আবির দত্ত, কলকাতা: জাঁকজমক এবং থিমের ভিড়ে সাবেকিয়ানার উপর ধুলোর আস্তরণ জমছে একটু একটু করে (Durga Puja 2022)। কিন্তু শহর কলকাতায় সাবেকি পুজো এখনও যে কয়টি টিকে রয়েছে, ভবানীপুরের (Bhowanipore) মল্লিকবাড়ি তার মধ্যে অন্যতম। পাশাপাশি রয়েছে তারকাদর্শনের অমোঘ হাতছানিও। কিন্তু মল্লিকবাড়ির তারকা-অভিনেতাদের পুজো কাটছে কেমনে! জবাব দিলেন রঞ্জিত মল্লিক (Ranjit Mallick) এবং তাঁর কন্যা কোয়েল মল্লিক (Koel Mallick)। বাড়ির পুজোয় কেমন অনুভূতি জানতে চাইলে নির্দ্বিধায় উত্তর দেন রঞ্জিত, ‘‘স্বর্গীয়’’।
মল্লিকবাড়ির পুজোয় ছোট্ট কবীরই এখন মধ্যমণি
কিন্তু যাঁদের একঝলক দেখতে মল্লিকবাড়িতে ভিড় সকলের, সেই তারকাদের চোখ আটকে একজনের উপরই, কোয়েলের একরত্তি ছেলে কবীরের উপর। নবমীতেও মল্লিকবাড়ির মধ্যমণি হয়ে থাকতে দেখা গেল তাকে। মা কোয়েল তো ব্যস্তই ছেলেকে নিয়ে, দাদুও সারাক্ষণ চোখে হারাচ্ছেন নাতিকে। তাহলে কি পুজোর সংজ্ঞা বদলে গেল তাঁর কাছে! এখানেও অকপট রঞ্জিত। বললেন, "মেয়ে ভুলেছি, জামাই ভুলেছি, নাতিকে নিয়েই আছি।"
পুজোর আয়োজন, ভোগ বিতরণের পাশাপাশি ছেলের দিকেও নজর রাখতে হচ্ছে কোয়েলকে। শত ব্য়স্ততার মধ্য়েও ভিড় থেকে খপ করে কোলে তুলে নিলেন একরত্তিকে। কথা বলতে গেলে জানিয়ে দিলেন, ছেলের খাওয়ার সময় হয়েছে। দিয়ে এসে কথা তবেই কথা বলবেন। কিন্তু তার পরেও ফের ব্যস্ত হয়ে পড়লেন কোয়েল। প্রসাদ বিতরণের ভারও যে ছিল তাঁরই। কোনও রকমে তফাতে সরে এসে, বাবার পাশে বসলেন।
আরও পড়ুন: Weather Update: নবমীতেও ভাসবে শহর? আগামী ২-৩ ঘণ্টায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস কোন জেলায়
তাহলে ছেলেই কি ব্যস্ত রেখেছে কোয়েলকে! অভিনেত্রী বললেন, ‘‘কবীর তো প্রচণ্ড আনন্দে, আহ্লাদে রয়েছে। মজা করছে খুব। এই বাবার সঙ্গে কাঁসর ঘণ্টা বাজাচ্ছে, তো এই শাঁখে ফুঁ দিচ্ছে। আছে, মজা করছে, আহ্লাদে রয়েছে। বাবও ওকে নিয়েই রয়েছে।’’ ছেলের সঙ্গে বাবার রসায়ন ব্য়াখ্যা করতে গিয়ে কোয়েল আরও বলেন, ‘‘নাতি বাবাকে গুরু বলে ডাকে, বাবাও নাতিকে গুরু বলে ডাকে। পরস্পরকে দেওয়া আদরের নাম। আমাকে ভুলেই গিয়েছে বাবা।’’
মেয়েকে পাশে নিয়ে বাড়ির পুজোয় রঞ্জিত মল্লিক
মল্লিকবাড়ির পুজোর কথা বলতে গিয়ে রঞ্জিত বলেন, ‘‘এই সময়টা মনে হয় যেন স্বর্গে রয়েছি আমি। পরিবারের যাঁরা বাইরে থাকেন, এই সময় সকলে চলে আসেন।’’ সকলের সঙ্গে উৎসবে মেতে উঠলও ছেলেকে কেন্দ্র করেই যে এখন সবকিছু, তা মেনে নেন কোয়েল। নবমী আসা মানেই দেবীর যাওয়ার সময় আরও এগিয়ে আসা। একসময় দেবীর যাওয়ার সময় এলে বাড়ির মহিলারা হাপুস নয়নে কাঁদতেন বলেও জানান রঞ্জিত।