মনোজ বন্দোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান:দুর্গাপুরের (durgapur) অন্ডাল (Andal) খাস কাজোড়াতে ভাঙচুর তৃণমূলের (TMC Party Office) পার্টি অফিস, তীব্র উত্তেজনা এলাকায়। অভিযোগ, দলীয় কোন্দলের (In fighting) জেরেই এই ঘটনা। আঙুল উঠেছে তৃণমূলের অন্ডাল ব্লক সভাপতি কালোবরণ মন্ডল ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। পরিস্থিতি সামলাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। দুপক্ষকে বাগে আনতে রীতিমতো বেগ পেতে হয় তাদের।


কী হয়েছিল? 
ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার সন্ধেয়। দলের একাংশ জানিয়েছেন, অন্ডালের খাস কাজোড়ার একটি জায়গায় সদ্য নিযুক্ত অন্ডাল ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি কালোবরণ মন্ডলকে সম্বর্ধনা দিতে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু দলের ব্লকের সহ-সভাপতি মলয় চক্রবর্তী ও তাঁর অনুগামীদের সেই সম্বর্ধনা সভায় ডাকা হয়নি বলে অভিযোগ। এরপরই পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। কথা কাটাকাটি থেকেই আচমকা তৃণমূল কর্মীদের একাংশ অন্ডালের খাস কাজোড়া পার্টি অফিসে ভাঙচুর শুরু করে দেয়। দলীয় কার্যালয়ের টেবিল চেয়ার ফেলে দিয়ে ব্যাপক তান্ডব চালান তাঁরা, প্রাথমিক ভাবে এমনই শোনা গিয়েছে।  খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে অন্ডাল থানার পুলিশ, সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে দুই পক্ষকে। তৃণমূল কংগ্রেসের অন্ডাল ব্লকের সহ-সভাপতি মলয় চক্রবর্তীর অভিযোগ, কালোবরণ মন্ডল নিজে দাঁড়িয়ে থেকে এই পার্টি অফিস ভাঙচুরে মদত দিয়েছিলেন তাঁর অনুগামীদের। যদিও তাঁর অভিযোগের পাল্টা ব্যাখ্যাও শোনা গিয়েছে। সব মিলিয়ে শাসক শিবিরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছবিটাই ফের নগ্ন, মনে করছেন স্থানীয়রা। গোটা বিষয়টির জেরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে অন্ডালের খাস কাজোড়া এলাকায়। জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য় এখনও এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। তবে ঘটনা ঘিরে আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি। পদ্মশিবিরে বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুইয়ের অভিযোগ, এইসবের জন্যই রাজ্য পিছিয়ে পড়েছে। কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমোকেও। ঘটনাচক্রে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী হালেই দাবি করেছিলেন, তাঁর দলে কোনও দ্বন্দ্ব নেই। সবটাই বিরোধী শিবির ও মিডিয়ার তৈরি করা। কিন্তু এই ভাঙচুরের ঘটনায় সেই দাবির বাস্তবতাও প্রশ্নের মুখে। 


নতুন নয় অভিযোগ...
গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ তৃণমূলে নতুন নয়। গত অগাস্টেই যেমন দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক বার্তা দিয়েছিলেন ইসলামপুরের তৃণমূলের বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী। বলেছিলেন, "আমি একজন এমএলএ, আমার বিরুদ্ধে লড়ার জন্য অন্য গ্রুপকে দাঁড় করাচ্ছেন।'' ব্লক সভাপতিকে না সরালে কার্যত দল ছাড়ারও হুমকি দেন তিনি। ইসলামপুর ব্লক সভাপতি জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে বিধায়কের এমন বার্তায় সেই সময় হইচই পড়ে গিয়েছিল। তা ছাড়াও প্রায়ই ছোট-বড় এমন বহু ঘটনার কথা শোনা যায়। 
এবার একেবারে তাণ্ডব পার্টি অফিসে।


আরও পড়ুন:'অপমানের আক্রোশেই অতনুকে খুন', সিআইডি-র কাছে দাবি সত্যেন্দ্র-র