নয়াদিল্লি: মুহুর্মুহু রকেট, বোমা বর্ষণ থেকে নিস্তার পেতে হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষ। কিন্তু গাজার বৃহত্তম হাসপাতাল আল-শিফার (Al-Shifa Hospital) গোটা চত্বর এই মুহূর্তে সমাধিক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। হাসপাতাল চত্বরে নয় নয় করে ১৭৯ জনকে সমাধিস্থ করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। আল-শিফা হাসপাতালের প্রধান মহম্মদ আবু সালমিয়া জানিয়েছেন, হাসপাতাল চত্বরে ঘোর মানবিক সঙ্কট উপস্থিত হয়েছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, হাসপাতাল চত্বরে গণকবর দিতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা। (Israel Palestine War)


আল-শিফা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ভর্তি সাত শিশু এবং ২৯ জন রোগীর মৃত্য়ু হয়। এখনও পর্যন্ত বিদ্য়ুৎ ফেরেনি। তাই হাসপাতাল চত্বরেই একের পর এক দেহ সমাধিস্থ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।  এর পাশাপাশি, হাসপাতালের বাইরে, হাসপাতাল চত্বরে বহু মানুষের পচাগলা দেহ পড়েছিল, তা থেকে যাতে মহামারি পরিস্থিতি দেখা না দেয়, তার জন্যও একসঙ্গে অনেক দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, কোদাল, শাবল না থাকায়, হাত দিয়ে মাটি খুঁড়ে, কোনও রকমে দেহগুলি পুঁতে দেওয়া হচ্ছে বলে এর আগেও জানিয়েছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। (Israel Palestine Conflict)


গাজার বৃহত্তম হাসপাতাল আল-শিফা।  গত সপ্তাহ থেকে খবরে ওই হাসপাতাল। ওই হাসপাতালে জ্বালানি, খাবার এবং জল সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, হাসপাতালের প্রত্যেক ফটকের সামনে ইজরায়েলি সেনার সাঁজোয়া গাড়ি অবস্থান করছে, স্নাইপাররা ইতিউতি বন্দুক তাক করে রেখেছে বলে অভিযোগ। হাসপাতালে আশ্রিতরা একটু নড়াচড়়া করলেই এলোপাথাড়ি গুলি উড়ে আসছে, হাসপাতালের একটি অংশ বোমার আঘাতে উড়ে গিয়েছে, এমন খবরও মিলেছে।


আরও পড়ুন: Israel-Hamas War: 'গাজায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে হামাস', দাবি ইজরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর


এর আগেও, গাজায় হাসপাতালে হামলার অভিযোগ ওঠে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে পরিস্থিতি চরমে পৌঁছলেও, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, হাসপাতালে আচড় কাটা যায় না।  তাই ইজরায়েলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ইজরায়েলের দাবি, আল-শিফা হাসপাতালের ঠিক নীচে গোপন সুড়ঙ্গে হামাসের সদর দফতর রয়েছে। সেখানে হামাসের লোকজন  ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে বলে দাবি তাদের। কিন্তু নিরীহ শিশু এবং সাধারণ মানুষের মৃত্যুতে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে।


ইজরায়েলের দাবি, হাসপাতালের কর্মী এবং রোগীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে হামাস।- তাদের দাবি, মাটির নীচ দিয়ে সুড়ঙ্গপথ গড়ে তুলেছে হামাস। ওই হাসপাতালের মাটির নীচেও ঘাঁটি রয়েছে তাদের। যদিও হামাস এবং গাজা কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার জেরে ওই হাসপাতালকে ঘিরে রাখা হয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের অনুমান, আল-শিফা হাসপাতালের ভিতর এই মুহূর্তে ১০ হাজারের বেশি মানুষ মাথা গুঁজে রয়েছেন, যাঁদের মধ্যে হাসপাতালের কর্মী, রোগী থেকে গৃহহীন সাধারণ নাগরিকও রয়েছেন। চারিদিকে বোমা-গুলি বর্ষণের মধ্যে কোথাও যাওয়ার রাস্তা দেখতে পাচ্ছেন না তাঁরা।