সুদীপ চক্রবর্তী, উত্তর দিনাজপুর: বিয়ে বাড়ির প্যান্ডেল বাধাকে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষের (Family Clash) প্রাণ হারালেন এক বৃদ্ধ (Elderly Person Killed)। জখম দুই পক্ষেরই অনেকে।উত্তর দিনাজপুর (Uttar Dinjapur) জেলার করনদিঘি থানার ছোট সোহার গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। সংঘর্ষের ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি করণদিঘি থানার পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।


কী ঘটেছিল?
বুধবার দুপুরের ওই ঘটনায় হইচই পড়ে যায়। করণদিঘি থানার ছোট সোহার গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ খুরশেদের মেয়ে খুশনেমার বিয়ের জন্য তাঁদের শরিক মহম্মদ ফৈয়াকের জমিতে প্যান্ডেল বাধতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে আপত্তি করেন মহম্মদ ফৈয়াক। এর পরই দুতরফের বচসা বাধে যা থেকে হাতাহাতি শুরু হয়। অভিযোগ, লাঠি, ধারালো অস্ত্র নিয়ে একে অন্য়ের উপর চড়াও হন দুতরফের লোকজনই। সংঘর্ষে মহম্মদ ফৈয়াক-সহ বেশ কয়েকজন জখম হন। আহতদের করনদিঘি গ্রামীণ হাসপাতালে আনা হয়েছিল। কিন্তু বছর পঁচাত্তরের মহ: ফৈয়াকের আঘাত গুরুতর থাকায় তাঁকে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তর করার কথা বলা হয়। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, বৃদ্ধকে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে না এনে কিষানগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানেই মারা যান তিনি। খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়তেই উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় করনদিঘি থানার পুলিশ। অভিযুক্ত মহম্মদ খুরশেদের পরিবার গ্রেফতারি এড়াতে গা ঢাকা দিয়েছে বলে খবর। করনদিঘি থানার পুলিশের কাছে ১১ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে তাঁর পরিবার। পুলিশ জানিয়েছে অভিযুক্তরা সবাই পলাতক। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।


সংঘর্ষের ঘটনা নতুন নয়...
আগেও দুই পরিবারের মধ্যে বচসার জেরে রক্ত ঝরেছে রাজ্যের নানা প্রান্তে। গত বছর মে মাসেই যেমন রক্ত ঝরে জলপাইগুড়ি জেলায়। আগে ওদলাবাড়ি, তার পর ধূপগুড়ি । জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পরিবারের মধ্যে বচসা-মারপিট। বিবাদের ঘটনায় ঘটে প্রাণহানি। মারা যান এক জন। প্রাথমিক ভাবে তিন জনকে গ্রেপতার করা হয়েছিল। বিবাদ ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ধূপগুড়ি ব্লকের গাদং ২ গ্ৰাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ঝাড়শালবাড়ি এলাকায়। মৃতের নাম গোবিন্দ মন্ডল, বয়স ৫৭ বছর। পড়শিরা জানিয়েছিলেন, জমি সংক্রান্ত বিষয়ে দুই পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই নানা সমস্যা চলছিল। ঘটনার দিন বিকেলে ফের শুরু হয় ঝামেলা। সেই বিবাদই চরম আকার নেয়। সূত্রের খবর, কয়েকদিন ধরেই ঝাড়শালবাড়ির বাসিন্দা গোবিন্দ মন্ডল ও তাঁর শ্যালকের পরিবারের মধ্যে বিরোধ চলছিল। অভিযোগ, ঘটনার দিন বিকেল নাগাদ বচসা থেকে হাতাহাতি শুরু হয়। ওই সময় লাঠি, রড, কোদাল নিয়ে গোবিন্দ মন্ডলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁর শ্যালক, শ্যালিকা ও শাশুড়ি। উল্টোদিকে গোবিন্দ মন্ডলকে বাঁচাতে ছুটে যান তাঁর দুই ছেলে উত্তম মন্ডল ও গৌতম মন্ডল। ততক্ষণে লাঠির আঘাতে লুটিয়ে পড়েন গোবিন্দ মন্ডল। এরপর তড়িঘড়ি তাঁকে ধূপগুড়ি গ্ৰামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাঁকে রেফার করা হলে পরিবারের সদস্যরা তাঁকে শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করে।  রাতে সেখানেই গোবিন্দ মন্ডলের মৃত্যু হয়। 


আরও পড়ুন:'বিজেপি না ছাড়লে শুভেন্দুর মতই এজেন্সি থেকে দূরে থাকতেন বনি', বিস্ফোরক দেবাংশু