কলকাতা: শুধুমাত্র নিয়োগ দুর্নীতি মামলাতেই ১৭১ দিনে ছ'বার তলব করা হয়েছে। কখনও সশরীরে হাজির হতে বলা হয়েছে, কখনও আবার নথিপত্র নিয়ে আসতে বলা হয়েছে। তাতে এবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটকে ৬০০০ পাতার জবাবি নথি দিয়ে এলেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বেরিয়ে নিজেই সেকথা জানালেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা নাগাদ সিজিও কমপ্লেক্সে পৌঁছন অভিষেক। এর পর ১২টা নাগাদই বাইরে বেরিয়ে আসেন তিনি। জানান, নথি নিয়ে আসতে বলেছিলেন তদন্তকারীরা। সেই মতো ৬০০০ পাতার নথি জমা দিয়েছেন তিনি। আগামী দিনে ED যদি আবার ডাকে, আবারও আসবেন তিনি। আইনজীবীরা যদিও আসতে বারণ করেছিলেন তাঁকে। কিন্তু লুকনোর কিছু নেই বলেই তিনি এসেছেন।
এর আগে, কখনও আট ঘণ্টা, কখনও ন'ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে অভিষেককে। এদিন এক ঘণ্টার মধ্যেই বেরিয়ে আসেন তিনি। অন্য বার বেরিয়ে এসে কড়া মন্তব্য করলেও, আদালতের নির্দেশ মেনে এদিন সংবাদমাধ্যমের সামনে বেশি কিছু বলতে চাননি অভিষেক। তবে জানান, কখনও তদন্ত এড়াননি তিনি, আজও এড়াচ্ছেন না, ভবিষ্যতেও এড়াবেন না। চাইলে অজুহাত দিতেই পারতেন, কিন্তু তা না দিয়ে চলে এসেছেন।
আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee: মহুয়ার সমর্থনে এগিয়ে এলেন অভিষেক, প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযোগ, সতীর্থের প্রশংসাও
এদিন অভিষেক বলেন, "প্রায় ৬০০০ পাতার জবাব জমা দিয়েছি। তা দেখে আবার মনে হলে ডাকতে পারেন। আবারও হাজিরা দেব আমি। ওঁরা জানিয়েছেন, এত নথি পড়ে দেখতে সময় লাগবে। তার পর প্রয়োজন পড়লে আবার ডাকা হবে।" বার বার এভাবে ডেকে পাঠানোর নেপথ্যে প্রতিহিংসার রাজনীতি রয়েছে বলেও এদিন দাবি করেন অভিষেক। তিনি জানান, আজ পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ দেখাতে পারেনি ED. শুধু বার বার ডেকে পাঠানোই হচ্ছে।
এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, "ঠিকই আছে। এত বড় দুর্নীতি হয়েছে। একাধিক মামলায় ওঁর নাম উঠেছে। কেউ না কেউ ওঁর নাম বলেছে। তাই জানতে চাইছেন। সহযোগিতা করা উচিত ওঁর। উনি চুরি করেছেন, একবারও বলা হয়নি। তদন্তে সহযোগিতা করা উচিত ওঁর।"
সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর কথায়, "অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এতদিন যাননি। বুঝেই গিয়েছেন যে, গিয়ে ফিরেও আসবেন। দিল্লিতে বন্দোবস্ত হয়ে যাবে। মোদি-শাহ কোনও ভাবেই পিসি-ভাইপোকে বিব্রত করতে রাজি নন। আর দরকারটাই বা কী? আদানিদের বিরুদ্ধে কথা বলায় মহুয়ার বিরুদ্ধে যা হল, গত একমাস ধরে একটি শব্দও খরচ করেননি অভিষেক। এখন এসব বলছেন। আমরা তো প্রথম থেকেই বলে আসছি, মহুয়া তৃণমূল সাংসদ হওয়া সত্ত্বেও। অভিষেক কোথায় বাঁধা পড়ে আছেন, মোদি-আদানির কাছে? "