আবির ইসলাম, বীরভূম: দুর্নীতির অভিযোগে জেরবার নেতা-মন্ত্রীরা। গা ঢাকা দিয়ে সময় নেওয়ার অভিযোগ উঠছে কারও বিরুদ্ধে। কেউ কেউ আবার সিবিআই (CBI) দফতরে হাজিরা দেওয়া নিয়ে গড়িমসি করছেন বলে অভিযোগ। সেই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে মুখ খুললেন রাজ্যের ক্ষুদ্র এবং কুটিরশিল্প মন্ত্রী তথা বোলপুরের বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিনহার (Candranath Sinha)। তাঁর বক্তব্য, "দু'-একজন নেতা নিশ্চয়ই চুরি করেছেন। কিন্তু মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী পদক্ষেপ করছেন। তাঁরা গ্রেফতার হচ্ছেন।"


বিস্ফোরক মন্তব্য চন্দ্রনাথের!


অতি সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে রাজ্যের দুই মন্ত্রীর। সেই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে মুখ খোলেন চন্দ্রনাথ। তিনি বলেন, "আমাদের কিছু নেতার পদস্খলন হয়েছে। কিন্তু সেটা তো প্রচার করলে তো হবে না! প্রমাণ করতে হবে। দু’একজন নেতা হয়ত নিশ্চয়ই চুরি করছেন, তার জন্য সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ করছেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী। তাঁরা গ্রেফতার হচ্ছেন। কিন্তু বিজেপি-র একটি নেতাও গ্রেফতার হয়েছেন। উত্তরপ্রদেশে ধর্ষণ হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছে? মন্ত্রীর ছেলে গ্রেফতার হন কি! পরে আদালতের চাপে গ্রেফতার করতে হয়। তাি নিজে চুরি করে অন্যকে চোর বলা নয়। 


আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari : 'দেশের সার্বভৌমত্ব, ঐক্য ও সংহতি নষ্টের চেষ্টা করেছে তৃণমূল' কেন এই অভিযোগ শুভেন্দুর ?


সারদা, নারদ থেকে হালফিলের গরুপাচার, কয়লাকাণ্ড এবং সর্বোপরি স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC Recruitment Scam) নিয়োগ দুর্নীতিতে বার বার নাম উঠে এসেছে  তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের (TMC)। এসএসসি দুর্নীতিতে আবার খোদ রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) নাম জড়িয়েছে। যোগ্যতম প্রার্থীকে বাদ দিয়ে, নিজের মেয়েকে চাকরি করে দেওয়ার অভিযোগ বর্তমান শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর বিরুদ্ধে। 


পার্থ চট্টোপাধ্যায়, পরেশ অধিকারী, দুর্নীতির অভিযোগে জেরবার


গত কয়েক দিন ধরেই সেই নিয়ে টানাপোড়েন চলছে। কলকাতা হাইকোর্টের তরফে দুই মন্ত্রীকেই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের (CBI) সামনে হাজিরা দিতে নির্দেশ দেয়। দীর্ঘ টালবাহানার পর সিবিআই দফতরে পৌঁছন পরেশ। ডিভিশন বেঞ্চে আর্জি খারিজ হওয়ার পর জেরায় হাজির হন পার্থও। সেই নিয়ে শাসকদের বিরুদ্ধে সরব বিরোধীরা। তার মধ্যেই চন্দ্রনাথের এই মন্তব্যে বিরোধীদের শাপে বর হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। গুটি কয়েক হলেও, নেতাদের পদস্খলন, চুরি নিয়ে তাঁর এই 'স্বীকারোক্তি', তৃণমূলের জন্য় অস্বস্তির বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।


যদিও চন্দ্রনাথের মতে, কিছু কিছু অভিযোগ এসেছে। সেই বিষয়টিই তুলে ধরেছেন তিনি। তবে অভিযোগ এলেই হয় না, তা প্রমাণও করতে পারাও জরুরি বলে মত তাঁর।