কলকাতা: এখনও পর্যন্ত নির্ঘণ্ট প্রকাশিত না হলেও, আসন্ন লোকসভা নির্বাচন ঘিরে প্রস্তুতি তুঙ্গে। আর সেই আবহেই জল্পনা বাড়িয়ে তিনটি সরকারি কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন তৃণমূলের তারকা সাংসদ দেব (TMC MP Dev)। ঘাটালের সাংসদ দেব তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াতেই এই পদক্ষেপ করেছেন কিনা, সেই নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। সেই আবহেই দেবকে নিয়ে মুখ খুললেন তাঁর সতীর্থ, বিজেপি বিধায়ক হিরণ্ময় চট্টোপাধ্যায় , যিনি হিরণ হিসেবে পরিচিত। (Hiranmoy Chatterjee)


দেব নিজে এখনও পর্যন্ত পদত্যাগের কার্যকারণ খোলসা করেননি। তৃণমূলের তরফেও গুঞ্জন নিয়ে কোনও সাফাই দেওয়া হয়নি। তবে সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন খড়্গপুর সদরের বিজেপি বিধায়ক তথা অভিনেতা হিরণ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, "বিলম্বে বোধোদয়। উনি ভাল অভিনেতা। কিন্তু রাজনীতি করতে হলে ২৪ ঘণ্টা মানুষের কাজ করতে হবে। গত ১০ বছরে কত বার নিজের লোকসভা কেন্দ্রে গিয়েছেন দেব? ওঁর জন্যই ঘাটালে উন্নয়ন থমকে রয়েছে। এবার হারবেন জেনেই দাঁড়াতে চাননি।" 


হিরণ আরও বলেন, "ঘাটালে শিশু উৎসবে প্রাক্তন বিধায়কের সঙ্গে মারামারি হয়েছে ওঁর। টেবিল ছোড়াছুড়ি হয়েছে, মারামারি হয়েছে। ওদের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যে কী ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে! এর একটাই কারণ, কে কত কাটমানি পাবে, কে কত কমিশন পাবে। সাধুবাদ জানাই, ১০ বছর পর বোধোদয় বল যে রাজনীতি এবং অভিনয় একসঙ্গে করা সম্ভব নয়। উনি অত্যন্ত ভাল অভিনেতা। বার বার বলেছি, ওঁর কাজ অভিনয় করা। অভিনয়. করতে করতে রাজনীতির নাম করে, পাঁচ বছরে একবার ভোট চাইতে আসব, তার পর জিতে গিয়ে আর আসব না, সংসদে যাব না। এটা কাজের কথা নয়। এই বোধোদয় আগে হলে ঘাটালের উন্নতি হতো। "


গতকাল ঘাটাল রবীন্দ্র শতবার্ষিকী মহাবিদ্যালয়ের সভাপতি পদ, ঘাটাল হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পদ এবং বীরসিংহ উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যানের পদে ইস্তফা দেন দেব। কাজের চাপে সময় দিতে না পারায় ইস্তফা, দাবি করা হয়েছে দেবের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে। কিন্তু দেবের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু হয়েছে। সেই আবহে মুখ খুলেছেন হিরণও।


আরও পড়ুন: CV Ananda Bose: কুরুক্ষেত্রে অর্জুনের সারথি ছিলেন শ্রীকৃষ্ণ, ভারতের আছে ‘নরেন্দ্র-কৃষ্ণ’, মন্তব্য রাজ্যপালের


ঘাটাল থেকে তৃণমূলের প্রতীকে দু'বার জিতেছেন দেব, ২০১৪ এবং ২০১৯ সালে। তবে বছর দেড়েক আগে, সরকারি প্রেক্ষাগৃহ নন্দনে দেবের ছবি 'প্রজাপতি'র শো না পাওয়া নিয়ে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছিল। সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে বলতে শোনা যায়, "দেব শিল্পী। ভাল ছেলে। দলের সম্পদ দেব।"

তার পর হঠাৎ কী হল যে তিনটি সরকারি কমিটি থেকে পদত্যাগ করতে হল দেবকে, উঠছে প্রশ্ন। এ নিয়ে অস্ত্রে শআন দিতে নেমে পড়েছেন বিরোধীরাও। সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীও তৃণমূলকে একহাত নেন। তাঁর দাবি, কোনও ভদ্রলোক তৃণমূলে থাকতে পারেন না। দেবেরও বিরক্তি আসাই স্বাভাবিক। দেবের পদত্যাগপত্র গ্রহণ না-ও করা হতে পারে বলে দাবি করেছেন সুজন।