আশাবুল হোসেন ও রাজীব চৌধুরী: বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে জোট নিয়ে জট কাটেনি। সেই আবহেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীকে (Adhir Ranjan Chowdhury) 'বিজেপি-র এজেন্ট', 'বিশ্বাসঘাতক' বলে রেড রোডের ধর্না মঞ্চ থেকে নিশানা করলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Gangopadhyay)। তাঁকে লোকসভা ভোটে জিততে না দেওয়ার চ্যালেঞ্জA ছুড়ে দিলেন তৃণমূল সাংসদ। নাম না করে পাল্টা কটাক্ষ করেছেন অধীরও।
কয়েকমাস আগে, বিজেপি-বিরোধী জোটের মঞ্চে পাশাপাশি ছিল কংগ্রেস-তৃণমূল। আর লোকসভা নির্বাচন যখন দোরগোড়ায়, সেই কংগ্রেসকেই বার বার নিশানা করছে তৃণমূল, যাতে জোট ভাঙার দেওয়াল লিখনই স্পষ্ট দেখছেন অনেকে। মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় যখন কংগ্রেস এবং রাহুল গাঁধীর বিরুদ্ধে তীক্ষ্ণ আক্রমণ শানাচ্ছেন, তাঁর দেখাদেখি, একই মঞ্চ থেকে অধীরের বিরুদ্ধে সরব হলেন তৃণমূলনেত্রীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত কল্য়াণ।
অধীরকে আক্রমণ করতে 'বিজেপি-র বড় এজেন্ট', 'খানদানি বিশ্বাসঘাতকে'র মতো শব্দবন্ধেরও ব্যবহার করলেন কল্যাণ। তাঁর বক্তব্য, "নরেন্দ্র মোদির বিজেপি-র, এই বাংলায় প্রথম যে এজেন্ট, নম্বর ওয়ান এজেন্ট, তাঁর নাম অধীররঞ্জন চৌধুরী। বিজেপি-র বড় দালাল।" এর পাল্টা অধীরকে বলতে শোনা যায়, "জব হাতি চলে বাজার, কুত্তা ভোকে হাজার।"
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: ‘অফ দ্য এজেন্সি, বাই দ্য এজেন্সি, ফর দ্য এজেন্সি’, ED-CBI নিয়ে ফের কেন্দ্রকে আক্রমণ মমতার
গত লোকসভা নির্বাচনে যে অধীর বহরমপুর কেন্দ্রে তৃণমূল এবং বিজেপি-কে হারিয়েছিলেন। এবার তাঁকে হারানোর হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ কল্য়াণ। তিনি বলেন, "পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসকে শেষ করে দেওয়ার জন্য একজন লোকই যথেষ্ট। তাঁর নাম অধীররঞ্জন চৌধুরী। খানদানি বিশ্বাসঘাতকের জায়গায় গিয়েছেন। বাংলা খানদানি বিশ্বাসঘাতক রাজনৈতিক পার্টির নাম হচ্ছে কংগ্রেস, অধীর চৌধুরী। আর যাই হোক, ২০২৪ সালে অধীর চৌধুরী ভারতবর্ষের লোকসভায় ফিরে যাবেন না । আমরা এটা প্রমাণ করে দেব। সিপিএমৃএর সঙ্গে থাকবে, বিজেপি-র সঙ্গে থাকবে, তাঁর সঙ্গে আমাদের থাকতে হবে কেন?"
১৯৯৯ সাল থেকে বহরমপুরের পাঁচ বারের কংগ্রেস সাংসদ অধীর। ২০১৯ সালে মুর্শিদাবাদের বাকি দু'টি লোকসভা আসনে তৃণমূল জিতলেও, বহরমপুরে ৮০ হাজারের বেশি ভোটে অধীর চৌধুরীর কাছে হেরে যায় তৃণমূল। তাই কংগ্রেস নেতা মনোজ চক্রবর্তী বলেন, "এখন তৃণমূল যেভাবে অধীর চৌধুরীকে হারানোর হুঁশিয়ারি দিচ্ছে, তাতে বোঝাই যাচ্ছে, তারা আদতে কাদের সুবিধা করে দিতে চাইছে।"
এটা অবশ্য় প্রথম নয় এর আগেও অধীরকে আক্রমণ করেছেন কল্যাণ। তখনও একা লড়াইয়ের কথা বলেননি মমতা, গত বছর অক্টোবরে কল্যাণকে বলতে শোনা যায়, "উনি তো বিজেপি-র লোক! এদিকে, ওদিকে থাকবেন। বিজেপি-র সমর্থনে বহরমপুরে জিতবেন, না হলে নয়। জিততে আপনাকে দেব না অধীর চৌধুরী।" কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতাকে নিশানা করেন অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ও। তাঁকে বলতে শোনা যায়, "বিজেপি-র সবচেয়ে বড় এজেন্টের নাম অধীর চৌধুরী। দল বললে আমি বহরমপুর থেকে লড়ব।"
তবে তৃণমূলের লাগাতার আক্রমণে, শেষ পর্যন্ত মুর্শিদাবাদে কার সুবিধা হবে? বহরমপুরের পাঁচ বারের সাংসদ কি জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখতে পারবেন? সেটাই দেখার।