিয়েছে তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি। অনুব্রত মণ্ডল এদিন বিজেপির দ্বন্দ্ব ঘিরে বলেছেন, 'এক ভেড়া ছিল, এক ছাগল এসেছে, ছাগল আর ভেড়ার বুদ্ধি কেমন হবে,যেমন ছাগল, তেমন ভেড়া। আগে যে রাজ্যের বিজেপি প্রেসিডেন্ট ছিল সে ভেড়া, এখন যে প্রেসিডেন্ট সে ছাগল। এক ভেড়া আর এক ছাগল গিয়েছে, মানুষ মানবে কেন?'
দেখুন- অনুব্রত মণ্ডলের বক্তব্য
এদিন ঝামেলার সূত্রপাত পূর্ব বর্ধমান জেলার বিজেপি সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষকে ঘিরে। বিক্ষুব্ধ বিজেপিকর্মীদের অভিযোগ, দিলীপ ঘোষ ঘনিষ্ঠ বিজেপির জেলা সভাপতি দুর্নীতিগ্রস্ত। তাঁকে সরানোর দাবি উঠলেও, কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে এদিন দাঁইহাটে সাংগঠনিক বৈঠকের ডাক দেয় বিজেপি। সেখানে আসার কথা ছিল রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, এই দুই নেতার আসার আগেই, সভাস্থলে ঢুকে পড়ে ৩০-৩৫ জনের বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীদের একটি দল। শুরু হয় চেয়ার ছোড়াছুড়ি। এখানেই শেষ নয়, অভিযোগ মারধর করা হয় জেলা বিজেপি সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষকে। মারতে মারতে সভাস্থল থেকে বের করে দেওয়া হয় কিষাণ মোর্চার জেলা সভাপতি আনন্দ রায়কে।
কোনওরকমে পরিস্থিতি সামাল দেন উপস্থিত বিজেপির কর্মী সমর্থকরা। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌছন দিলীপ ঘোষ ও সুকান্ত মজুমদার। তখন দিলীপ ঘোষকে গো ব্যাক স্লোগান দেন বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। পাল্টা বিক্ষুব্ধ কর্মীদের পুলিশ দিয়ে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দেন দিলীপ ঘোষ। এরপর বিক্ষুব্ধদের সভাস্থলের বাইরে বের করে দিয়ে গেট বন্ধ করে দেয় পুলিশ। গোটা ঘটনা নিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেছেন, 'ক্ষমতায় আসবে এই ভেবে অনেকে এসেছিল। তারাই এসব করছে।'
যদিও এদিনের ঘটনার নেপথ্যে তৃণমূলের হাত দেখছেন বিজেপির বর্তমান রাজ্য সভাপতি। সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, 'তৃণমূল এগুলো করিয়েছে। বিজেপির কেউ থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' যে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে পূর্ব বর্ধমানের তৃণমূল কংগ্রেস জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, 'বিজেপির নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। তৃণমূল যুক্ত নয়।'
আরও পড়ুন- ফেসবুক লাইভে ক্ষোভপ্রকাশ, উত্তর ২৪ পরগনায় প্রকাশ্যে বিজেপির দ্বন্দ্ব
আরও পড়ুন- 'হরিদাস', নাম না করে পূর্ব বর্ধমানের তৃণমূল জেলা সভাপতিকে নিশানা দলেরই নেতার