আবির দত্ত, কলকাতা: শুধু নিয়োগ দুর্নীতি নয়, এবার গরুপাচারেও (Cow Smuggling) নাম জড়াল বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার। সিবিআইয়ের দাবি, গরুপাচার তদন্তে জীবনকৃষ্ণের বিরুদ্ধে তথ্য সংগ্রহের কাজ আগেই শুরু হয়েছে।
জীবনকৃষ্ণ সাহার বীরভূম যোগ। সূত্রের দাবি, নিয়োগ দুর্নীতির পাশাপাশি বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার যোগ মিলেছে গরু পাচারকাণ্ডেও।৬৫ ঘণ্টার টানটান নাটক, পুকুরে মোবাইল ফেলা, জঙ্গলে তল্লাশি, পুকুরের জল তুলে খোঁজাখুঁজি, CBI-এর হাতে, তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার গ্রেফতারির আগে গত আড়াই দিন ধরে, এরকম নানা ঘটনার সাক্ষী থাকল মুর্শিদাবাদের আন্দি। ধৃত জীবনকৃষ্ণের সঙ্গে গরু পাচারেরও যোগ পাওয়া গেছে। বীরভূমের ইলামবাজার থেকে মুর্শিদাবাদের বড়ঞা হয়ে বাংলাদেশে গরু পাচার হত। অনুব্রত মণ্ডলের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন জীবনকৃষ্ণ। কেষ্টর হাত ধরেই তাঁর রাজনীতিতে হাতেখড়ি। অনুব্রতর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সূত্র ধরে গরুপাচারে জীবনকৃষ্ণের ভূমিকা কী ছিল, খতিয়ে দেখতে চান কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।
৬৫ ঘণ্টা ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতার বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। গতকাল বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ কলকাতার নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে শুরু হয় তোড়জোড়। ২টি গাড়ি করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের নিয়ে মুর্শিদাবাদের উদ্দেশে রওনা দেন সিবিআইয়ের এসপি ও ডিএসপি পদমর্যাদার ২ অফিসার। রাত ২টো ৩৫ মিনিটে বড়ঞার তৃণমূল বিধায়কের বাড়িতে পৌঁছন সিবিআই আধিকারিকরা। এরপরই গ্রেফতার হন জীবনকৃষ্ণ সাহা। সোমবার ভোর সোয়া ৫টা নাগাদ বিধায়ককে নিয়ে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন সিবিআই আধিকারিকরা। হুগলির ত্রিবেণী, ডানকুনি, সাঁতরাগাছি হয়ে দ্বিতীয় হুগলি সেতু ধরে, সকাল ১০টা ৩৬-এ বিধায়ককে নিয়ে কলকাতার নিজাম প্যালেসে ঢোকে সিবিআইয়ের গাড়ি।
তৃণমূল বিধায়কের আন্দির বাড়িতে সিবিআই অভিযান ঘিরে শুক্রবার থেকেই তৈরি হয়েছিল একের পর এক নাটকীয় পরিস্থিতি। অভিযান শুরু হয় শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টায়। কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে বিধায়কের বাড়িতে পৌঁছয় সিবিআইয়ের একটি দল। শুরু হয় বিধায়ককে জিজ্ঞাসাবাদ। একইসঙ্গে রঘুনাথগঞ্জে বিধায়কের শ্বশুরবাড়িতেও অভিযান চালান কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীনই শুক্রবার বিকেল সোয়া ৫টা নাগাদ তদন্তকারীদের হাত থেকে নিজের দুটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে বাড়ির পুকুরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে জীবনকৃষ্ণের বিরুদ্ধে। ওই দিন রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ জোড়া মোবাইলের সন্ধান পেতে পুকুর থেকে জল তোলার কাজ শুরু হয়। শনিবার বিকেলে বিধায়কের বাড়ির কাছে ঝোপ থেকে উদ্ধার হয় ৫টি ব্যাগভর্তি নথি। যেগুলি নিয়োগ সংক্রান্ত নথি বলে সিবিআই দাবি করেছে। এরপর রবিবার সকালে সাড়ে ৩৮ ঘণ্টা পর, উদ্ধার হয় বিধায়কের একটি মোবাইল।