কলকাতা: অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধনের দিনই কলকাতায় 'সংহতি মিছিল' করলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকে বিজেপি-কে তীব্র আক্রমণ করলেম তিনি। গত কয়েক মাস ধরে একাধিক মামলায় তাঁর পরিবারের সদস্যদের তলব এবং জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে মুখ খুললেন মমতা। মমতার দাবি, বিজেপি-র বিরোধিতা করেন, বিজেপি-র বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন বলেই তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে হেনস্থা করা হচ্ছে। কিন্তু তিনি লড়াই করতে প্রস্তুত বলে জানান মমতা। (Mamata Banerjee)
কলকাতার কালীঘাট থেকে পার্ক সার্কাস পর্যন্ত মিছিল করে সেখানে সভাও করেন মমতা। তিনি বলেন, "আমি কখনও কখনও হুমকি পাই। আমাদের পরিবারের সবাইকে চোর বানিয়ে দিয়েছে। কারণ আমরা ওদের বিরুদ্ধে কথা বলি। তোমরা কে? ক্ষমতা চলে গেলে টের পাবে। দেশের টাকা কোথায় গেল, কী উপায়ে গেল, কার কাছে গেল? দেশের টাকা বিজেপি-র পকেটে গিয়েছে। আমরা ভয় পাই না। লড়াই চালিয়ে যাব। কাপুরুষরাই ভয় পায়। যারা ভয় পায়, তারাই মরে। যে লড়াই করে, সেই বেঁচে থাকে।" (Kolkata News)
বিজেপি-কে এদিন তীব্র আক্রমণ করেন মমতা। বলেন, "বিজেপি-র লজ্জা হওয়া উচিত। সেলুলার জেলে গিয়ে দেখে আসুন, বাঙালি হিন্দু-মুসলিমরা মিলে স্বাধীনতা সংগ্রামে কত প্রাণ বলি দিয়েছেন। আমাদের টাকা নিয়ে গিয়ে, সেই টাকার ভাগই দেয় না। আর দেখুন সব জায়গায় LED লাগিয়ে দেখনদারি চলছে। সাংবাদিকদের দোষ নেই। সংস্থার মালিকরা সকাল থেকে এমন করছেন, যেন দেশে স্বাধীনতা সংগ্রাম চলছে, তাতে জয় এসেছে। কাল কী হবে? আমাদের ভাল কাজ দেখানো হয় না। অথচ বিজেপি-র কর্মসূচিকে ফলাও করে দেখানো হয়, তাগদের নেতাকে গুরুদেব বলে ডাকা হয়, বিশ্বনেতা বলা হয়।"
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: জোটের নামকরণ আমি করেছি, আমাকেই অসম্মান, লড়তে চাইলেও, লড়তে দেওয়া হচ্ছে না: মমতা
বিজেপি দেশকে বিক্রি করে খাচ্ছে বলে দাবি করেন মমতা। তাঁর কথায়, "আপনাদের বিক্রি করে খাচ্ছে বিজেপি। দলের নামে ভাড়া করে লোক আনছে। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এত লড়াই করলেন। শাহনওয়াজ খান তাঁর ডান হাত ছিলেন। নেতাজির প্রধান লোক। সেই নেতাজির জন্মদিবসকে জাতীয় ছুটি ঘোষণা করতে ২০ বছর ধরে লড়াই করছি। আজও হল না। আর আজকের দিনটা নাকি ওদের স্বাধীনতার দিন। স্বাধীনতা আন্দোলনে এদের টিকিও দেখা যায়নি। অথচ আজ নাকি এদের স্বাধীনতা দিবস। আমি রামের বিরুদ্ধে নই, রাম সীতা দু'জনকেই শ্রদ্ধা করি। তোমরা তো সীতার নাম বলো না। তার মানে কি নারীবিদ্বেষী? সীতা না থাকলে রাম হয় না, কৌশল্যা না থাকলে জন্ম হতো না রামের। রামের সঙ্গে বনবাসে ১৪ বছর কাডান সীতাই। তাঁকেই পাতালপ্রবেশ করে পরীক্ষা দিতে হয়।"
রামচন্দ্র রাবণকে হত্যা করতে দুর্গাপুজো করেছিলেন, আর বাঙালির কাছে দুর্গাপুজোই শ্রেষ্ঠ উৎসব বলে মন্তব্য করেন মমতা। মমতার জানান, একসময় বিজেপি বলতো বাংলায় দুর্গাপুজো হয় না। আজ তারাই ছুটে আসছে। মমতার বার্তা, লড়াই এই শুরু। বেঁচে থাকতে চাইলে, ভয় পাওয়া যাবে না। সাহসের সঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে। খারাপ সময় আসবে। কিন্তু লড়াই করে জিততে হবে যুদ্ধে। কাজ কঠিন, কিন্তু সম্ভব। মাথা উঁচু করে বাঁচতে হবে বলেও এদিন জানান মমতা।