রুমা পাল, ঋত্বিক প্রধান, অরিন্দম সেন, কলকাতা : আলিপুরদুয়ারের বিজেপি বিধায়ক (BJP MLA ) সুমন কাঞ্জিলাল দল ছাড়ার পরে, বিজেপির বিধায়ক সংখ্য়া কমে দাঁড়িয়েছে ৬৯-তে। তৃণমূল (TMC) দাবি করছে, লাইনে আছেন আরও ১৩ জন। কিন্তু তাঁরা কারা ? এই নিয়েই মাথাচাড়া দিয়েছে নতুন জল্পনা। বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য় বিধায়কের দলত্যাগকে গুরুত্ব দিতে নারাজ।
দরজা শেষমেশ খুলল তৃণমূল ?
প্রকাশ্য সভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) বলেছিলেন, 'যদি দরজা খুলি, বিজেপি দল আর থাকবে না। বলুন দরজা খুলব? খুলব? আমার তো মাঝে মাঝে মনে হয় একটু খুলে দিই।' আর রাজ্য রাজনীতিতে আপাতত আলোচনা যে বিষয়ে, তা হলে তাহলে কি পঞ্চায়েত ভোটের আগের দরজা খুলেই দিল তৃণমূল কংগ্রেস ? বিজেপির টিকিটে জেতা আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলালের তৃণমূলে যোগদানের পর সেই প্রশ্নই জোরাল হচ্ছে।
'দরজায়' আরও ১৩ !
আলিপুরদুয়ারের বিজেপি বিধায়ক দল ছাড়ায় বিধানসভায় বিজেপির সদস্য সংখ্যা ৭৭ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৬৯। কিন্তু, বিজেপিতে ভাঙনের এই ধারা কি আরও দীর্ঘায়িত হবে? সেই জল্পনা জোরাল করে তৃণমূলের মুখপাত্র সুদীপ রাহা শুভেন্দু অধিকারীকে ট্যাগ করে ট্যুইটারে লিখেছেন, ক্যামাক স্ট্রিটের দরজায় অপেক্ষায় আছেন আরও ১৩ জন! বিরোধী দলনেতার মর্যাদা টিকবে তো ?
সম্প্রতি খড়গপুরের বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের (Hiran Chatterjee) তৃণমূলে যোগদানের জল্পনা নিয়ে, শোরগোল পড়ে গেছিল রাজ্য রাজনীতিতে। তাতে অন্য় মাত্রা যোগ করেছিল এই ভাইরাল ছবি। যেখানে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা তৃণমূল কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতির সঙ্গে দেখা গেছিল বিজেপি বিধায়ক হিরণকে। যদিও ছবিটি বিকৃত বলে পরে দাবি করেন হিরণ। যদিও তা নিয়ে তাঁকে খোঁচা দিতে ছাড়েনি তৃণমূল শিবির।
জল্পনা জিইয়ে রাখছে রাজ্যের শাসকদল
সুমন কাঞ্জিলাল তৃণমূলে আসার পর ফের দলবদলের জল্পনা উস্কে দিয়েছে শাসক দল। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছেন, 'এ বিষয়ে যারা সব জানেন, তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরা যখন বলবেন আমরা এ বিষয়ে বিস্তারিত বলব। আসলে সেইসব এলাকার তৃণমূলের কথাও ভাবতে হচ্ছে। শুধু যোগাযোগ রেখেছেন এমনটা নয়, কেউ দিল্লিতে, কেউ কলকাতায়, কেউ ক্যামাক স্ট্রিটে, কেউ মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরকালে শারীরিকভাবে বৈঠক করেছেন। খোলাখুলি ভাবে তৃণমূলে আসার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন।'
চড়ছে রাজনৈতিক তরজা
যদিও বিষয়টিকে পাত্তা দিতে নারাজ বিজেপি। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, 'আমরা তো শুনেছি আরও বেশি, বলছে বলতে দিন, মানুষ জবাব দেবে'। দলবদলের এই রাজনীতিকে কটাক্ষ করেছে বামেরা। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, 'বিজেপি থেকে আসছে, তৃণমূল নিচ্ছে কেন, তৃণমূলের সংখ্যা কি কমে গেছে, না। সর্বোচ্চ ক্ষমতা চাই, কেউ বিরোধিতা করতে পারবে না। স্বৈরাচারির প্রবণতা, এটাই তার লক্ষ্মণ।'
এদিকে, সুমন কাঞ্জিলালের তৃণমূলে যোগদানের পর, সোমবার আলিপুরদুয়ারে ধিক্কার মিছিল করেন বিজেপি কর্মীরা। অশান্তি এড়াতে সুমন কাঞ্জিলালের বাড়ির সামনে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ।
আরও পড়ুন- ২০১৬-র প্রাথমিকের নিয়োগে যারা ইন্টারভিউ নিয়েছিলেন, তাদের হাজিরার নির্দেশ হাইকোর্টের