কলকাতা: মহার্ঘভাতা নিয়ে লাগাতার আন্দোলনে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন (DA protests)। জানিয়েছিলেন, রাজ্যের দেওয়া মহার্ঘভাতায় না পোষালে চাকরি ছেড়ে দিতে পারেন আন্দোলনকারীরা। তাঁর সেই মন্তব্যে বিতর্ক শুরু হতে সময় লাগেনি। সেই নিয়ে এ বার রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim) বিরুদ্ধে সুর চড়াল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চও। তাদের সাফ কথা, বেতন দিতে না পারলে, ফিরহাদ চেয়ার ছেড়ে চলে যান। 


ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে সুর চড়াল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ


মঙ্গলবার মহার্ঘভাতা নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া রাজ্যের সরকারি কর্মীদের কড়া বার্তা দেন ফিরহাদ। তাঁর বক্তব্য ছিল, "যাঁরা অনেক পান, তাঁদের বেশি পাইয়ে দেওয়াটা আমার কাছে পাপ। না পোষালে ছেড়ে দিন। কেন্দ্রীয় সরকার যখন টাকা দিচ্ছে, সেখানে গিয়ে চাকরি করুন!" সরকারি কর্মীরা আসলে জনগণের সেবক, কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি নিয়ে সেই কথাও স্মরণ করিয়ে দেন ফিরহাদ। 


ফিরহাদের সেই মন্তব্যে বুধবার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। সংগঠনের এক সদস্য সরাসরি ফিরহাদকেই চেয়ার ছাড়ার পরামর্শ দেন। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, "আপনাকে বলছি ববিবাবু, আপনি যদি বেতন দিতে না পারেন, আপনার চেয়ারটা ছেড়ে চলে যান। কর্মচারীরা ৬০ বছর মাথা উঁচু করে থাকবে। আপনার মতো পাঁচ বছর পর পর হাতজোড় করে জনগণের কাছে ভিক্ষা চাইতে যাবে না নিজের কুর্সি বাঁচানোর জন্য।"



আরও পড়ুন: SSC Case: রাত থেকে তল্লাশি, SSC-র প্রাক্তন উপদেষ্টার ফ্ল্যাটেও যকের ধন! উদ্ধার সোনা-টাকা


আপনাকে বলতে চাই ববিবাবু. আপনি যদি বেতন দিতে না পারেন., আপনার চেয়ারটা ছেড়ে চলে যান। কর্মচারীরা ৬০ বছর মাথা উঁচু করে থাকবে। আপনার মতো পাঁচ বছর পর পর হাতজোড়ে করে জুগণের কাছে ভিক্ষা চাইতে যাবে না নিজের কুর্সি বাঁচানোর জন্য। যত বাজে কথা বলবেন, আন্দোলন তত তীব্র হবে। আপনি পাপে আকণ্ঠ পরিপূর্ণ। তাই রোজ কোর্টে যেতে হচ্ছে। কোনও কর্মচারীকে কোর্টে যেতে হয় না।"


বকেয়া মহার্ঘভাতার দাবিতে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন রাজ্যের সরকারি কর্মীদের একাংশ। তা নিয়ে দিনে দিনে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাতের পারদও চড়ছে তাঁদের। সেই আবহে ফিরহাদের মন্তব্যে কার্যত আগুনে ঘি ঢেলেছে। ফিরহাদের মন্তব্যের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। এ দিন কলকাতা পৌরসভাতেও বিক্ষোভ দেখান সংগঠনের সদস্যরা। এ দিন পৌরসভায়  কর্মবিরতিও পালন করেন তাঁরা। 


তবে এই পরিস্থিতিতেও নিজের মন্তব্যে অনড় ফিরহাদ। তাঁর বক্তব্য, "এমনিতেই বামপন্থীরা প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। এখন বামপন্থী কিছু সংগঠন রয়েছে। যারা আবার সেই বন্ধ, ধর্মঘট, লালঝান্ডার সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে, যা বাংলাকে আগে ১০০ বছর পিছিয়ে দিয়েছিল। কর্মবিরতি হবে না, মানুষকে পরিষেবা দিতে হবে। মানুষের করের টাকায় বেতন পান। না পোষালে ছেড়ে দিতে পারেন।"


এই পরিস্থিতিতেও নিজের মন্তব্যে অনড় ফিরহাদ


যদিও এ নিয়ে ফিরহাদকে একযোগে কটাক্ষ করেছে বিজেপি এবং কংগ্রেস। রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কথায়, "আপনি দিতে পারছেন না, তাহলে আপনি ছেড়ে দিন। যাঁরা যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন, তাঁরা কেন যাবেন?" প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেন, "চাকরি কেউ দয়া করে দেননি। নিজেদের যোগ্য়তায় পেয়েছেন। সাধারণ মানুষের DA, পেনশন সবের দরকার হয়। এই ঔদ্ধত্য বাংলার মানুষ সহ্য করবেন না।"