ঠাকুরনগর: নেতাদের সাময়িক ভাবে বহিষ্কার করে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল দল। কিন্তু বিজেপি-র (BJP) অস্বস্তি বাড়িয়েই চলেছেন রীতেশ তিওয়ারি (Ritesh Tiwari) এবং জয়প্রকাশ মজুমদার (Jay Prakash Majumdar)। শনিবার রাতে ঠাকুরনগরে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের (Shantanu Thakur) বাড়িতে হাজির হলেন তাঁরা। রাজ্য কমিটিতে মতুয়া নেতৃত্বের জায়গা না হওয়া নিয়ে এমনিতেই রাজ্য বিজেপি-র উপর ক্ষুব্ধ শান্তনু। প্রকাশ্যে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। সেই পরিস্থিতিতে বহিষ্কৃত নেতাদের ঠাকুরবাড়ি যাওয়া নিয়ে অস্বস্তিতে বিজেপি।


এ দিন রাতে আচমকাই ঠাকুরনগরে শান্তনুর বাড়িতে পৌঁছন রীতেশ তিওয়ারি এবং জয়প্রকাশ মজুমদার। সেখানে তাঁদের মধ্যে জরুরি বৈঠক হয় বলে সূত্রের খবর। তবে কী নিয়ে আলোচনা করতে রাতে শান্তনুর কাছে ছুটে গেলেন রীতেশ এবং জয়প্রকাশ, তা এখনও পরিষ্কার ভাবে জানা যায়নি। এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক আশিস বিশ্বাস।


বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর থেকেই বিজেপি-তে ভাঙন অব্যাহত। সম্প্রতি নয়া রাজ্য কমিটি গঠনে বাঘা বাঘা নাম বাদ যাওয়ায় তা চরমে ওঠে। মতুয়া সম্প্রদায়ের নেতাদের কমিটিতে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ উগরে দেন শান্তনু। কয়েক জন নেতা মিলে ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চাইছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। এ নিয়ে আন্দোলনে নামারও হুঁশিয়ারি দেন।


আরও পড়ুন: North 24 Pargana: জাতীয় ফুল পদ্মকে অবমাননা, মদন মিত্রের নামে রহড়া থানায় অভিযোগ দায়ের


তার পর থেকে একে একে অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা যায় রীতেশ, জয়প্রকাশদেরও। তার জেরে চলতি সপ্তাহের শুরুতেই তাঁদের সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয় বিজেপি থেকে। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের নির্দেশে, শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে তাঁদের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে জানানো হয়।


কিন্তু তাতেও ক্ষোভ চাপা দেওয়া যায়নি। বরং বিগত কয়েক দিনে একাধিক বার দলের বিরুদ্ধে কার্যত বোমা ফাটিয়েছেন রীতেশ এবং জয়প্রকাশ। আলিপুরদুয়ারের জেলা কমিটিতে দলত্যাগী ভাস্কর দে-র নাম রাখা নিয়ে রাজ্য বিজেপি-র সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী এবং বিজেপি-র সর্বভারতীয় আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্যকে তীব্র আক্রমণ করেন রীতেশ।


রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে জয়প্রকাশ জানান, প্রার্থী বাছাই থেকে ভোট পরিচালনা, সব ক্ষেত্রে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চেষ্টা করছেন কিছু নেতা। কলকাতা পুরসভা নির্বাচনের সময়ও তেমনই ঘটেছিল। টাকা-পয়সা ভাগাভাগিতেও বিপুল দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি।


ঘটনাচক্রে এ দিনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছেন শান্তনু। তাতে বনগাঁ-বাগদা প্রস্তাবিত রেল লাইনের জন্য দ্রুত জমি অধিগ্রহণ করার দাবি জানিয়েছেন তিনি। সেই পরিস্থিতিতে শান্তনুর সঙ্গে রীতেশ-জয়প্রকাশের গোপন বৈঠকে অশনি সঙ্কেত দেখছেন বিজেপি-র একাংশ।