বিজেন্দ্র সিংহ, আশাবুল হোসেন ও বিটন চক্রবর্তী, কলকাতা: প্রয়াগরাজ হত্যাকাণ্ড (Prayagraj Killing) নিয়ে অভিযোগ জানাতে গিয়ে শুনতে হয়েছে কলকাতাতেও হিংসা হয়! জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের (National Human Rights Commission) নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এই অভিযোগ করলেন তৃণমূলের (TMC) ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের সদস্যরা। ঘরের ছেলেকে সামলাতে পারে না, পরের ছেলেকে শাসন করতে গিয়েছেন! কটাক্ষ করেছে বিজেপি (BJP)।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন
বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন (President Rule) জারির দাবিতে বিজেপির আইনজীবী সংগঠন যখন রাষ্ট্রপতির দরবারে, ঠিক সেই সময়ই জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে যায় তৃণমূল। উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজ হত্যাকাণ্ড নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ হয় তারা। তাতেই বিতর্ক শুরু হয়েছে।
তৃণমূলের অভিযোগ, পরিচয় পর্বের সময় প্রয়াগরাজ নিয়ে পদক্ষেপ করার কথা বলা হলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তরফে বলা হয়, কলকাতাতেও হিংসা হয়! তাতেই জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির সদস্যরা।
তৃণমূল সাংসদ দোলা সেনের কথায়, "আলোচনা শুরুতেই ইন্ট্রোডাকশন নিচ্ছিলেন, কোথা থেকে এসেছি...আমাদের খারাপ লেগেছে কারণ আমি কলকাতা থেকে এসেছি শুনেই, উনি বলেছেন, 'ও কলকাতা? ওখানে তো হিংসা হয়!' জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পক্ষে এটা খুব নিরপেক্ষ মন্তব্য বলে আমাদের মনে হয়নি। এটা আউট অফ কনটেক্সট।"
গত ১৭ এপ্রিল, উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে খুন হন একই পরিবারের ৫ সদস্য। পরে তথ্যানুসন্ধানে সেখানে যায় তৃণমূলের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম। সেই ইস্যুতেই শুক্রবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে
যায় তৃণমূলের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের ৩ সদস্য। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপার্সনের উদ্দেশে দেওয়া চিঠিতে যোগীরাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে এই ঘটনার তদন্তভার CBI-কে দেওয়ার দাবি জানায় তৃণমূল।
পাশাপাশি প্রয়াগরাজে কমিশনের প্রতিনিধি দল পাঠানোর দাবিও জানানো হয়। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তৃণমূলের, পাল্টা কটাক্ষ বিজেপির। তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, "বিজেপি-র শাখা সংগঠনে পরিণত হয়েছে মানবাধিকার কমিশন।"
তৃণমূল-বিজেপি জোর তরজা
জবাবে রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, "কিছু লোক আছে, যারা পরের ছেলেকে শাসন করে বেড়ায়। বগটুইয়ে যাদের কোনও প্রতিনিধি দল যায়নি, তারা এখন উত্তরপ্রদেশে যাচ্ছে। বুলডোজার বাবা আছে, চালিয়ে দেবে।"
এর আগে রামপুরহাট এবং হাঁসখালিতে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম পাঠিয়েছিল বিজেপি। তার পাল্টা দিল্লির জাহাঙ্গিরপুরী ও উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে তথ্যানুসন্ধান দল পাঠায় তৃণমূল। এ নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী।