কলকাতা: দিল্লিতে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) বৈঠকের মধ্যেই বেনজির পরিস্থিতি রাজ্যে। বুধবার সকালে আচমকা নবান্নে (Suvendu at Nabanna) হাজির রাজ্যের বিরোধী দলনমেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। বিজেপি-র তিন বিধায়ক চন্দনা বাউড়ি, শঙ্কর ঘোষ এবং বিশাল লামাকে নিয়ে নবান্নে ঢুকে পড়েন। সেই নিয়ে উত্তেজনা যখন তুঙ্গে, সেই আবহেই নবান্ন থেকে বেরিয়ে মমতাকে বার্তা দিলেন শুভেন্দু।  বলেন, "এক ইঞ্চিও জায়গা ছাড়ব না, তাড়া করে বেড়াব আপনাকে।"


বুধবার সকালে প্রথমে বিধানসভায় যান শুভেন্দু। সেখানে বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এর পর কাউকে কিছু জানতে না দিয়েই নবান্নের উদ্দেশে রওনা দেন। সেখানে পৌঁছে সটান নবান্নের ভিতরকে ঢুকে যান। সেই নিয়ে চরম উত্তেজনা দেখা দেয় প্রশাসনিক স্তরে। নবান্নের বাইরে পুলিশ মোতায়েন বাড়ানো হয়। 


প্রায় আধ ঘণ্টার মাথায় নবান্ন থেকে বেরিয়ে আসেন শুভেন্দু এবং বিজেপি-র তিন বিধায়ক। সেখানে শুভেন্দু জানান, রাজ্যে বিরোধীদের কোনও বৈঠকে ডাকা হয় না। বঞ্চনার অভিযোগ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী দিল্লি গিয়েছেন, কিন্তু আসলে বাংলার মানুষের সঙ্গে বঞ্চনা করছে এই সরকার। ইউপিএ আমলের থেকে নরেন্দ্র মোদির আমলে রাজ্যের জন্য বরাদ্দ বাড়লেও, সেই টাকা নয়ছয় হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন শুভেন্দু। 


আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: দিল্লিতে মোদির সঙ্গে বৈঠক মমতার, আচমকা নবান্নে হাজির শুভেন্দু, কী পরিকল্পনা?


শুভেন্দুর বক্তব্য, "সাংসদদের নিয়ে দিল্লিতে বঞ্চনার কথা বলতে গিয়েছেন উনি। আমরা বলতে এসেছিলাম, রাজ্যের জনগণকে বঞ্চিত করছে এই সরকার। কেন্দ্রের টাকা নয়ছয় করে দিল্লিতে নাটক করতে গিয়েছেন। পাল্টা যুক্তি-তথ্য দিয়ে সব বলে গেলাম এখানে। মুখ্যসচিবের সঙ্গে দেখা হয়েছে।  আমাদের বক্তব্যের অডিও রেকর্ডিং এবং ছবি পোস্ট করে দিচ্ছি, সব পেয়ে যাবেন আমরা।"


কিন্তু কাউকে কিছু না বলে, এভাবে নবান্নযাত্রা কেন? জবাবে শুভেন্দু বলেন, "এখানে ১৪৪ ধারা জারি থাকে। আগে বললে ঢুকতে দিত না। আমরা চার জন এসেছি। আধ ঘণ্টা আগে ফোনও করেছিলাম, তাতে দেখছি-দেখব করছিল প্রশাসন। তাই আর অপেক্ষা করিনি। এখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জনগণকে বঞ্চিত করছেন। মুখ্যসচিবের মাধ্যমে বার্তা দিয়ে গেলাম ওঁকে। এখানে বিরোধীদের ভোট দিলে ঘরছাড়া হতে হয়, ভোট লুঠ হয়, আবাস, বার্ধক্যভআতার টাকা দেওয়া হয় না। এই সরকার ফর দ্য ফ্যামিলি, বাই দ্যা ফ্যামিলি, অফ দ্য ফ্যামিলি নীতি নিয়ে চলছে। কেন্দ্র অনেক টাকা দিয়েছে, কী ভাবে নষ্ট হয়েছে, তার তালিকা দিয়েছি। নবান্নে এসে বলে গেলাম, এক ইঞ্চিও জায়গা ছাড়ব না। আপনাকে তাড়া করে বেড়াব।"


শুভেন্দুর এই নবান্নযাত্রা নিয়ে তরজা শুরু হয়েছে বঙ্গ রাজনীতিতে। কারণ দিল্লিতে যখন বকেয়া টাকার দাবিতে সরব তৃণমূল, সেই সমই রাজ্য প্রশাসনকে কার্যত কিছু জানতে না দিয়ে নবান্নে ঢুকে পড়েন শুভেন্দু। বিষয়টি নিয়ে আরও জলঘোলা হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।