সন্দীপ সরকার ও ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা : রাজ্যে একসঙ্গে হানা দিচ্ছে ডেঙ্গির (Dengue) দুই প্রজাতি। নাইসেড (NICED) সূত্রে খবর, সেপ্টেম্বরের তুলনায় অক্টোবরে DENG 2-র প্রকোপ বেড়েছে। এদিকে কোনও ডেঙ্গি আক্রান্তের অতীতে করোনা (Corona) হয়েছে কি না তা আলাদা করে নথিভুক্ত করে খতিয়ে দেখছে করছে স্বাস্থ্য দফতর (West Bengal Health Department)। স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর, ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু কমানোই এখন মূল লক্ষ্য।


ডেঙ্গির জোড়া ফলা !


রাজ্যে লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। যার মাঝে পরপর মৃত্যু ! বাড়তে থাকা সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী গ্রাফের মধ্যেই নাইসেড সূত্রে খবর, রাজ্যে একসঙ্গে হানা দিচ্ছে ডেঙ্গির দুই প্রজাতি। ডেঙ্গ্ ২ ও ডেঙ্গ্ ৩ সেরোটাইপ। প্রত্যেক মাসে ৪০০টি করে রক্তের নমুনা নাইসেডে পাঠায় স্বাস্থ্য দফতর। নাইসেড সূত্রে খবর, অক্টোবরে নমুনা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৬০ শতাংশ রক্তের নমুনায় DENG 3 সেরোটাইপ। DENG 2 ধরা পড়েছে ৪০ শতাংশ নমুনা পরীক্ষায়। যা সেপ্টেম্বরের রিপোর্টের তুলনায় বেশি উদ্বেগজনক।


বিপজ্জনক প্রজাতি


নাইসেড সূত্রে খবর, সেপ্টেম্বরে ৩৭ শতাংশ নমুনায় মিলেছিল DENG 3 সেরোটাইপ, DENG 2 সেরোটাইপের দেখা যায় ২৭ শতাংশ নমুনায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, DENG-3-র চেয়ে DENG 2 অনেক বেশি বিপজ্জনক। ২০১৯ সালে যখন ভয়াবহ চেহারা নেয় ডেঙ্গি, সেই বার দাপট দেখিয়েছিল DENG 2।


এবার ইতিমধ্যেই রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৫১ হাজার পেরিয়েছে। ৭৫ জনের মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। DENG 2 ও DENG 3-র জোড়া হানার ফলেই ডেঙ্গি ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে বলেছে মনে করছেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসক শিবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'একসঙ্গে যখন দুটো ভাইরাস থাকে তখন একটার অ্যান্টিবডি আরেকটির ক্ষেত্রে কাজ করে না। একবার এক প্রজাতির দ্বারা আক্রান্ত হলে যে পরে অন্য প্রজাতিতে আক্রান্ত হবে না, তার গ্যারান্টি নেই। বরং দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হলে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।'


অতীতে কি করোনা ? আলাদা করে নথিভুক্ত 


এদিকে, এখন থেকে ডেঙ্গি আক্রান্তের অতীতে করোনা হয়েছে কিনা তা আলাদা করে নথিভুক্ত করছে স্বাস্থ্য দফতর। সেই রোগীদের বিষয়ে বাড়তি সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অতীতে করোনা সংক্রমণ হয়ে থাকার জন্য কি ডেঙ্গি আক্রান্তের আচমকাই শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে? কতদিন পর তিনি সুস্থ হয়ে উঠছেন, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অতীতে করোনা ও এবার ডেঙ্গি হওয়ার পর কারও মৃত্যু হলে সেই তথ্যও সংগ্রহ করে মূল্যায়ন করা হচ্ছে। 


 


আরও পড়ুন- আক্রান্ত ৫১ হাজার পার ! ভয়ঙ্কর ডেঙ্গি পরিস্থিতিতেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্লেটলেটের আকাল