কলকাতা: জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকেও বার বার করে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল। তার পরও যদিও চুপ থাকেননি তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবির। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের হয়ে ব্যাটিং চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি, প্রকাশ্যে ফিরহাদ হাকিম, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়দের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে দলের কিছু লোক ভুল বোঝাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন। সেই নিয়ে এবার হুমায়ুনকে শোকজ নোটিস ধরাতে চলেছে তৃণমূল। তাই বলে চুপ করে যাননি হুমায়ুন। জানিয়েছেন, রাজনীতির ময়দানে কাউকে ভয় পান না তিনি। (Humayun Kabir)


শৃঙ্খলা নিয়ে কড়া বার্তার পরও আগের অবস্থানেই অনড় ছিলেন হুমায়ুন। এবার তাঁকে শোকজ করতে চলেছে জোড়াফুল শিবির। বিধানসভায় শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির বৈঠকে হুমায়ুনকে শোকজের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। বুধবারই তাঁকে শোকজ নোটিস পাঠানো হবে, জবাব দিতে হবে তিন দিনের মধ্যে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে একেবারেই চিন্তিত নন বলে জানিয়েছেন হুমায়ুন। (TMC News)


হুমায়ুন জানিয়েছেন, এখনও শোকজ পাননি। পেলে অবশ্যই যথাযোগ্য জবাব পাঠিয়ে দেবেন। দলের ভাল চান তিনি, নেত্রী দীর্ঘজীবী হোন চান। কিন্তু ব্যক্তিগত ভাবে আঘাত করলে, কোনও দিন আপস করেননি, আগামীতেও করবেন না। হুমায়ুনের দাবে, শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি গড়া হয়েছে। দলের ক্ষতি করতে চাইলে ব্যবস্থা নিতেই পারেন। তাঁকেই বা কেন রেয়াত করবে দল! দল শোকজ পাঠাচ্ছে জেনে বেশ গর্ববোধও করছেন বলে জানিয়েছেন হুমায়ুন। 


এদিন বিধানসভায় শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে পরিষদীয় দলের বৈঠক হয়। সেখানেই হুমায়ুনকে শোকজের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এপ্রসঙ্গে হুমায়ুনের বক্তব্য, "রাজনীতির ময়দানে কাউকে ভয় করি না। যা জানানোর, যথা সময়ে জানাব দলকে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নেত্রী নিয়ে এসেছেন। তাঁর হয়ে কথা বললে শৃঙ্খলাভঙ্গ হবে কেন?" 


হুমায়ুন জানান, ২০১২ সালে কংগ্রেস থেকে ইস্তফা দিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন করেন তিনি। সুব্রত বক্সি, পার্থ চট্টোপাধ্যায় ১০ টাকার রসিদে তাঁকে তৃণমূলের সদস্য করেন। ২০১৫ সালে বিনা নোটিসে বহিষ্কার করা হয়। সেই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন জানান। পরে বিজেপি-র টিকিটে  আড়াই লক্ষ ভোটে জয়ীও হয়েছিলেন। ১৮ মাসের মাথায় মমতার উপর আস্থা রেখেই ফের তৃণমূলে ফেরেন। শুধুমাত্র মুর্শিদাবাদের জন্য বিধায়ক পদেরও তোয়াক্কা করেননি। কংগ্রেসের হাত ছাড়ার সময় তাঁকে যাঁরা 'বিশ্বাসঘাতক' বলেছিলেন, আজ তাঁরাই তৃণমূলে ক্ষমতা ভোগ করছেন। হুমায়ুন জানিয়েছেন, কোনও পরীক্ষা দেওয়ার দরকার নেই তাঁর। দল যদি সাসপেন্ডও করে, তাহলে কী করবেন? হুমায়ুনের দাবি, কলকাতার রাস্তাতেই ঢাকঢোল পিটিয়ে সকলকে পরবর্তী পদক্ষেপ জানাবেন তিনি।