কলকাতা: গত কয়েকদিন ধরে সিকিম পাহাড়ে প্রবল বৃষ্টি়। তার উপর তিস্তা ব্যারাজের জল ছাড়ায় ফুঁসছে উত্তরবঙ্গের একাধিক নদী। তিস্তা বাজার, নাগরাকাটা, জলপাইগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন। বিপর্যস্ত উত্তর সিকিমও।


বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের জনজীবন: টানা বৃষ্টিতে ফুঁসছে তিস্তা। জলের তোড়ে ভাসছে গাড়ি। ভেঙে পড়ছে বাড়িও। জলের তলায় চলে গিয়েছে রাস্তাঘাট। সব মিলিয়ে বিপর্যস্ত জনজীবন। টানা বৃষ্টির জেরে তিস্তায় জলোচ্ছ্বাস। তার উপর রাম্বি ও কালিঝোরা ড্যাম থেকে জল ছাড়ার ফলে বাড়তি বিপত্তি। জলমগ্ন হয়ে পড়ে তিস্তা বাজার এলাকা। বন্ধ হয়ে যায় কালিম্পঙ থেকে পেশক হয়ে দার্জিলিং যাওয়ার রাস্তা। তিস্তা ব্যারেজ থেকে দফায় দফায় জল ছাড়ায় ফুলে ফেঁপে উঠেছে নদী। টানা বৃষ্টির জেরে তোর্সাতেও জল বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বুধবার ২৪ ঘণ্টায় ১১৫.৬০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে জলপাইগুড়িতে, যা এই মরশুমের রেকর্ড বলে মনে করছে সেচ দফতর। তিস্তা পাড়ের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। অন্যদিকে, ডুয়ার্সের নাগরাকাটা ব্লকের মন মনধুরা নদীর জল বইছে ব্রিজের উপর দিয়ে নদীর গ্রাসে তলিয়ে যেতে বসেছে শিশু শিক্ষা কেন্দ্র।

ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তর সিকিমও। মঙ্গনের কাছে পাকশেপে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এখনও নিখোঁজ ৫ জন। নামথাঙে প্রচুর বাড়ি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। ধসে ভেঙেছে রাস্তা। সঙ্কলাঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নির্মীয়মাণ সেতু। সিকিম ও উত্তরবঙ্গে এখনও ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। গতবছর ৩ অক্টোবর, ভোররাতে প্রবল বৃষ্টিতে ফেটে যায় উত্তর সিকিমের দক্ষিণ লোনক লেক। হ্রদভাঙা সেই বিপর্যয়ে প্রায় ৭০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। সর্বগ্রাসী তিস্তা তছনছ করে দিয়েছিল উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকাকে। সিকিমের দুর্যোগে তাই এবারও সিঁদুরে মেঘ দেখছে বাংলা।


লাগাতার বৃষ্টি ও দুর্যোগে বিপর্যয়ের ভ্রুকুটি উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে। আর গোটা দক্ষিণবঙ্গ তখন হাঁসফাঁস করছে ভ্যাপসা গরমে। আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, উত্তরবঙ্গে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর পর্যন্ত বর্ষা ঢুকে গেলেও, তা দক্ষিণবঙ্গে পৌঁছনোর অনুকূল পরিস্থিতি এখনও তৈরি হয়নি। এই পরিস্থিতিতে পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, পশ্চিম বর্ধমানের মতো পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি থাকছে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঝাড়গ্রাম ও বাঁকুড়া জেলায় তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি বজায় থাকবে। চরম গরম ও অস্বস্তিকর আবহাওয়ার দাপট চলবে হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ-সহ বিভিন্ন জেলায়। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, শুক্রবার দুপুরের পর দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় বজ্রবিদ্যুৎসহ ঝড়বৃষ্টি হতে পারে। শনিবার ও রবিবার দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে। 


আরও পড়ুন: Hooghly News: বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের পথে কাঁটা, জামাইষষ্ঠীতে খেতে ডেকে স্বামীকে 'খুন' !