নয়াদিল্লি:  দফায় দফায় আগুন জ্বলছে মণিপুরে (Manipur Fresh Violence)। সীমানা-লাগোয়া মোরেহ শহরের টি মোথায় একটি স্কুলবাড়ি হঠাৎ জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বুধবার রাতে। আবার জিরিবাম জেলার কালিনগরের একের পর পরিত্যক্ত বাড়ি, দোকানেও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সব মিলিয়ে ফের উত্তেজনার পরিবেশ উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে। 


বিশদ...
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, বুধবার, রাত ৯টা নাগাদ, মোরেহ শহরের নবনির্মিত জওহর নবোদয় বিদ্যালয় ভবনটিতে আগুন ধরিয়ে দেয় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা। ভবনটির উদ্বোধনও হয়নি। তার আগেই, বুধবার রাতের ঘটনায় দেখতে দেখতে জ্বলে ওঠে সেটি। মণিপুরের বাণিজ্য-শহর বলে পরিচিত মোরেহ সেই ২০২৩ সালের ৩ মে থেকে একরকম বন্ধ হয়ে রয়েছে। চূড়াচাঁদপুর জেলায় সেই যে হিংসার ঘটনা ঘটেছিল, তার পর থেকে কার্যত স্তিমিত মোরেহ-র কাজকর্ম। বছর পেরিয়েও সচল হয়নি মণিপুরের বাণিজ্যিক লেনদেনের প্রাণকেন্দ্র। তার উপর এই ঘটনা। স্থানীয়দের বক্তব্য, টি মোথা গ্রামের নবনির্মিত ওই স্কুলভবনে একটি পোস্ট তৈরির কথা ভাবছিল সীমান্তরক্ষী বাহিনী। এমনিতে Anāl সম্প্রদায়ের বসবাস গ্রামটিতে। তা ছাড়া, অসম রাইফেলসের একটি পোস্টও রয়েছে গ্রামের উল্টো দিকে। যদিও প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, স্কুলভবনটি যখন জ্বলছিল, তখন ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন উল্টো দিকে অসম রাইফেলসের পোস্টে থাকা আধিকারিকরা। আগুন নেভানোর কোনও চেষ্টা তাঁরা করেননি, দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের।
অন্য একটি ব্যাখ্যাও অবশ্য শোনা যাচ্ছে। ইন্দো-মায়ানমার সীমান্ত লাগোয়া মোরেহ শহর এমনিতেই বহু বছর ধরে বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের পছন্দের ডেরা। সূত্রের খবর, মোরেহ ও লাগোয়া একাধিক জায়গায় মায়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা প্রায়ই লুকিয়ে থাকে। গত কাল, যখন স্কুলভবনে আগুন লাগে, তখন সেখানে পৌঁছনোর সবকটি রাস্তা গাছের গুঁড়ি ফেলে বন্ধ করে দিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা, এমনও শোনা যাচ্ছে। নিরাপত্তা বাহিনী যাতে পৌঁছতে না পারে, সেই জন্য এই বাধা তৈরি করা হয়, দাবি এমনই।


 


জিরিবামের ছবি...
বুধবার জিরিবাম জেলার পরিত্যক্ত বাড়ি এবং একাধিক দোকানেও অগ্নিসংযোগ ঘটানো হয় বলে অভিযোগ। রাত সাড়ে দশটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছিল। তবে সেখানে জেলা পুলিশ দ্রুত তৎপর হওয়ায় আগুন নেভানো সহজ হয়। পরে, রাত দেড়টা নাগাদ, একই এলাকায় তিনটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। সেটিও নিয়ন্ত্রণে এনেছে প্রশাসন। গত সোমবার, মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের অ্যাডভান্সড সিকিউরিটি কনভয়ের উপর হামলা চালিয়েছিল সশস্ত্র জঙ্গিরা। এনএইচ-৩৭-র উপর সেই ঘটনার পর, বুধবার, বীরেন সিংয়ের মন্ত্রিসভার এক সদস্য হিংসাবিধ্বস্ত এলাকায় পৌঁছেছেন। আসার কথা মুখ্যমন্ত্রীরও। গত ৬ জুন থেকে নতুন করে অশান্তি মাথাচাড়া দিয়েছে মণিপুরে। সেই অশান্তি আর থিতোনোর নামই নিচ্ছে না।


আরও পড়ুন:জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পদে মেয়াদ বাড়ল অজিত দোভালের