কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা : আর জি কর-কাণ্ডের আবহে মুখ্যমন্ত্রী উৎসবে ফেরার বার্তা দিয়েছেন। তার মধ্যেই এবার শাসক দলের বিধায়কের গলায় উৎসব বিমুখতা। প্রাক্তন আইপিএস অফিসার ও ডেবরার বিধায়ক হুমায়ন কবীরের কথায় অস্বস্তি বাড়ল তৃণমূলের। আর জি কর-কাণ্ডে চরম অস্বস্তিতে তৃণমূল সরকার। প্রাক্তন মন্ত্রী, প্রাক্তন আইপিএস অফিসার ও ডেবরার বিধায়ক হুমায়ন কবীরের কথায় অস্বস্তি আরও বাড়তে পারে। বললেন, 'নতুন জামা কাপড় কিনিনি নিজের জন্য। মেয়েটির কথা শুনে আমার মনটা খারাপ হয়ে গেছে। ' মুর্শিবাদের ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ন কবীর যখন মাঝেমাঝেই আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের হুমকি দিচ্ছেন, তখন প্রাক্তন আইপিএস অফিসার হুমায়ুন কবীর কিন্তু একেবারেই তাঁর বক্তব্য়ের সঙ্গে সহমত নন।


আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসককে খুন-ধর্ষণের প্রতিবাদে উত্তাল কলকাতা, জেলা ও দেশ। বিদেশের মাটিতেও উঠেছে বিচার চেয়ে প্রতিবাদের ঢেউ। তার মধ্যেই সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর উৎসবে ফেরার বার্তা ঘিরে বিতর্কের ঝড় ওঠে। তিনি বলেন, '১ মাস তো হয়ে গেল। আজকে ৯ তারিখ। আমি অনুরোধ করব, পুজোতে ফিরে আসুন। উৎসবে ফিরে আসুন।' এই মন্তব্য নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। পক্ষ - বিপক্ষ যুক্তিতে সরগরম হয়ে ওঠে রাজনীতি থেকে নেটপাড়া। 


এরই মধ্যে তাঁরই দলের বিধায়ক বলছেন, 'ঠাকুর দেখতেও বেরোবে না এবার। আমার ছেলে ডাক্তার। একই বয়সী হয়তো, একটু আগে পাশ করে বেরিয়েছে। ওকে দেখলেই মেয়েটার কথা মনে পড়ে। সব সময় মনে পড়ছে। কোথায় এটা চিনচিন করে কষ্ট হয়। পুজোর সময় পাজামা পাঞ্জাবি কিনি।  ধুতি পরি। এবার কিছুই কিনব না । ভালো লাগছে না একদম।' 


প্রাক্তন আইপিএস ও ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে লিখেছেন, 'তৃতীয় বর্ষের পুজোতে নেই তিলোত্তমা। দুই মায়ের চোখে জল, ভারাক্রান্ত মন। আনন্দ আর নতুন জামাকাপড় বাদ।' 


 প্রাক্তন আইপিএস ও তৃণমূল বিধায়ক আরও বলেছেন, 'জনপ্রতিনিধি হিসেবে কার্ড পাঠাতে হয়। শুভেচ্ছা পাঠাতে হয়। ওগুলো হয়তো করব। কিন্তু ভেতর থেকে একটা কষ্ট আছে এবার। একদম ব্যক্তিগত কষ্ট। যখন ছেলেকে দেখি মেয়েটার কথা মনে পড়ে। ছেলে ক্যালকাটা মেডিকেল কলেজে পড়ত। ' 


lতিনি আরও বললেন, 'মুর্শিদাবাদের আর এক হুমায়ুন কবিরের মতো ওভাবে বলতে পারি না আমি। ওনার কথাবার্তার সমর্থন করি না। তবে আমিও আপিল করব, কাজে ফিরুন । আমাদের যা বিচার ব্যবস্থা, তাতে সময় লাগবে। বিচার ওভারনাইট হয় না, ডাক্তারবাবুরা যেটা চাইছেন। আমার আর এক নেমশেক যেভাবে বলছে,  আমি সেভাবে অবশ্যই বলব না। আইনটা আমি বুঝি। আমার মনে হয়, জুনিয়র ডাক্তাররা কাজে ফিরুন।  উৎসবের নাও ফিরতে পারো, কাজে ফেরো।' 


আরও পড়ুন: পুজোর মুখে ফের ভারী বৃষ্টি কলকাতা-সহ জেলায়, উৎসবের আমেজ কি মাটি হবে দুর্যোগে? আবহাওয়া দফতর যা বলছে...