কলকাতা: তৃণমূলে আদি-নব্য দ্বন্দ্ব চরমে। প্রকাশ্যে এবার বাগযুদ্ধে জড়ালেন দুই প্রবীণ নেতা, সাংসদ সৌগত রায় (Saugata Roy) এবং বিধায়ক মদন মিত্র (Madan on Saugata)। সব সময় সাংসদ বা বিধায়কই হতে হবে, সেই জেদে না থেকে দলের প্রবীণদের সংসগঠনের কাজের দিকে এগনো উচিত বলে একদিন আগেই মন্তব্য করেছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। সেই প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা বিমান বসুর উল্লেখ শোনা গিয়েছিল সৌগর মুখে। বিমানের সঙ্গে তুলনা চলে না বলে এবার সৌগতকে বিঁধলেন মদন। (Madan on Saugata)


সোমবার এবিপি আনন্দে মুখ খোলেন মদন। সৌগত সম্পর্কে তিনি বলেন, "কেউ, কোনও দিন সৌগত রায়ের কাছ থেকে কোনও সাহায্য পায়নি। ভোটে লড়বেন না বলেও তিন বার প্রার্থী হয়েছেন। চতুর্থ বারও লড়ার জন্য পা বাড়িয়ে রয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মন ভাল রাখুন। বয়স আবার কী! আমিও বলছি, মনটা ভাল রাখুন সৌগতদা। মহাভারতের বিদুর ধর্মপ্রাণ মানুষ ছিলেন। উপদেশ দিতেন। শ্রদ্ধা জানিয়েই বলছি, আপনার এখন বিদুরের ধর্ম পালন করা উচিত। আপনি বিদুরের ধর্ম পালন করলে, আমি আপনার মূর্তি গড়ে দেব।"


বয়স নিয়ে গতকালই সংঘাতে জড়িয়েছিলেন কুণাল এবং সৌগত। কুণালের বক্তব্য ছিল, "সিনিয়ররা একটু ভেবে দেখুন। নিজে থেকে প্রস্তাব দিন যে এবার সংগঠনের কাজ করে চান। সব সময় সাংসদ-বিধায়ক হতে হবে, এমনটা কেন হবে?" তার জবাবে সৌগত বলেছিলেন, "কে, কী হবেন, তা মমতাই ঠিক করবেন। বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৮০ বছরের উপর বয়স। বিজেপি-র নিয়ম, ৭৫ বছরের বেশি হলে পদে থাকা যাবে না। তৃণমূলে তেমন কোনও নিয়ম নেই। মমতা বলেছেন, যিনি যোগ্য, তাঁকে পদ দেওয়া হবে।"


আরও পড়ুন: Madan on Saugata: ‘শুধু মমতা-মমতা করছেন, অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ’, ছবি বিতর্কে এবার সৌগতকে বিঁধলেন মদন


সৌগতর সেই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে মদন বলেন, "বিমানদা এককথায় সিপিএম-এর কেয়ারটেকার। সিপিএম-এর পার্টি অফিসে থাকেন, নিজের জামা-কাপড় নিজে কাচেন, পারলে রাঁধেনও নিজে। নীচে নেমে চা খান। দলের কোনও কর্মসূচি নিয়ে মাতব্বরি করেন না। দিল্লির হাভেলিতে কখন যাব, তার জন্য বিমানের টিকিট পেতে দৌড়ন না। ঘরের এক কোণে পড়ে রয়েছেন। বিমানদার সঙ্গে নিজের তুলনা করবেন না। অনেক ত্য়াগের মধ্যে দিয়ে উনি বিমান বসু হয়েছেন। ওঁর সঙ্গে নিজের তুলনা করবেন না।"


শুধু তাই নয়, সৌগত তৃণমূলে বিষ ছড়াচ্ছেন বলেও এদিন দাবি করেন মদন। নেতাজি ইন্ডোরে মমতার সভায় অভিষেকের ছবি না থাকা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই দলের অন্দরে টানাপোড়েন চলছে। সেই প্রসঙ্গে মদন জানান, অভিষেকের গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়ে তোলার নেপথ্যে ছিলেন মমতাই। অভিষেককে সঙ্গে নিয়েই কাজ করতে বলেছেন তিনি। কোথাও বাদ দিতে বলেননি। তাই তাঁদের মধ্যে ফারাক করা উচিত নয়। কিন্তু কিছু মানুষ সেটাই করছেন। দলের বাতাবরণকে বিষাক্ত করে তুলছেন।