রাজীব চৌধুরী, মুর্শিদাবাদ: ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে অস্বাভাবিক মৃত্যু হল মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) সুতির (Suti) এক পরিযায়ী শ্রমিকের (Migrant Workers)। মৃত্যু ঠিক কীভাবে, স্পষ্ট নয় পরিবারের কাছে। শুক্রবার বাড়িতে শ্রমিকের নিথর দেহ পৌঁছতেই নামে শোকের ছায়া।


পেটের টানে গিয়েছিলেন ভিন রাজ্যে। আর সেখানে চলে গেল প্রাণটাই। বাড়ি ফিরল উপার্জনকারী মানুষটার নিথর দেহ। ওড়িশায় (Odisha) কাজে গিয়ে মৃত্যু হল মুর্শিদাবাদের সুতির ইন্দ্রনগর কলোনির বাসিন্দা রাজকুমার হালদারের (Rajkumar Halder)। মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৭ দিন আগে মুশারফ শেখ নামে এক কন্ট্রাক্টরের অধীনে ওড়িশার অঙ্গুলে রাজমিস্ত্রির কাজে গিয়েছিলেন রাজকুমার। বুধবার সন্ধেয় তাঁদের কাছে খবর আসে, অসুস্থ হয়ে পড়েছেন রাজকুমার। বৃহস্পতিবার  সকালে হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। কীভাবে মৃত্য হয়েছে, তা স্পষ্ট নয় পরিবারের কাছে।


মৃতের স্ত্রী মিতালি হালদার বলেন, “ওড়িশায় কাজে গিয়েছিল। যা শুনলাম কাজ করে ফেরার পথে অসুস্থ। রক্তবমি হচ্ছিল বলছে।’’ মৃতের বাবা হারাধন হালদারের কথায়, “নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বেরিয়েছি। ঠিক কী হয়েছিল জানিনা। কন্ট্রাক্টর নিয়ে গিয়েছিল।’’ শুক্রবার মৃতদেহ ইন্দ্রনগর কলোনির বাড়িতে পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়ে পরিবার। দুই মেয়ে রয়েছে রাজকুমারের। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্যের মৃত্যুতে দিশেহারা সকলেই।


আরও পড়ুন: Jalpaiguri Rape allegation: প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ


দিনকয়েক আগে ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে ট্রেন দুর্ঘটনায় পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয়। চাঁদা তুলে মৃতদেহ ফেরানোর উদ্যোগ নেন প্রতিবেশীরা। লকডাউনে (Lockdown) কাজ হারিয়ে ভিন রাজ্য থেকে বাড়ি ফিরে এসেছিলেন। লকডাউনে হারিয়েছিলেন কাজ। আশা ছিল অন্তত ব্যবসায় হাল ফিরবে। কিন্তু না তা হল না। ফের লোকসান। মহামারীর কোপেই মার খেল ব্যবসা। তাই সংসারের মুখে হাসি ফোটাতে আবার পাড়ি দিয়েছিলেন বেঙ্গালুরুতে। কিন্তু ট্রেন থেকে পড়ে সেকেন্দ্রাবাদ স্টেশনের কাছে মৃত্যু হয় হরিশ্চন্দ্রপুরের বাসিন্দা চন্দন মহালদারের।


চন্দনের এক ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে। আগেই মারা গিয়েছেন চন্দনের বাবা অর্জুন মহলদার। বৃদ্ধা মা সারথি মহালদার হাটে হাটে ঘুরে সবজি বিক্রি করেন। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ স্ত্রীও। এই অবস্থায় মহাজনের কাছ থেকে চড়া সুদে টাকা ধার করে লকডাউনের মধ্যে সবজির ব্যবসা শুরু করেছিলেন চন্দন মহালদার। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে সেই ব্যবসাও করা যায়নি। তাই ফের কাজের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেন ভিন রাজ্যে।