কলকাতা: মামলার গোড়াতেই নাম জড়িয়েছিল দলের অন্যতম শীর্ষ নেতা। তার পর থেকে নিয়োগ দুর্নীতিতে তৃণমূলের (TMC) আরও অনেকের নামই জড়িয়েছে। কিন্তু দিন দশেক আগে প্রথম নাম শোনা যায় তুলনামূলক অখ্যাত কুন্তল ঘোষের (Kuntal Ghosh)। তৃণমূল যুব কংগ্রেসের (Trinamool Youth Congress) নেতার নাম প্রথম উল্লেখ করেন নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হওয়া মানিক ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডল (Tapas Mondal)। কয়েক লক্ষ নয়, হুগলির ওই তথাকথিত নেতা একাই ১৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করেন তাপস। কিন্তু গ্রেফতার হওয়ার পর সেই তাপসের বিরুদ্ধেই ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করলেন কুন্তল (SSC Case)। 


মানিক ভট্টাচার্য ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলই প্রথন কুন্তলের নাম সামনে আনেন


নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় শুক্রবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দফায় দফায় নিউটাউনে কুন্তলের দু'টি ফ্ল্যাটে হানা দেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকরা। তাতে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি থেকে বেশ কিছু নথিপত্রও উদ্ধার হয় বলে জানা যায়। কিন্তু তার উৎস নিয়ে কুন্তল তদন্তকারীদের প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারায়, তাঁকে গ্রেফতার করা হয় শনিবার সকালে। আর তার পরই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন কুন্তল। 


এ দিন সকালে নিউটাউনের অভিজাত ফ্ল্যাট থেকে বার করে কুন্তলকে সিজিও কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। আর সেই সময়ই সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন তিনি। তাঁকে বলতে শোনা যায়, "কোনও টাকা নিইনি আমি। সব তাপস মণ্ডলের ষড়যন্ত্র। ওঁকে টটাকা দিইনি, ঘুষ দিইনি বলে আজ এই হাল আমার। আমি টাকা নিইনি। তাপস মণ্ডল টাকা চেয়েছিলেন। সব ওঁর সাজানো। আমার কাছ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা চেয়েছিলেন। ওঁরই চক্রান্ত।" কিন্তু তাপস কেন কুন্তলের কাছে টাকা চাইবেন, তাঁদের সমীকরণ কী ছিল, তা নিয়ে কাটেনি ধোঁয়াশা।


আরও পড়ুন: Kuntal Ghosh: হুগলির যুব নেতা কোটি কোটি টাকা তুলেছেন! তৃণমূলের কার কার সঙ্গে ওঠাবসা ছিল কুন্তলের!


কুন্তল জানিয়েছেন, ২০১৫ সাল থেকে তাপসের সঙ্গে কাজ করছিলেন তিনি। তাঁর কাছ থেকে টাকা চেয়েছিলেন তাপসই। তা দিতে পারেননি বলেই চক্রান্ত করে তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে কি তাহলে চিনতেন কুন্তল! পার্থর সঙ্গে তাঁর জানাশোনা ছিল না বলে জানান কুন্তল।


২০১৫ সাল থেকে তাপসের সঙ্গে কাজ করছিলেন কুন্তল!


তবে কুন্তলের তোলা অভিযোহ খারিজ করে দিয়েছেন তাপস। এ দিন ফোনে এবিপি আনন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমি তো তথ্য-প্রমাণ দিয়েছি! তদন্তকারীরা সবকিছু খতিয়ে দেখছেন । আমি তো সহযোগিতা করছি তদন্তকারীরা। আমার বিরুদ্ধে যদি হঠাৎ করে অভিযোগ আনে, সেখানে আমার কিছু বলার নেই। ৫০ লক্ষ কেন, যে টাকা উনি নিয়েছেন, আমার পরিচিত লোকজনদের কাছে হিসেব রয়েছে। সেই হিসেবই তুলে ধরেছি। বার বার ওকে টাকা ফেরত দিতে বলেছি। কত জন এসে আমার কাছে বলতেন যে, ওঁর বাড়ির সামনে ধর্না দিয়ে পড়ে থেকেও টাকা ফেরত পাননি। টাকা নিলে তা কি ফেরত চাইব না! তাঁদের টাকা ফেরত পেতেই চাপ দিয়েছি। চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে, আমার পরিচিত, কলেজ মালিক, কেউ আমার ছাত্র, তাঁদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার প্রমাণ তুলে দিয়েছি। সেই টাকা ফেরত পেতেই ক্রমাগত চাপ দিয়ে আসছিলাম। "