সমীরণ পাল, বরানগর: জনসংযোগ কর্মসূচির মঞ্চে বেলাগাম তৃণমূল (TMC) সাংসদ সৌগত রায় (Saugata Roy)। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে (Suvendu Adhikari) আক্রমণ করলেন। শুধু আক্রমণ নয়, প্রকাশ্য মঞ্চে দাঁড়িয়ে শুভেন্দুকে চটিপেটা করতে চাওয়ার কথা বলতে শোনা গেল তাঁকে। সৌগতর এই মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছে। পাল্টা তাঁর উদ্দেশে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিজেপি (BJP)।
ওড়িশার বালেশ্বরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘিরে রাজনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। বালেশ্বরের টবিন রোডে রেলমন্ত্রীর সামনেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সমালোচনায় সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গাফিলতির অভিযোগ তোলেন। তার পর তৃণমূলকে একহাত নেন শুভেন্দুও। সেই আবহেই বুধবার বরানগরে জনসংযোগ কর্মসূচির মঞ্চে দাঁড়িয়ে শুভেন্দুকে আক্রমণ করেন সৌগত।
প্রকাশ্য মঞ্চে দাঁড়িয়ে সৌগতকে বলতে শোনা যায়, "প্রথম শুভেন্দু অধিকারী বলল যে, বলেশ্বরে করমণ্ডলে দুর্ঘটনার পিছনে তৃণমূলের হাত রয়েছে। আমার বয়স যদি কম হতো, শুভেন্দুকে চটি দিয়ে মারতাম। তোর কি মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে?" তাঁর এই মন্তব্য ঘিরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
আরও পড়ুন: Rujira Banerjee : CGO কমপ্লেক্সে ইডি আধিকারিকদের মুখোমুখি রুজিরা, কী কী প্রশ্ন করা হতে পারে
বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনার ক্ষত এখনও দগদগে। ২৮৮ জন বেঘোরে প্রাণ হারিয়েছেন। দেহ হাতে পেতে হিমশিম খাচ্ছে মৃতদের পরিবার। তার মধ্যেই রাজনৈতিক আকচাআকচি চরমে।মমতাকে লাগাতার নিশানা করে আসছিলেন শুভেন্দু। মমত CBI তদন্তের যৌক্তিকত নিয়ে প্রশ্ন তুললে, তৃণমূলের ভয় কী বলে মন্তব্য করেন শুভেন্দু।
তারই পাল্টা তাঁকে চটিপেচা করার ইচ্ছা প্রকাশ করতে শোনা গেল সৌগতকে। তাঁর বক্তব্য, "কোথায় বালেশ্বর...বাংলার বাইরে। তৃণমূল ওখানে গিয়ে রেল সাবোটাজ করবে? কিন্তু ওরা বলছে কেন? দিল্লির নির্দেশে।" তবে বর্ষীয়ান সাংসদ শুভেন্দুকে জুতোপেটা করার কথা বলছেন, তা মানতে পারেননি অনেকেই। সেই নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি সংঘাতে জড়িয়েছে।
রাজ্য বিজেপি-র নেত রাুল সিন্হা বলেন, "একজন অধ্যপক, শিক্ষা জগতের মানুষ, তিনি যদি এই জাতীয় ভাষা প্রয়োগ করেন, মানুষকে উত্তেজিত করার চেষ্টা করেন, তাহলেই বুঝুন কী পরিস্থিতি। আসল কথা হল, পচা পুকুরে নামলে পচা গন্ধ বেরোবেই গা থেকে। ওই পুকুরেরই দোষ। তৃণমূলের পুকুরে যে নামবে, তারই ভাষা এমন হবে।"
বরানগরের সভা থেকে বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেই দায়ী করেন সৌগত। শুধু তাই নয়, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীকেও নিশানা করেন তিনি। বহরমপুর থেকে জিততে হলে, অধীরকে তৃণমূলে যোগ দিতে হবে বলে দাবি করেন তিনি। এর পাল্টা মমতার সাঙ্গপাঙ্গদের মাঠে মোকাবিলা করতে আহ্বান জানান অধীর।