সঞ্চয়ন মিত্র, ভাস্কর মুখোপাধ্যায় ও কমলকৃষ্ণ দে, কলকাতা ও বর্ধমান: প্রবল গরমে কার্যত পুড়ছে বাংলা। চৈত্রের শেষে ক্রমশ ঊর্ধ্বগামী পারদ। আগামীকাল থেকে রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলায় তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। স্কুলের সময়েও বদল করা হয়েছে। এগিয়ে আনা হল স্কুলের গরমের ছুটিও। ২৪ মে-র বদলে সরকারি স্কুলে ২ মে থেকেই গরমের ছুটি। কাল থেকে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই তাপপ্রবাহের আশঙ্কা করা হয়েছে। ১৪ থেকে ১৬ এপ্রিল দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই তাপপ্রবাহের সতর্কতা। মালদা, ২ দিনাজপুরেও ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা। দহন থেকে আপাতত নেই মুক্তি, বৃ্ষ্টির সম্ভাবনা নেই। ক্যানিং, বাঁকুড়ায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি, কলকাতা ৩৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দক্ষিণবঙ্গের ১১টি জায়গায় তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি। আলিপুর জাজেস কোর্টে আইনজীবীর গাড়ি চালকের অস্বাভাবিক মৃত্যু। প্রচণ্ড গরমেই গাড়ি চালকের মৃত্যু হয়েছে বলে অনুমান পুলিশের। প্রখর দাবদাহ এড়াতে মর্নিং শিফটে ক্লাস করানোর নির্দেশিকা জারি করেছে বীরভূম ও বর্ধমান জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ। 


গরমের বলি:
এমন গরমের মধ্যেই আলিপুর জাজেস কোর্টের এক আইনজীবীর গাড়িচালকের মৃত্য়ু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল। তীব্র গরমের মধ্যে চালকের আসনে বসেই অজ্ঞান হয়ে পড়েন বাটানগরের বাসিন্দা ৭০ বছরের সমীর চৌধুরী। এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। প্রচণ্ড গরমের কারণেই ওই ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছেন চিকিৎসকরা। 


গত কয়েকদিনে ঠাঠা গরমে নাজেহাল রাজ্যবাসী। এরই মধ্যে আরও অস্বস্তিকর অবস্থার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। শনিবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে তাপপ্রবাহের সর্তকবার্তা জারি করা হল। এখনই তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় ৩ থেকে ৫ ডিগ্রি বেশি, আগামী ৫ দিনে তা আরও বাড়বে। পশ্চিমের রাজ্যগুলির মতো শুকনো গরম হাওয়া বইবে দক্ষিণবঙ্গে। 


বুধবারও গরমে পুড়েছে বাংলা। এদিন কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮.৬ ডিগ্রি। সবচেয়ে বেশি গরম ছিল বাঁকুড়ায়। সেখানে তাপমাত্রার পারদ ৪০ পেরোল। বর্ধমান ও শ্রীনিকেতনে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ক্যানিংয়ে ৪০ ডিগ্রি ও পানাগড়ে ৩৯.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী কয়েকদিনে উত্তরোত্তর বাড়বে গরম। বৃহস্পতিবার কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান ও পূর্ব মেদিনীপুরে তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। শুক্রবার থেকে রবিবারও দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলা এবং উত্তরবঙ্গের মালদা ও দুই দিনাজপুরে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। বীরভূম ও বর্ধমানের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সোম থেকে শুক্রবার সকাল ৬.৩০-১১টা পর্যন্ত ও শনিবার ৯.৩০টা পর্যন্ত ক্লাস চলবে। 


আরও পড়ুন: অবশেষে সাফল্য! গঙ্গার নীচ দিয়ে ট্রায়াল রান মেট্রোর