ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: সংঘাতে ইতি পড়ার লক্ষণ নেই। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে (Amartya Sen) এবার উচ্ছেদ সংক্রান্ত নোটিস পাঠালেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। বিশ্বভারতীর অভিযোগ, শান্তিনিকেতনের ১৩ ডেসিমেল জমি দখল করে রেখেছেন নোবেলজয়ী। তাঁকে সেই জমি ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে নোটিসে। সেই সঙ্গে, ২৯ মার্চ বিশ্বভারতীর সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ বিল্ডিংয়ে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকে হাজির হতেও বলা হয়েছে। যদিও অমর্ত্য সেনের আইনজীবী জানিয়েছেন, এখনও কোনও চিঠি পাননি তাঁরা (Visva Bharati University)।
বিতর্কের কেন্দ্রে ১৩ ডেসিমেল জমি
'প্রতীচী'র জমি বিতর্কে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অমর্ত্য সেনের সংঘাতে নতুন মোড়। সরাসরি উচ্ছেদের নোটিস পাঠালেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। আগামী ২৯ মার্চ বিশ্বভারতীর সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ বিল্ডিংয়ে তাঁকে হাজির হতে বলা হয়েছে। বিতর্কের কেন্দ্রে ১৩ ডেসিমেল জমি। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, ১৯৪৩ সালে অমর্ত্য সেনের বাবা প্রয়াত আশুতোষ সেনের নামে ৯৯ বছরের জন্য ১২৫ ডেসিমেল জমি ইজারা দেওয়া হয়েছিল৷ পরবর্তীতে ২০০৫ সালে এই জমি অমর্ত্য সেনের নামে মিউটেশন হয়।
এর পর বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফে অভিযোগ তোলা হয় যে, প্রতীচীতে লিজের ১২৫ ডেসিমেল ছাড়াও অতিরিক্ত ১৩ ডেসিমেল জমি দখল করে রাখা হয়েছে। অমর্ত্য় সেনের ওই জমি-বিতর্কে সংঘাতে জড়িয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এবং রাজ্য় সরকারও। সম্প্রতি অমর্ত্য সেনের শান্তিনিকেতনের বাসভবনে যান মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়।
আরও পড়ুন: Bankura: 'চিত্ত যেথা ভয়শূন্য'! সেনাকর্মীর বাড়িতে ঢুকে দু:সাহসিক ডাকাতি, কাটল মায়ের কানও
পরের দিন বিশ্বভারতীর শিক্ষক-পড়ুয়াদের একাংশের সঙ্গে বৈঠক করে, নাম না নিয়ে বিশ্ববিদ্য়ালয়ের উপাচার্যকে নিশানা করেন মুখ্য়মন্ত্রী। বলেন, "ক্ষমতার জোরে বুলডোজার চালালে আমি সঙ্গে আছি।" এর পাল্টা ২৪ ঘণ্টার মধ্য়েই প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সুর চড়ায় বিশ্বভারতী। নজিরবিহীনভাবে সেখানে বলা হয়, "মাননীয়াকে অনুরোধ করব, যে কান দিয়ে না দেখে, বুদ্ধি দিয়ে বিচার করুন।"
জমি-বিতর্কে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকে এখনও পর্যন্ত তিনটি চিঠি পাঠিয়েছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। সেই চিঠিগুলির প্রেক্ষিতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে অসম্মানিত করার চেষ্টার অভিযোগ তুলে আইনজীবী মাধ্যমে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে পাল্টা আইনি চিঠি পাঠান অমর্ত্য সেন। এবার সরাসরি জমি ছেড়ে দেওয়ার জন্য নোটিস পাঠিয়েছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
ওই নোটিসে বলা হয়েছে, শতাব্দী প্রাচীন বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর৷ এখানকার দখলকৃত জমি উদ্ধার করার দায়িত্ব বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের। কারণ এটা জাতীয় সম্পদ। নোটিসে জানতে চাওয়া হয়েছে, ১৩ ডেসিমেল জমি ফেরত না দিলে ১৯৭১ সালের উচ্ছেদ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা কেন নেওয়া হবে না? ২৯ মার্চ অর্মত্য সেন হাজির হতে না পারলে একজন প্রতিনিধিকে পাঠাতে বলা হয়েছে।
নোটিস পাননি বলে দাবি অমর্ত্য সেনের আইনজীবীর
বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক জানিয়েছেন, যে ১৩ ডেসিমেল জায়গা অর্মত্য সেন দখল করেছেন, সেই জায়গা ছেড়ে দেওয়ার জন্য তাঁকে নোটিস দেওয়া হয়েছে। যদিও এমন কোনও নোটিস হাতে পাননি বলে জানিয়েছেন অমর্ত্য সেনের আইনজীবী।