কৃষেন্দু অধিকারী, অনির্বাণ বিশ্বাস ও বিজেন্দ্র সিংহ, নয়াদিল্লি: ধর্নায় গিয়ে দিল্লি পুলিশের হাতে আটক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূল সাংসদরা। প্রতিবাদে এ রাজ্যের জেলায় জেলায় বিক্ষোভ। কলকাতায় মুরলীধর সেন লেনে বিজেপি দফতরের সামনে পতাকা হাতে স্লোগান দিলেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। কুলটিতে রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ রাজ্যের শাসকদলের। হুগলির কোন্নগরেও পথে নামেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। তুলকালাম পরিস্থিতি দিল্লির কৃষি ভবনের সামনে, বিক্ষোভ রাজ্যেও।
যা যা ঘটল,..
বাংলার প্রাপ্য আটকে রেখেছে কেন্দ্র, এই অভিযোগে তৃণমূলের দিল্লি অভিযান ঘিরে গত কাল, সোমবার রাজঘাটেও একপ্রস্ত অশান্তি বেঁধেছে। কিন্তু তাতে যে তৃণমূল দমবে না, সে কথা মঙ্গলবার যন্তরমন্তরের ধর্না মঞ্চ থেকেই স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে, সন্ধের দিকে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। সূত্রের খবর, সন্ধে সাড়ে ছটা নাগাদ বৈঠকের কথা হয়েছিল। কিন্তু সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও বৈঠক হয়নি। বলা হয়, নির্দিষ্ট কয়েক জনের সঙ্গে দেখা করতে পারেন গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী। এর পর কৃষি ভবনেই অপেক্ষা করতে থাকেন অভিষেক-সহ তৃণমূলের বাকি সাংসদ-মন্ত্রীরা। ঘড়ির কাঁটা চলতে থাকলেও সেই বৈঠক হয়নি। এদিকে পুলিশের তরফে ৯টা পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল বলে খবর। তার মধ্যে তৃণমূল সাংসদরা কৃষি ভবন ছেড়ে না বেরোনোয় পুলিশবাহিনী ঢুকতে শুরু করে। শুরু হয় তুলকালাম। পুলিশের সঙ্গে জোড়াফুল শিবিরের মন্ত্রী-বিধায়কদের ধস্তাধস্তি হয়। চ্যাংদোলা করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে। একে একে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় দোলা সেন, বীরবাহা হাঁসদাকে। পুলিশ ভ্যানে তোলা হয় প্রত্যেককে। ধস্তাধস্তির মাঝে অনেক ক্ষণ বসেছিলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। শেষে তাঁকেও তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এভাবে দলের মন্ত্রী-সাংসদদের কৃষিভবন থেকে বের করে বাসে তুলে দেওয়ার প্রতিবাদে কৃষি ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তৃণমূল কর্মীরা। আপাতত যা খবর, তাতে তৃণমূলের ওই প্রতিনিধিদলকে আটক করা হয়েছে। বাসে বসে থাকা অবস্থাতেই কেন্দ্র ও বিজেপি সরকারকে ধিক্কার জানাতে শোনা যায় তাঁদের। তা ছাড়া, কৃষিভবনের মধ্যে অপেক্ষার সময় 'মোদি, শাহ হায় হায়' স্লোগান তো ছিলই। দলীয় কর্মীদের প্রশ্ন, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে এ কী রকম আচরণ? পরিস্থিতি সামলাতে তৃণমূল নেতামন্ত্রীদের কৃষি ভবনের পিছনের গেট দিয়ে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। সামনের গেটে মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী।
এর পর...
রাজনৈতিক মহলের বড় অংশের ব্যাখ্যা, চব্বিশের সাধারণ নির্বাচনের আগে এই ধরনের আন্দোলনের মাধ্যমে আসলে তৃণমূলে নেতৃত্বের 'উত্তরাধিকার' কার হাতে থাকবে, তা দৃঢ় করার চেষ্টা হল। ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অবশ্য আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, দাবি না মানলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ফের দিল্লি অভিযান হবে। যদিও রাজধানীর বুকে আজকের পর ঘটনাক্রমের পর নানা প্রশ্ন উঠছেই।
আরও পড়ুন:জলের তলায় চাষের জমি, বন্যা পরিস্থিতি বাঁকুড়ায়, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখলেন বিজেপি বিধায়ক