প্রকাশ সিন্হা, সমীরণ পাল, ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা : নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তে ( Recruitment Scam )  রথীন ঘোষকে ( Rathin Ghosh )  ইডির ( ED ) ম্য়ারাথন জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হল। টানা ১৯ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর, মধ্যরাতে খাদ্যমন্ত্রীর বাড়ি ছাড়লেন তদন্তকারীরা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মধ্যরাত, মধ্যমগ্রামে রথীন ঘোষের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালায় কেন্দ্রীয় এজেন্সি। এছাড়াও আরও ৯ জনের বাড়ি এবং চারটি পুরসভাতেও ম্যারাথন তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় এজেন্সির অফিসাররা। 



কী জিগ্যেস করা হল তাঁকে, কী জানতে চাওয়া হল ? খাদ্যমন্ত্রী  জানালেন, 'যা জানতে চাওয়া হয়েছে সব বলেছি' । তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকেই ইডির অভিযান। এরই মধ্যে ইডি-বিরোধী রব তুলেছে তাঁর সমর্থকেরা। উঠেছে 'ভাগ ইডি ভাগ' স্লোগান।  



১৩ জায়গায় তল্লাশি : বৃহস্পতিবার পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে বিশেষ সক্রিয় হয়ে ওঠে ইডি। কাকভোরে হানা খোদ মন্ত্রীর বাড়িতে হানা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল। দিনভর ১৩ জায়গায় তল্লাশি চলে। এক কথায় যাকে বলে ম্য়ারাথন রেড! একই দিনে খাদ্য়মন্ত্রী ও মধ্যমগ্রাম পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্য়ান রথীন ঘোষের বাড়ি থেকে শুরু করে, আরও সাতজন প্রাক্তন ও বর্তমান চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, এক পুরকর্মীর বাড়ি এবং একজন IAS অফিসারের ফ্ল্যাটে হানা দেয়  ED।  এছাড়াও মধ্যমগ্রাম পুরসভা, দক্ষিণ দমদম, কামারহাটি ও কাঁচরাপাড়া পুরসভাতেও তল্লাশি চালান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী অফিসাররা।


বৃহস্পতিবার, সকাল ৬টা নাগাদ মাইকেলনগরে তাঁর বাড়িতে পৌঁছে যান ED-র অফিসাররা। ২০০৯ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তৃণমূল পরিচালিত মধ্যমগ্রাম পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন রথীন ঘোষ। অন্যদিকে ED সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, ২০১৪ থেকে ২০১৮-র মধ্যে পুরসভাগুলিতে নিয়োগ-দুর্নীতি হয়েছে। সূত্রের খবর, এদিন প্রথমেই খাদ্য়মন্ত্রীর মোবাইল ফোন নিয়ে নেন ED অফিসাররা। খতিয়ে দেখা হয় তাঁর ল্যাপটপ। এদিন বিকেলে মধ্যমগ্রাম পুরসভাতেও যায় ED-র টিম।
স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ED-র হাতে গ্রেফতার হয়ে জেলবন্দি রয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আর এবার পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায়, উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রাম পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষের বাড়িতে হানা দিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। 


খাদ্য়মন্ত্রী রথীন ঘোষের আগে, ভোর ৫টায়, তৃণমূল পরিচালিত কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহার বেলঘরিয়ার বাড়িতে যায় ED-র টিম। এদিন বেলায় ১২টা নাগাদ, কামারহাটি পুরসভাতেও যান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসাররা। তার আগে সকাল ৭টা নাগাদ, টিটাগড় পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রশান্ত চৌধুরীর বাড়িতেও হানা দেয় ED। এর পাশাপাশি, কাঁচরাপাড়া পুরসভাতেও যান ED-র আধিকারিকরা। সেখানে কিছুক্ষণ থাকার পর, ওই পুরসভার কর্মী মিজানুর রহমানের বাড়িতেও যান তাঁরা।

এছাড়াও তৃণমূল পরিচালিত বরানগর পুরসভার চেয়ারপার্সন অপর্ণা মৌলিক এবং ওই পুরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অনিন্দ্য চৌধুরীর বাড়িতেও এদিন তল্লাশি চালায় ED।  এদিন দক্ষিণ দমদম পুরসভার পাশাপাশি,
সেখানের ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই দত্ত, এবং প্রাক্তন চেয়ারম্যান পাচু রায়ের বাড়িতেও হানা দেয় ED। পুর নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে মামলায় IAS অফিসার জ্যোতিষ্মান চট্টোপাধ্যায়ের সল্টলেকের ফ্ল্যাটেও যায় ইডি। বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে এক দিনে ১৩ জায়গায় তল্লাশি চালালেন, ED-র মোট ৮০ জন অফিসার। কিন্তু, পুর নিয়োগ দুর্নীতির মাথার খোঁজ কি মিলবে?

আরও পড়ুন :


সাত লক্ষে গ্রুপ সি বা টাইপিস্ট ৪ লাখে ড্রাইভার ! পুরসভায় দেদার চাকরি বিক্রি, দাবি তদন্তকারীদের