কলকাতা: আদালতে ধাক্কা রাজ্যের। গ্রেফতারির ৮ ঘণ্টার মধ্যেই জামিন পেলেন আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী (koustav Bagchi)। আর তারপরই ক্ষোভে ফেটে পড়লেন আইনজীবী তথা সিপিএম সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য (Bikashranjan Bhattacharya)।


এবিপি আনন্দকে বিকাশরঞ্জন বলেছেন, 'গোটা প্রক্রিয়াটাই বেআইনি। আইনবিরুদ্ধ। করা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর চাপে। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর কর্মীদের দিয়ে হাস্যকর এফআইআর করিয়েছেন। পুলিশকে চাপ দিয়েছেন। পুলিশও আইনকানুন ভুলে গিয়ে তাই করেছে। পুলিশ প্রশাসনকে মনে রাখতে হবে তারা আইনের কাছে দায়বদ্ধ, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের কাছে নয়। এটা তাদের বোঝার সময় এসেছে আর তাঁরা যাতে ভাল করে বোঝেন সেই ব্যবস্থাও করব আগামী দিনে।'


বিকাশরঞ্জন আরও বলেছেন, 'পুলিশ আইন মেনে কাজ করেনি। ওপর থেকে বলা হয়েছে এই অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করো। তাই গ্রেফতার করেছে। কত বড় নির্লজ্জ মুখ্যমন্ত্রী হলে তাঁর শ্লীলতাহানি করেছে বলে অভিযোগ তুলতে পারেন একজন আইনজীবী যখন আলোচনার সময় বক্তৃতা করছিলেন তার ভিত্তিতে। সে তাঁর বক্তৃতার মান যাই হোক না কেন। তিনি একটি বইয়ের রেফারেন্স দিচ্ছিলেন। সেই বইটা তো বাজারে নিষিদ্ধ নয়। কী করবেন অর্বাচীনদের হাতে ক্ষমতা গেলে। তাহলে এই পরিণতি হতে বাধ্য।' যোগ করেছেন, 'উত্তর প্রদেশেও এভাবে চলছে। স্বৈরাচার এভাবেই আস্তে আস্তে ঘাড়ে চেপে বসে আর তার বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হয়। ভাল বিষয় হচ্ছে সবাই রুখে দাঁড়াচ্ছেন।'


শনিবার বিকেলে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে কৌস্তভ বাগচীর জামিন। আদালতে ধোপে টিকল না পুলিশের সওয়াল, জামিন পেলেন কৌস্তভ। কোর্টে ধাক্কা পুলিশের। জামিন পেলেন আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতা।


গতকাল রাত ২.৩০ নাগাদ কৌস্তভের ব্যারাকপুরের বাড়িতে যায় কলকাতার বড়তলা থানার পুলিশ। রাতভর জিজ্ঞাসাবাদের পরে সকাল ৮টা নাগাদ গ্রেফতার হন কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচী। তবে মাত্র সাড়ে আট ঘণ্টার মধ্যে ব্যাকফুটে প্রশাসন। কারণ, বিকেল ৪.৩০-এ কৌস্তভ বাগচীকে জামিন দিল ব্যাঙ্কশাল কোর্ট।


প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীকে মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, পাল্টা মন্তব্যের পরেই গ্রেফতার হন কৌস্তভ। তাঁর বিরুদ্ধে হুমকি, উস্কানি, শ্লীলতাহানি-সহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা হয়। অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, বিবৃতির জেরে হিংসা ছড়ানোর ধারায় এফআইআর দায়ের হয়। কৌস্তভের বিরুদ্ধে অশালীন অঙ্গভঙ্গি করারও অভিযোগে এফআইআর দায়ের।


'মাঝরাতে আইনজীবীকে তুলে আনার অধিকার পুলিশকে কে দিয়েছে? কৌস্তভ কি কোনও সন্ত্রাসমূলক কাজে যুক্ত? কোর্টে প্রশ্ন করেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি আরও সওয়াল করেন, 'কৌস্তভ বলেছেন, একটি বই বাজারে আছে। যে বইয়ে মুখ্যমন্ত্রীর অতীত ও বর্তমান সম্পর্কে বলা আছে। সেই বই এখনও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে, সরকার তো ব্যান করেনি। কেন ৪১ ধারায় নোটিস করল না পুলিশ? কেন মাঝরাতে পুলিশ বাড়িতে ঢুকল? এরপর তো কোনও বিচারকের বাড়িতেও পুলিশ ঢুকে যাবে। কোথায় যাচ্ছে আইন ব্যবস্থা? রাত ৩টেয় বাড়িতে পুলিশ চলে এল! এত রাতে কারও বাড়িতে পুলিশ যাওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা আছে।'


আরও পড়ুন: মুখ পুড়ল পুলিশের, জামিন পেলেন কৌস্তভ বাগচী