পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া :  পাতালখুরী গ্রাম। ' নির্বাচন আসে। নির্বাচন যায়। কিন্তু জল-সমস্যার সমাধান হচ্ছে কই ? ' ... দীর্ঘদিন ধরে 'টাইম কলে জল' না পেয়ে কার্যত প্রবল সমস্যার মুখে গ্রামের প্রায় ২৫০ পরিবার।  সামান্য কিছুদিন নয়, দীর্ঘ দেড় মাস ধরে গ্রামে পানীয় জলের সরবরাহ বন্ধ। পাতকুয়ো, নলকূপ আছে ঠিকই, কিন্তু সেই জল রান্না করা বা পান করার উপযুক্ত নয়। দাবি আমজনতার। ভোটের আবহেও কলগুলির সামনে বালতি, কলসি ও অন্যান্য পাত্র নিয়ে পানীয় জলের অপেক্ষায় মানুষ।

  


গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, চাষের কাজের জন্য তাঁরা ভরসা করেন বৃষ্টির জলের উপরেই। অন্যদিকে পানীয় ও গৃহস্থালির অন্যান্য কাজের জন্য নল বাহিত জলের উপর নির্ভরশীল বাঁকুড়া জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষজন। গ্রামের নলকূপ ও পাতকুয়োর জলও ব্যবহার উপযোগী নয়। 


সকাল হতে না হতেই, পানীয় জলের আশায় 'টাইম কলের' সামনে খালি বালতি কলসি হাঁড়ি লাইন দিয়ে পেতে আসেন বাঁকুড়ার জগদাল্লা দু'নম্বর পঞ্চায়েতের পাতালখুরী গ্রামের বাসিন্দারা।  দীর্ঘ দেড় মাস গ্রামের ১২ টি নল বাহিত কলের মুখ দিয়ে এক ফোটাও জল পড়েনি। '' ভোট আছে ভোট যায়। প্রতিশ্রুতি বন্যা বয়ে যায় বাম ডান গেরুয়া সহ বিভিন্ন প্রার্থীর গলায়, কিন্তু আদতে মানুষের তৃষ্ণার্ত গলা পর্যন্ত পৌঁছায় না পানীয় জল। '' অভিযোগ বাসিন্দাদের। 


পাতালখুরী গ্রামে নয় নয় করে আড়াইশোটি পরিবারের বাস। তাদের সুবিধার্থে রয়েছে ১২ টি 'টাইম কল'।  কিন্তু গত দেড় মাসে সেই সব কল থেকে জল পড়েনি এক ফোঁটাও। ঘরে ঘরে নলবাহিত বিশুদ্ধ জল পৌঁছে যাবে, এই প্রতিশ্রুতি প্রায়শই শোনা যায় স্থানীয় প্রশাসনের মুখে। গ্রামবাসীরা বলছেন, গত বিধানসভা ভোটের আগেও প্রচারে মূল ইস্যু হয়ে উঠেছিল পানীয় জল ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার বিষয়টি। এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে গতবারও ভোট চেয়েছিলেন প্রার্থীরা। কিন্তু ইদানীং এই পরিষেবার অবস্থা বেহাল। 


গ্রামের মানুষকে সকালবেলা হলেই গ্রাম থেকে প্রায় দেড় থেকে দুই কিলোমিটার দূরে নন্দীগ্রাম, জেঠিয়া, ভাগাবাঁধ পুয়াবাগান সহ বিভিন্ন গ্রামের জল সংগ্রহ করতে যেতে হয়। 


ভোটের আবহে এই ঘরে ঘরে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া নিয়েই শুরু হয়েছে শাসক বিরোধী তরজা। বিজেপির দাবি, গত লোকসভা নির্বাচনে পর থেকেই পাতালখুরী গ্রামে তাদের সংগঠন মজবুত করেছে গেরুয়া শিবির। এবার বিধানসভা নির্বাচনে অধিকাংশ মানুষই বিজেপির হয়ে পদ্মফুলে ছাপ দিয়েছেন বলেই মনে করছেন তাঁরা। আর সে কারণেই প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে এই গ্রামের মানুষকে এই পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। তবে স্থানীয় তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের প্রধান অবশ্য সমস্যার কথা প্রথমে শোনেনইনি নেই বলে দাবি করেছেন। লিখিত আকারে সমস্যার কথা পঞ্চায়েতে জানানো হলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।