দেগঙ্গা: দলের অন্দরে নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্বের খবর আজ নতুন নয়। মাঝে মধ্যে তা প্রকাশ্যেও চলে আসে। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে সেই নিয়ে দলকে এবার সতর্ক করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, কিছু নেতা নিজেদের কেউকেটা মনে করতে শুরু করেছেন। নিজেদের স্বার্থ গোছাতে গিয়ে পার্টির কথা মনে রাখছেন না। কিন্তু সব কানে আসছে তাঁর। দলে নবীন-প্রবীণ দুই শিবিরকেই তাঁর প্রয়োজন বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন মমতা। (Mamata Banerjee)


বৃহস্পতিবার দেগঙ্গার সভা থেকে স্পষ্ট ভাষায় নিজের অবস্থান জানিয়ে দেন মমতা। তিনি বলেন, "নিজেদের আরও সংগঠিত করতে হবে। ছাত্রযুবদের এগিয়ে দিতে হবে আমাদের। প্রাপ্য় মর্যাদা দিতে হবে সিনিয়র নেতাদের। এটা আমি বার বার বলে আসছি। পুরনো চাল ভাতে বাড়ে, আর নতুন চাল আগে বাড়ে। দু'টো চালকেই দরকার আমার। পুরনোকেও দরকার, নতুনকেও দরকার, পুরুষকেও দরকার, মহিলাকেও দরকার, ভাইয়েদেরও দরকার, দরকার বোনেদেরও। সবাইকে নিয়ে চলতে হবে।" (Mamata in Deganga)


জেলে নেতৃত্বকেও এদিন কড়া বার্তা দেন মমতা। তাঁকে বলতে শোনা যায়, "ছাত্রযৌবনকে বলব আরও বেশি করে এগিয়ে আসুন। একসঙ্গে কাজ করুন। দেশমাতৃকার জন্য, রাজ্যের জন্য, মানুষের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ুন। কিছু কিছু এলাকায় কেউ কেউ নিজেদের কেউকেটা মনে করছেন বলে শুনতে পাচ্ছি। নিজেদের জন্য দলের মুখটা মনে রাখছেন না। মনে রাখছেন না আমাকে যে এত খাটতে হচ্ছে। আপনাদের জন্য, মানুষের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছি, সারাজীবন মার খেতে খেতে এই জায়গায় এসে পৌঁছেছি।"


আরও পড়ুন: Mamata On CAA: 'নাগরিক না হলে সরকারি সুবিধা পাচ্ছেন কী করে?', সিএএ প্রশ্নে নাম না করে শাহকে পাল্টা মমতার


দল গঠনের সময় থেকেই মমতাকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়েছে তৃণমূলের যাবতীয় কাজকর্ম। এমনকি শুধুমাত্র মমতাকে দেখে দল করেন বলে প্রকাশ্যে স্বীকারও করে নেন দলের একাধিক নেতা। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে অলিখিত ভাবে তৃণমূলে মমতার উত্তরসূরি হিসেবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রহণযোগ্যতা বাড়লে, দলের মধ্যে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব দেখা দেয় বলে খবর। মমতা অনুগামী এবং অভিষেক অনুগামী, দলে পৃথক দু'টি শিবিরও তৈরি হয় বলে খবর আসে। 


সেই জল্পনা উস্কে দেন তৃণমূল নেতারা নিজেরাই। প্রকাশ্যে পরস্পরের সঙ্গে সংঘাতে জড়ান তাঁরা। শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করে দেন, মমতা ছাড়া কাউকে নেতা মানেন না। সম্প্রতি নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলীয় সমাবেশ ঘিরেও সংঘাত সামেন আসে। শুধুমাত্র মমতার ছবি রাখা হল, অভিষেকের কোনও ছবি কেন রাখা হল না, প্রশ্ন তোলেন দলের একাংশ। প্রকাশ্যেই বাগযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন দুই পক্ষের লোকজন। সেই আবহেই নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব নিয়ে বার্তা দিলেন মমতা।