উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: পুলিশের সঙ্গে তীব্র টানাপড়েনের পর আজ আর ঘরে ফেরা হচ্ছে না জয়নগরের (Joynagar Villagers Cannot Return Home) দলুয়াখাকির বাসিন্দাদের। তবে আগামীকাল, ভোরের আলো ফোটার পরই তাঁদের ফেরানো হবে, আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।
আজ নয় ফেরা...
দলুয়াখাকিতে গত কাল যে তাণ্ডব চলেছে, তার পর আজ দুপুরে সিপিএম নেতাদের সঙ্গেই ফেরার জন্য গ্রামের দিকে গিয়েছিলেন ঘরছাড়া বাসিন্দারা। কিন্তু অভিযোগ, পুলিশ তাঁদের ঢুকতে দেয়নি। ঠেলাঠেলিও করা হয়েছে বলে দাবি। শেষমেশ বাসিন্দারা থানায় যান। এই টানাপড়েনে মধ্যে সন্ধে নেমে পড়ায় আজকের মতো ঘরছাড়াদের ফেরানোর প্রক্রিয়া বন্ধ রাখার কথা হয়েছে বলে খবর। জানা যাচ্ছে, এমনিতেই আগুনের গ্রাসে বাসিন্দাদের অনেকেরই ঘরদোরের প্রায় কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। সিপিএমের তরফে তাঁদের কিছু ত্রিপল-ইত্যাদির ব্যবস্থা করা হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু সন্ধের অন্ধকারে সে সব কতটা ঠিকঠাক কাজে লাগানো যাবে, তা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। তাই আজ আর ফেরা হচ্ছে না ঘরছাড়াদের।
তীব্র উত্তেজনা..
গত কাল জয়নগরের দাপুটে তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন লস্করকে খুনের অভিযোগ ওঠার পর থেকে তুলকালাম শুরু হয়। অভিযোগ, পাল্টা হিসেবে দলুয়াখাকি গ্রামে বেছে বেছে সিপিএম কর্মী সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালানো হয়, আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় নির্মম ভাবে। সেই ঘটনায় অন্তত ২৫ থেকে ৩০টি পরিবার ঘরছাড়া হয়েছিল বলে সিপিএম সূত্রে খবর। তাঁরা দলীয় দফতরে আশ্রয় নেন। আজ, মঙ্গলবার, সেই ঘরছাড়া গ্রামবাসীদের বাড়ি ফিরিয়ে দেবেন বলেই সুজন চক্রবর্তী, কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো বর্ষীয়ান সিপিএম নেতারা এসেছিলেন। কিন্তু অভিযোগ, সিপিএম নেতারা গ্রামের ভিতর গেলে অশান্তি হতে পারে এই যুক্তিতে সুজনদের আটকে দেওয়া হয়। তা হলে গ্রামবাসীদের আটকানো হল কোন যুক্তিতে? এই নিয়ে পুলিশকে প্রশ্ন করা হলে তাঁদের সটান উত্তর, ' ওঁদের আটকানো হয়নি।' সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় যে ছবি ধরা পড়েছে, তা অবশ্য অন্য কথা বলছে। সে নিয়ে প্রশ্ন করা হলে পুলিশ আধিকারিকের এক জবাব, ' ওঁদের আটকানো হয়নি।' সঙ্গে সংযোজন, 'ওঁদের নিশ্চিত ভাবে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে।' কিন্তু এখনই কেন নয়? উত্তর নেই। অভিযোগ রয়েছে আরও। ঘরছাড়া পরিবারগুলি যে আজ ফেরার চেষ্টা করবেন, সে কথা জানা সত্ত্বেও কেন কোনও মহিলা পুলিশকর্মী ছিল না? এরও কোনও উত্তর দেয়নি প্রশাসন। এদিকে বিক্ষুব্ধ মহিলাদের অভিযোগ, 'এক জনও মহিলা পুলিশকর্মী ছিলেন না। আমাদের ঠেলে সরিয়েছেন পুরুষ পুলিশকর্মীরাই।' সব মিলিয়ে তুমুল অশান্তি বাধে এদিন দুপুরে। পরে সিদ্ধান্ত হয়, আজ নয়, কাল ফেরানো হবে গ্রামবাসীদের।