শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার:  বাংলায় কাজ না পেয়ে উত্তরাখণ্ডে কাজ করতে গিয়েছিলেন। ১৭ দিন দুঃস্বপ্নের ঘন কালো আঁধার থেকে প্রাণ হাতে করে বেরিয়ে বলেছিলেন,  কিছুদিন কাটিয়ে ফের ফিরে যাবেন উত্তরাখণ্ডে। কাজে, পেটের তাগিদে। যদিও স্বামীকে রাজ্যের বাইরে যেতে দিতে চাননি স্ত্রী। কিন্তু মনের চাহিদার থেকে অনেক বেশি চাহিদা পেটের। তবু পরিবারের ছলছলে চোখের দিকে তাকিয়ে, কোনও এমন সময় মানিকও বিশ্বাস করতে শুরু করেন, এখানেই একটা কাজ জুটে যাবে। আর ফিরবেন না উত্তরাখণ্ডে। না , স্বপ্ন সফল হল না। আবারও ভিনরাজ্যেই চললেন নভে ম্বর মাসে উত্তরাখণ্ড সুড়ঙ্গ বিপর্যয়ে আটকে পড়া শ্রমিক মানিক তালুকদার। 


পরিবারের সদস্যরা মনে-প্রাণে  চাইছিলেন মানিক বাড়িতেই থাকুন। কিন্তু কাজ না পেলে চলবে কী করে? তাই ফের ভিন রাজ্যে পাড়ি দিলেন কোচবিহারের বলরামপুরের মানিক তালুকদার। গত ১৫  নভেম্বর উত্তর কাশীতে সুড়ঙ্গে আটকে পড়েন মানিক তালুকদার। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরও ৪১ জন। ১৭ দিন সেখানে আটকে থাকেন তাঁরা। তাঁদের উদ্ধারপর্ব ঘিরে যে টানটান উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল, তা চলচ্চিত্রকেও হার মানায়। 


সুড়ঙ্গ থেকে বের হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ছিলেন হাসপাতালে। সেখান  ছাড়া পেয়ে তুফানগঞ্জের বাড়িতে ফেরেন মানিক তালুকদার। তখনই মানিকের স্ত্রী বলেছিলেন,  'যে পরিস্থিতির মধ্যে কাটিয়েছি এই ১৭ দিন, সেটা ভগবান জানেন। আর যেতে দিতে চাই না। কাজ তো করে খেতে হবে। যদি কোনও কাজের সুযোগ সুবিধা সরকারি দফতর থেকে পাই। বা ওঁরা দেন সুযোগ করে, তাহলে ভাল হয়। '


সূত্রের খবর, উপযুক্ত কাজ না পেয়েই অবশেষে মানিক আবার উত্তরাখণ্ডেই কাজে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সোমবার আবার ব্যাগ গুছিয়ে তিনি বেরিয়ে পড়েছেন উত্তর কাশীর সিলকিয়া সুড়ঙ্গে কাজ করতে। তিনি বলেন, ইচ্ছে ছিল এ রাজ্যে কাজ করে পরিবারের পাশে থাকার কিন্তু তা সম্ভব হল না। তাই আবার রুজির জন্যই ফিরেই যাচ্ছি।  আর কিছু করার ছিল না।


পরিবারের সদস্যরাও চাইছিলেন না, মানিক ফের ভিন রাজ্যে চলে যান। কিন্তু আর্থিক পরিস্থিতির কথা ভেবেই তাঁরাও মেনে নিয়েছেন মানিক তালুকদারের এই সিদ্ধান্ত। আবার সেই সুড়ঙ্গে কাজ করবেন তিনি । তবে মানিকের কথায় ' এখন আর ভয় নেই তার কারণ এই করেই তো পরিবারকে প্রতিপালন করতে হবে'।  


আরও পড়ুন: রাম লালার অদেখা ছবি! সাজানোর আগে কেমন ছিল দেখতে? দেখালেন খোদ শিল্পী