রানা দাস, কমলকৃষ্ণ দে, সমীরণ পাল, কলকাতা : UGC নেট-এর জেআরএফ বিভাগে তাক লাগানো সাফল্য পেলেন বাংলার দুই কন্যা। ইউজিসি নেট এর জেআরএফ বিভাগের বাংলা বিষয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার বাসিন্দা নিলুফা ইয়াসমিন। তিনি পেয়েছেন ১০০ পার্সেন্টাইল। অন্যদিকে, গণজ্ঞাপন এবং সাংবাদিকতা বিষয়ে, দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা রিক্তা চক্রবর্তী। তিনি পেয়েছেন ৯৯ দশমিক ৯৯ পার্সেন্টাইল।

পরপর দু'বার নেট পরীক্ষায় ব্যর্থতার পর, তৃতীয় বারের পরীক্ষায় সাফল্যের শিখরে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার বাসিন্দা নিলুফা। ছোট থেকেই মেধাবী কাটোয়ার বাসিন্দা নিলুফা। ২০২০ সালে কাটোয়া কলেজ থেকে বাংলায় স্নাতক। ২০২২ এ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর। সেই বছরেই, বাংলা ভাষা নিয়ে গবেষণা শুরু করেন নিলুফা। ভবিষ্যতে অধ্যাপনা করতে চান তিনি। সেই জন্যই নেট-পরীক্ষায় বসা। আর সাফল্য। প্রবল ইচ্ছা শক্তি ও কঠোর অধ্যাবসায় জীবনের সাফল্য এনে দেয়, বিশ্বাস করেন তিনি। তাই দুইবারের ব্যর্থতাও তাঁকে ক্লান্ত করতে পারেনি। পরিবারের কথায়, ছোট থেকেই পড়েছেন বিবেকানন্দের বাণী, সেটাই তাঁকে শক্তি জুগিয়েছে। 

অন্যদিকে  উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা রিক্তার লড়াইটাও কুর্নিশ জানানোর মতোই। ৭ বছর বয়সে পিতৃহারা হয়েছেন। তাঁর জীবনেও সাফল্য এনে দিল শিখরে পৌঁছনোর জেদ। মধ্যমগ্রাম গার্লস হাইস্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন রিক্তা। দক্ষিণেশ্বরের হীরালাল মজুমদার মেমোরিয়াল কলেজ ফর উইমেনস্ থেকে স্নাতক। এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাস করা। রিক্তা আবার গবেষণার পথেই এগোতে চান। রিক্তার মা জানালেন, মেয়ে পরীক্ষার আগে ঘুমোতো না, খেত না, শুধুই পড়াশোনা করত। 'আমি ঘরে এসে দেখতাম, খাবার ওইভাবে পড়ে আছে। সারারাত জেগে পড়ত। ওর একটা জেদ ছিল যে আমি নেবই, এটা আমাকে পেতেই হবে।' বৃহস্পতিবার, রিক্তার বাড়িতে শুভেচ্ছা জানাতে আসেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী ও মধ্যমগ্রাম পুরসভার চেয়ারম্যান নিমাই ঘোষ।              

নিলুফা ও রিক্তা, দুজনকেই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । 'জুন, ২০২৫ সালে বাংলায় UGC-NET-এ ১০০ শতাংশ নম্বর পেয়ে ভারতে প্রথম স্থান অধিকার করার জন্য পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার নীলুফা ইয়াসমিনকে অভিনন্দন এবং জুন, ২০২৫ সালে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতায় UGC-NET-এ ভারতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করার জন্য কলকাতার রিক্তা চক্রবর্তীকে অভিনন্দন। তোমাদের সাফল্য আমাদের রাজ্যকে গর্বিত করেছে। তোমাদের বাবা-মা/অভিভাবক এবং শিক্ষকদেরও অভিনন্দন।'