সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি: স্কুলের পোশাকের মান নিয়ে প্রশ্ন শুনে মেজাজ হারালেন চুঁচুড়ার তৃণমূল (TMC) বিধায়ক অসিত মজুমদার (Asit Mazumder)। প্রকাশ্য সভায় ধমক দিলেন অভিভাবককে। 'রাজ্য সরকার নিম্নমানের পোশাক দিলে, তা বলার অধিকার সবার আছে। তৃণমূল বিধায়কের আচরণ লজ্জার', কটাক্ষ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের। 


প্রকাশ্য সভায় ধমক অভিভাবককে, ফের বিতর্কে অসিত মজুমদার


ফের বিতর্কে চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত। হুগলি (Hooghly News) গার্লস স্কুলে এক অভিভাবকের প্রশ্নে মেজাজ হারালেন তিনি। শনিবার হুগলি গার্লস স্কুলের পরিচালন সমিতির সঙ্গে অভিভাবকদের মিটিং ডাকা হয়। উপস্থিত ছিলেন স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার। অনুষ্ঠানের নাম দেওয়া হয়, মুখোমুখি বিধায়ক। 


সেখানেই এক অভিভাবক সরকারের দেওয়া স্কুলের পোশাক নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাতেই রেগে যান অসিত। তিনি বলেন, "আপনি বড় বিপ্লবী, আমি বুঝে গিয়েছি।" ওই অভিভাবক বলার চেষ্টা করেন, "আমি কোনও বিরোধী নই।" কিন্তু কটাক্ষ থামাননি অসিত। বরং তাঁকে বলতে শোনা যায়, "আপনি বড় বিপ্লবী আমি বুঝে গিয়েছি। বসুন।"


এর পর অসিত বলে যান, "সিনেমায় পালিয়ে গেলাম। কোনও লাভ নেই। আমি অনেক কিছু জানি। আমি রাস্তায় ঘুরি। আমাকে ওসব শিখিয়ে লাভ নেই। স্কুলের উন্নয়নের জন্য বলুন। থাকব, কথা বলব, হাজার বার। আর যদি এই সমস্ত করেন, পরের বার আর ডাকবই না, মিটে গেল।" এত সমস্যা হলে ছেলেমেয়েকে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ভর্তি করতে পারেন বলেও ওই অভিভাবককে কটাক্ষ করেন অসিত।


কিন্তু অসিত মেজাজ হারালে, ওই স্কুলের অভিভাবকদের দাবি, স্কুল থেকে নিম্নমানের পোশাক দেওয়া হয়েছে।  পোশাকের রং নয়, গুণগত মান নিয়েই প্রশ্ন তাঁদের। তাই অসিতের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। 


আরও পড়ুন: ৩০ দিনের বেশি গৃহহীনদের ৫ লক্ষ, ভাড়াটেদের ১.৫ লক্ষ, বউবাজারে ঘোষণা ফিরহাদের


তবে এই প্রথম নয়, বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য এর আগেও খবরের শিরোনামে উঠে আসেন অসিত। বিজেপি-র লকেটকে নিশানা করে বলেন, "ও গলার লকেট ছিল। আর আমি চুঁচুড়ায় ওঁকে পায়ের নূপুর করে ছেড়ে দিয়েছি। ও আর কারও গলায় উঠবে না। পায়ের নীচেই থাকবে।"


অভিভাবকের সঙ্গে অসিতের আচরণ নিয়ে এ দিন মুখ খোলেন লকেটও। তিনি বলেন, "খুবই লজ্জার কথা। রাজ্য সরকার নিম্নমানের পোশাক দিচ্ছে, সেটা খারাপ বলার গণতান্ত্রিক অধিকার সবার আছে। মহিলাকে চুপ করানোর জন্য বাজে কথা বলছেন। এই ড্রেস পরে সে সিনেমা দেখতে যায়। এই বিধায়ক ৬ থেকে ৬০ বছরের মহিলাদের সবাইকে বাজে কথা বলে। বাংলার মহিলাদের বিরুদ্ধে বলব এই লোকটার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুন। এই ধরনের পোশাক ওঁকে উপহার দেওয়া উচিত।"


বার বার বিতর্কে জড়িয়েছেন অসিত


যদিও বুঝতে ভুল হয়েছিল বলে পরে জানান অসিত। তিনি বলেন, "আমার পোশাকের কোয়ালিটির ব্যাপারে টেন্ডার ডাকে সরকার, সেই অনুযায়ী মাল আসে। কিন্তু সেই কোয়ালিটিটা আমাদের দেখে নেওয়া উচিত ছিল। আমি এটার স্পেসিফিক অ্যাকশন নেব। এবং ডিএমকে বলব যে এজেন্সি পোশাকের বরাদ্দ পেয়েছে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার। কেউ নাটক করলে, ইচ্ছে করে কাঁদলে কিছু করার নেই।" তবে বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না অসিতের।