অর্ণব মুখোপাধ্যায়, সমীরণ পাল ও উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা : পুরভোটের (Municipal Election) মুখে সৌগত রায়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়দের সঙ্গে কার্যত বাগযুদ্ধে জড়িয়েছেন মদন মিত্র। এই প্রেক্ষাপটে বিষয়টিতে রাশ টানতে তৎপর হল শীর্ষনেতৃত্ব। ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) বললেন, আলোচনা করে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়া উচিত। যদিও, বিরোধীরা এনিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি।
তৃণমূল বিধায়ক ও মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, দুই জনেই খুব সিনিয়র নেতা। যদি কোনও অসুবিধা থাকে দুই জনের একে অপরের সাথে কথা বলে মিটিয়ে নেওয়া উচিত।
পুরভোটের মুখে সৌগত রায়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে মদন মিত্রর প্রকাশ্য বাগযুদ্ধ রাজ্য রাজনীতিতে চর্চার বিষয় উঠেছে। এই প্রেক্ষাপটে বিষয়টিতে রাশ টানতে বার্তা দিল তৃণমূলের শীর্ষনেতৃত্ব।
২৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের ১০৭টি পুরসভায় ভোট। প্রচার শুরু হয়ে গেছে। তার মধ্যেই আচমকাই দমদমের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়কে নিশানা করেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। তিনি বলেন, একজন নেতা, বার বার এখানে এক কথা বলেন, আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে গিয়ে ভুল বোঝান। কর্মীদের সঙ্গে কুকুরের মতো ব্যবহার করেন। আর শুধু লুঙ্গি পরে বসে বসে কাজু খান, কাবাব খান।
এপ্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের বক্তব্য, যে সব নোংরা জঘন্য কথা বলছে, তার জবাব দিতে রুচিতে বাধে। যতক্ষণ রাজনীতিতে আছি, মাথা উঁচু করেই থাকব। আর ধুতি পরেই থাকব, কারও কথায় আমার পরিবর্তন হবে না।
শুধু সৌগত রায় নন, তার আগে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও বাগযুদ্ধে জড়ান মদন মিত্র। বলেন, পার্থ চ্যাটার্জী...দিদিমণি দায়িত্ব দিলে, আমি জানি না। পার্থ আদৌ পশ্চিমবঙ্গের সবাইকে চেনে বলে আমার মনে হয় না। এনিয়ে পাল্টা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ওর সম্পর্কে না বলাই ভাল। ওর কথা শুনে কোনও লাভ হবে না । কিছু যায় আসে না, ওর ছেলের বউ যাতে জেতে সেই চেষ্টা আমি করব।
লাগাতার এই বাগযুদ্ধ নিয়ে অবশেষে মুখ খুলল তৃণমূলের শীর্ষনেতৃত্ব। ফিরহাদ বলেন, কাউকে সম্মান দিলে নিজের সম্মান বাড়ে, কারও সম্মানহানি করলে নিজের সম্মানহানি হয়।
এদিকে মদন মিত্রের বক্তব্য, আগে দল শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি তৈরি করুক। আমি সেই শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির সামনে হাজিরা দেব। যদি অন্যায় করে থাকি, শাস্তি মাথা পেতে নেব।
তৃণমূলের অন্দরে বাগযুদ্ধ। কটাক্ষের সুর বিরোধীদের গলায়। কংগ্রেস নেতা শুভঙ্কর সরকার বলেন, বিরোধীদের ওপর আক্রমণ হচ্ছে। সেটা যাতে পিছনে চলে যায় তাই পশ্চিমবঙ্গে এই কৌশল নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সিনিয়র নেতাদের দেখিয়ে দিতে চাইছেন, অভিষেকই সবকিছু। এটা সুকৌশলে আর একটা চাপিয়ে দেওয়া।
কামারহাটি পুরসভায় মদন মিত্রর পুত্রবধূকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। বুধবার তাঁর হয়ে দেওয়াল লেখেন মদন। তারপর ওয়ার্ডে ঘুরে ঘুরে প্রচার করেন।