শান্তনু নস্কর, ক্যানিং: ১ মাসের মধ্যে ফের রক্তাক্ত ক্যানিং (Canning)। এবারের ঘটনাস্থল ইটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনস্থ পিটুয়া মোড়। অভিযোগ, জসিমউদ্দিন মোল্লা এক তৃণমূল সমর্থকের (TMC Supporter) বাইক দাঁড় করিয়ে গুলি (Shootout) চালানো হয়। শনিবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। জসিমউদ্দিনের কাঁধের কাছে গুলি লেগেছে বলে খবর। আশঙ্কাজনক অবস্থায় (Critical Condition) তাঁকে চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে আনা হচ্ছে। 


যা ঘটেছিল...
শনিবার বাজার থেকে বকরামণি গ্রামে নিজের বাড়ির দিকে যেতে কিছুটা দেরিই হয়েছিল জসিমউদ্দিনের। বাইকে করে ফিরছিলেন তিনি। হঠাতই মাঝরাস্তায়, পিটুয়া মোড়ে তাঁর পথ আটকে দাঁড়ায় একদল দুষ্কৃতী। থামানো হয় বাইক, তার পর সটান গুলি। লুটিয়ে পড়েন তৃণমূল সমর্থক ওই যুবক। গুলির আওয়াজ শুনে তড়িঘড়ি বেরিয়ে আসেন স্থানীয়রা। তাঁদের দেখে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীর দল। প্রত্যক্ষদর্শীদের বেশিরভাগের বক্তব্য, রাত সাড়ে দশটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। অন্ধকারে দুষ্কৃতীদের মুখ ভাল করে দেখতে পাননি তাঁরা। তবে যত টুকু খেয়াল করেছেন তাতে দুটি বিষয় নজরে এসেছে। এক, হামলাকারীদের ভিড়ে সাইফুল ঘরামি নামে এক দুষ্কৃতী ছিল। দুই, প্রত্যেকের মুখই বাধা ছিল। কিন্তু কারা আক্রমণ করল এই যুবককে? এই নিয়ে স্থানীয় বিধায়ক ও আক্রান্তের অবস্থানে কিছুটা ভিন্ন সুর ধরা পড়ে।


কোথায় আলাদা?
ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক পরেশরাম দাসের দাবি, তাঁদের সমর্থকের উপর হামলা হয়েছে ঠিকই। তবে সম্ভবত নেপথ্যের কারণ রাজনীতি নয়, ব্যক্তিগত শত্রুতা। এদিকে জসিমউদ্দিনের বক্তব্য,ইটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের অঞ্চল সভাপতি ও উপপ্রধানের অনুগামী হওয়ার জন্য কয়েক দিন ধরেই তাঁকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। স্পষ্ট করে বললে, অঞ্চল সভাপতির আনুগত্য ছাড়তে হুমকি দিচ্ছিল দুষ্কৃতীরা, অভিযোগ আক্রান্তের। সেই কারণেই শনিবারের হামলা, ব্যথায় কাতরাতে কাতরাতেও জানেন তিনি। শ্যুটআউটের খবর ছড়াতেই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ক্যানিং থানার বিশাল পুলিশবাহিনী। 


কেন বার বার রক্তাক্ত?
গত জুলাইতেই একযোগে তিন তৃণমূল নেতাকে গুলি করে ও গলা কেটে নৃশংসভাবে খুনের ঘটনায় শিরোনামে এসেছিল ক্যানিং। ওই হামলায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছিল গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য স্বপন মাঝি, গোপালপুর এলাকার তৃণমূলের বুথ সভাপতি ভূতনাথ প্রামাণিক এবং যুব তৃণমূলের বুথ সভাপতি ঝন্টু হালদারের।  ঘটনাস্থল থেকে একটি তাজা বোমা এবং তিনটি গুলির খোলও উদ্ধার হয়। বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় পড়ে যায় রাজ্যজুড়ে। ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক বলেন,'এই এলাকায় বিরোধী রাজনৈতিক দলের অস্তিত্ব নেই। সমাজ বিরোধীরা একত্রিত হয়েছে এবং সম্পূর্ণ ভাবে বিজেপি-র মদতে হয়েছে। স্বপন আমাদের একজন সক্রিয় পঞ্চায়েত সদস্য। দু'জন বুথ সভাপতি। সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন, খুন না করলে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারবে না। সেই কারণে পরিকল্পিত ভাবে খুন।' অভিযোগ মানেনি বিরোধী শিবির।
কিন্তু এক মাস কাটতেই দেখা গেল, ফের রক্তাক্ত ক্যানিং। 


আরও পড়ুন:গরুপিছু ২০০০ বিএসএফ, ৫০০ কাস্টমস, তাহলে অনুব্রত কত পেতেন, জানতে চাইছেন গোয়েন্দারা