হিন্দোল দে, কলকাতা: পঞ্চায়েত নির্বাচনে (Panchayat Election) বিরোধীরা যেন প্রার্থী দিতে না পারে। আর দিলেও যাতে বিরোধী প্রার্থী ভোট না পান তা নিশ্চিত করতে হবে, এই বক্তব্য রয়েছে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেখানে শাসক দলের নেতার এমন বক্তব্য নিয়েই তরজা শুরু। 


ভিডিওতে কী বলতে শোনা গিয়েছে? 


হাওড়া (Howarh) সদরের তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) বিধায়ক ও সভাপতি কল্যাণ ঘোষ বলেন, "২০২৩ সালের গ্রাম পঞ্চায়েতে এই এলাকায় একটাও কোনও বিরোধী রাজনৈতিক দল প্রার্থী দিতে না পারে। যদি প্রার্থী দেয়ও, একটা ভোট যেন না পায়। আপনারা শুধু সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।" যদিও এই ভাইরাল ভিডিওর সত্যতা এবিপি আনন্দ যাচাই করেনি। 


বাংলায় ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্ক এখনও অব্যাহত। তারই মধ্যে আগামী পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে হাওড়া সদরের তৃণমূল সভাপতি ও ডোমজুড়ের বিধায়ক কল্যাণ ঘোষের এই মন্তব্য ঘিরে তুমুল হইচই শুরু হল। 


গত ১৩ এপ্রিল হাওড়ার জগদীশপুরের সভায় পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধীদের প্রার্থী দিতে না দেওয়ার হুমকি দিতে শোনা গেছে হাওড়া সদরের তৃণমূল সভাপতি কল্যাণ ঘোষকে! ভাইরাল হওয়া এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ। তবে এব্যাপারে বিরোধীদের ঘাড়েই দায় চাপিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক। 


কী যুক্তি দিয়েছেন কল্যাণ? 


তৃণমূল নেতা জানিয়েছেন, "হ্যাঁ...আমার...আমি এভাবে বলতে চাইনি, আমি বলতে চেয়েছি, এমন ভাবে সংগঠন করবে, যাতে বিরোধীরা যা জিততে পারে, প্রার্থীই দেবে না কেউ, বিরোধীদের চক্রান্ত।" রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তথ্যসূত্র অনুযায়ী, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে  প্রায় ৩৪ শতাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন শাসকদলের প্রার্থীরা। তবে সেবার পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে ব্যাপক সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছিল। এই প্রেক্ষাপটেই ডোমজুড়ের তৃণমূল বিধায়কের মন্তব্যকে সামনে রেখে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনেও সন্ত্রাসের আশঙ্কা করছে বিরোধীরা।


পাল্টা বিজেপি


বিজেপির রাজ্য সম্পাদক উমেশ রাই বলেন, "গত পঞ্চায়েত নির্বাচনেও কীভাবে ভোট হয়েছিল দেখেছি, এবার যেভাবে বলছেন, তাতে সুষ্ঠুভাবে ভোট হতে দেবে না, আমরা প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতিকে জানাব, নির্বাচন কমিশনে জানাব, বোঝাই যাচ্ছে কীভাবে ভোট হবে...।" 


তবে ডোমজুড়ের তৃণমূল বিধায়ক কল্যাণ ঘোষই শুধু নন...এর আগে বীরভূম জেলা তৃণমূলের সম্পাদক আব্দুল মান্নান লাভপুরের দাঁড়কার একটি সভায় পঞ্চায়েত বিরোধী শূন্য করার ডাক দিয়ে বিতর্কে জড়ান। ২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটে যা ঘটেছিল, তার বিরূপ প্রভাব ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে পড়েছিল বলে মনে করেন তৃণমূল নেতাদের একাংশ। কিন্তু তারপরও পঞ্চায়েতকে কার্যত বিরোধী শূন্য করার ডাক দিয়ে ফের বিতর্ক সৃষ্টি করলেন হাওড়া সদরের তৃণমূল সভাপতি ও ডোমজুড়ের বিধায়ক কল্যাণ ঘোষ।