ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: SIR শুরুর দিনই পানিহাটিতে NRC আতঙ্কে আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছিল। কোচবিহারে আত্মহত্যার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল। এরই মধ্যে পানিহাটি, দিনহাটার পর ইলামবাজার, ফের 'SIR আতঙ্কে' আত্মহত্যার দাবি। 

Continues below advertisement

বীরভূমের ইলামবাজারে বৃদ্ধের আত্মহত্যা ঘিরে রহস্য। জানা গিয়েছে, আত্মঘাতী বৃদ্ধের নাম ক্ষিতীশ মজুমদার। SIR আতঙ্কে আত্মহত্যা, এমনটাই দাবি পরিবারের। আত্মীয়দের তরফে দাবি,  'বারবার বলতেন, ২০০২-এর ভোটার তালিকায় নাম নেই। আবার কি বাংলাদেশে ফিরে যেতে হবে?'।

প্রসঙ্গত, ৩০ বছর আগে বৃদ্ধের পরিবার বাংলাদেশ থেকে মেদিনীপুরে বসবাস শুরু করেন। ৫-৬ মাস আগে ইলামবাজারে মেয়ের বাড়িতে আসেন বৃদ্ধ। মেয়ের কাছেই থাকছিলেন ক্ষিতীশ মজুমদার, দাবি পরিবারের। ভোটার তালিকায় তাঁর নামও ছিল, ভোটও দিয়েছেন বহুবার, দাবি পরিবারের। ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহ বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। 

Continues below advertisement

এদিকে, ইলামবাজারে SIR আতঙ্কে আত্মহত্যার দাবি ঘিরে সরব তৃণমূল। সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট তৃণমূল কংগ্রেসের। সেখানে লেখা হয়েছে, 'বীরভূমে আরও একটা দামি প্রাণ হারিয়ে গেল। সুভাষ পল্লির এক বৃদ্ধ আত্মঘাতী হয়েছেন বলে খবর। NRC আতঙ্কে ভুগছিলেন উনি। পরিবার বলছে, SIR নিয়ে উদ্বেগে থাকার জন্যই এই পরিণতি। এটা কোনও ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি নয়, এই মৃত্যুকে এড়ানো যেত। বাংলা-বিরোধী নীতির জন্যই যে এই পরিণতি, সেটাই মনে করিয়ে দিল। বিজেপির এই প্রতিশোধমূলক আচরণে আপনারা ভয় পাবেন না। আমরা যতদিন আছি, আপনাদের অধিকার, পরিচয় সুরক্ষিত থাকবে'। 

এদিকে পর পর এই ঘটনায় বিজেপিকে বিঁধেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'গত পরশুদিন জাতীয় নির্বাচন কমিশন SIR ঘোষণা করেছে এবং তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে, আমরা খবর পাই যে, ৫৭ বছরের একজন পুরুষ, অবিবাহিত, তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন, NRC, SIR-এর ভয়ে তিনি নিজের প্রাণ নিজে নিয়েছেন। স্থানীয় বিজেপির নেতারা যদি এখানে ঢোকেন ঘিরে ধরবেন এদের। পোস্টে বেঁধে রাখবেন, হাত তুলবেন না। বলবেন সার্টিফিকেট নিয়ে আয়, তারপর তোর দড়ি খুলব যা।' 

পাল্টা সুর চড়িয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, 'অভিষেক বন্দোপাধ্যায় যে কথা বলেছেন, সেই কথা অত্যন্ত প্ররোচনা মূলক এবং এইভাবে একটা অশান্তি তৈরি করার চেষ্টা পশ্চিমবঙ্গে হচ্ছে। আমার মনে হয় নির্বাচন কমিশনের বিষয়টি দেখা উচিত। এইভাবে যদি SIR-এর ক্ষেত্রে বিজেপিকে দায়ী করা হয় এবং বিজেপির লোকদেরকে বেঁধে রাখার বিধান দেওয়া হয়, তাহলে আমাদের কাছে দড়ি নেই এরকম নয়, হাতও নেই এরকম নয়। বাঁধাবাঁধি শুরু হলে কিন্তু অনেকে বাঁধা পড়বে। কেউ কেউ আবার ED, CBI-এর হাতেও বাঁধা পড়তে পারে। তাহলে কিন্তু কয়েক বছর পর বেরোবে। তার আগে বেরবে না।'