কলকাতা: জাতীয় শিশু সুরক্ষা অধিকার কমিশনকে (NCPCR) নিশানা করে একের পর এক ট্যুইট (Twitter) রাজ্য শিশু সুরক্ষা অধিকার কমিশনের (WBCPCR)। লেখা, '১৪৪ ধারা লঙ্ঘন করে কালিয়াগঞ্জে গিয়েছে জাতীয় শিশু সুরক্ষা অধিকার কমিশনের দল। জাতীয় শিশু সুরক্ষা অধিকার কমিশনের এই ভূমিকা লজ্জাজনক। যেভাবে এনসিপিসিআরের চেয়ারপার্সন প্রিয়ঙ্ক কানুনগো রাজ্যের শিশু ও মহিলাদের সম্পর্কে মন্তব্য করছেন, তা দুর্ভাগ্যজনক। 'তথ্য যাচাই না করেই তিনি উস্কানিমূলক মন্তব্য করছেন তিনি। তাঁর এই ধরনের মন্তব্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। যাদের শিশুদের অধিকার রক্ষার কথা, তাঁরাই শিশুর মৃতদেহ নিয়ে রাজনীতি করছে। আইন ভেঙে রাজ্যের কমিশনকে অগ্রাহ্য করে রাজ্যকে বদনাম করার চেষ্টা হচ্ছে।' 


যা পরিস্থিতি...
নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ ঘিরে দু’দিন ধরে উত্তপ্ত রয়েছে উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ। কখনও টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ, কখনও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টির ঘটনা ঘটেছে। এই পরিস্থিতিতে ৭ দিনের জন্য কালিয়াগঞ্জের একাংশে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসন। আজই ঘটনাস্থলে যাওয়ার কথা জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের প্রতিনিধিদলের। ইতিমধ্যে কালিয়াগঞ্জ পৌঁছেছেন জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রিয়ঙ্ক কানুনগো। তবে ১৪৪ ধারা জারি হওয়ায় কমিশনের সদস্যরা বাধা পান কি না, সেটাই দেখার। যদিও রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার সানা আখতার জানিয়েছেন, নিয়ম মেনে চার প্রতিনিধি যেতে চাইলে প্রশাসনের কোনও আপত্তি নেই। আজ সকাল থেকেই এলাকা থমথমে। পুলিশ গত কাল থেকেই চত্বরের দখল নিয়েছিল। বস্তুত, গত কালের পর থেকেই এলাকা সুনসান। আর আজ সকাল থেকে জারি হয় ১৪৪ ধারা। প্রশাসনের তরফ থেকে ঘোষণা, আগামী ৭ দিন ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। গত দুদিনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। এর মধ্যেই কালিয়াগঞ্জ পৌঁছেছেন জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন।  


কী ঘটেছিল?
স্থানীয় সূত্রে খবর, গত বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকে নিখোঁজ ছিল এক নাবালিকা। শুক্রবার সকালে একটি পুকুরে উদ্ধার হয় তাঁর মৃতদেহ। মৃতা এবছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল। তাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে, প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। প্রথমে কালিয়াগঞ্জ-দুর্গাপুর রাজ্য সড়ক অবরোধ ও পরে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পুলিশ মৃতদেহ তুলতে গেলে, বাধা দেন বিক্ষোভকারীরা। এরপরই দু-পক্ষের মধ্যে বেঁধে যায় খণ্ডযুদ্ধ। পুলিশের দিকে উড়ে আসতে থাকে ইট। পাল্টা ইট ছোড়ে পুলিশও। ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল। চলে ব্যাপক লাঠিচার্জ। পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, মৃত নাবালিকার সঙ্গে এক যুবকের সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। মৃতের পরিবারের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে ওই যুবক ও তাঁর বাবাকে আটক করা হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়ার অভিযোগে, আরও কয়েকজনকে আটক করা হয়।