কলকাতা: বিজেপি-র পদাধিকারী বাছাই নিয়ে তৃণমূলে (TMC) দ্বন্দ্বের খবর শোনা যাচ্ছিল। সেই আবহে দলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষকে (Kunal Ghosh) এ বার আক্ষরিক অর্থেই ড্যামেজ কন্ট্রোলে দেখা গেল। তৃণমূল-ত্যাগী তমোঘ্ন ঘোষকে নিয়ে সরাসরি দলের সাংসদ সুদীপ বন্দ্য়োপাধ্যায়কে (Sudip Banerjee) নিশানা করেন বরানগরের বিধায়ক তাপস রায় (Tapas Roy)। বুধবার সেই তাপসের বাড়িতেই হাজির হলেন কুণাল। রুদ্ধদ্বার বৈঠক করলেন দু'জনে, যা নিয়ে কৌতূহল বাড়ছে।
দলের অন্দরে দ্বন্দ্বের খবরের মধ্যেই তাপসের বাড়িতে কুণাল
সোমবার বিজেপি-র (BJP) উত্তর কলকাতার সভাপতি করা হয়েছে তৃণমূল ছেড়ে আসা তমোঘ্ন ঘোষকে। তমোঘ্ন ঘোষের বাবা তপন ঘোষ এখনও তৃণমূলে আছেন। তিনি কলকাতা উত্তরের বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন। এই প্রেক্ষাপটে তমোঘ্নকে বিজেপি-র এই গুরুত্বপদে বসানো নিয়ে, সুদীপের দিকে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেন তাপস। তিনি বলেন, "তমোঘ্নকে দিদিমণির সামনে নিয়ে গিয়েছিলেন সুদীপ বন্দোপাধ্যায়। ওর বাবা তপন ঘোষ সাংসদের সচিব। কে যে কার ব্যক্তি স্বার্থে কি করেন সেটা দেখার।"
গতকাল তাপস আরও বলেন, "সকলেই সব জানে। তমোঘ্নদের বাড়িতে দুর্গার পুজো হয়, সেখানে শুভেন্দু- সুদীপ- কল্যাণ চৌবে গিয়েছিলেন। সবাই সব খোঁজ রাখেন। দলকে এখন দেখতে হবে, কাদের কাদের গ্রহণযোগ্যতা আছে। আমি ৫১ বছর ধরে রাজনীতিতে আছি। আমি অনেক কিছুই জানি৷ আমি কিন্তু চিনতে পেরেছি, চিহ্নিত করেছি।"
আরও পড়ুন: Calcutta High Court: মোমিনপুরকাণ্ডে পুলিশের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ হাইকোর্টের
তাপসের এই মন্তব্যের পর কুণাল বলেন, "বিজেপির নিয়োগ নিয়ে কথা বলব না। ও তো সুদীপ বন্দোপাধ্যায়কে জ্যেঠু বলত! আদি বিজেপির নেতাদের থুতু ফেলে ডুবে মরা উচিত। আমি তো মনে করি, সুদীপ বন্দোপাধ্যায় পাঠিয়েছিলেন, উনিই তুলে নেবেন।" তার পরই এ দিন তাপসের বাড়িতে যান কুণাল। তাঁদের এই বৈঠক নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ দুর্নীতিকাণ্ডে নাম জড়ানো পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে দু'জনের অবস্থান প্রায় এক। প্রকাশ্যে পার্থর বিরুদ্ধে মুখও খুলতে দেখা যায় তাঁদের। সেই নিয়ে কুণালকে সেন্সর পর্যন্ত করে তৃণমূল।
কেন্দ্রীয় সংস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে ফের প্রশ্ন কুণালের
তবে এ দিন রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন কুণাল এবং তাপস। সেখানে নিয়োগ দুর্নীতিতে দলের বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য গ্রেফতার হওয়ায় দলের মুখ পুড়েছে কিনা জানতে চাইলে কুণাল বল বলেন, "সেটা মুখের উপর নির্ভর করছে। নারদকাণ্ডে টাকা নেওয়ার ভিডিও সামনে আসার পর যদি শুভেন্দুকে কোলে নিয়ে বিজেপি-র মুখ উজ্জ্বল হয়, তাহলে আর কী বলার আছে! প্রশ্নটা বরং সুকান্ত মজুমদারকে করুন।" মানিকের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকার তোলা আদায়, টাকার বিনিময়ে চাকরির অভিযোগ নিয়ে কুণাল বলেন, "এজেন্সি যা বলছে, তা অত্যন্ত খআরাপ এবং উদ্বেগজনক। তবে এটাকে ধ্রুব সত্য বলে মেনে নিয়ে এখনই প্রতিক্রিয়া জানানোর প্রয়োজন নেই। তবে আমরা কাউকে আড়াল করছি না। অন্যায় হয়ে থাকলে শাস্তি পাবে।" একই সঙ্গে কুণাল জানান, কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির উচিত বিজেপি-র রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ না করে, নিরপেক্ষ তদন্ত করার।