আবীর দত্ত, হুগলি : হাওড়ার শিবপুরের ( Howrah Shibpore ) পর হুগলির রিষড়া, রাম নবমীর ( Ram Navmi ) মিছিল ঘিরে অশান্তির আগুন। ইটবৃষ্টি, ভাঙচুর, হল অগ্নিসংযোগও। অশান্তির ঘটনায় এখনও পর্যন্ত একাধিক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার রাত ১০টা পর্যন্ত রিষড়ায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করল প্রশাসন।



আজও থমথমে রিষড়া


রবিবার রাম নবমীর মিছিল ঘিরে অশান্তির পর আজও থমথমে রিষড়া। দোকানপাট বন্ধ। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। রিষড়ার বিভিন্ন এলাকায় চলছে টহলদারি। শান্তি বজায় রাখতে মাইকে প্রচার চালাচ্ছে পুলিশ। 


ইটবৃষ্টি, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ


রবিবার রিষড়ার বাঙুর পার্ক থেকে রাম নবমীর মিছিল বের হয়। মিছিলে যোগ দেন দিলীপ ঘোষ ( Dilip Ghosh ) -সহ বিজেপি ( BJP ) নেতারা। মিছিল ওয়েলিংটন জুটমিলের কাছে পৌঁছতেই অশান্তি শুরু হয়। ইটবৃষ্টি, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। পরে চন্দননগরের পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকায় জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। রিষড়াকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।


রাজ্যপাল ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি


রিষড়ার হিংসার ঘটনায় কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ চেয়ে রাজ্যপাল ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন পুরশুড়ার বিজেপি বিধায়ক বিমান ঘোষ। চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে, গতকালের ওই ঘটনায় যাঁরা আক্রান্ত, পুলিশ তাঁদেরকেই নিগ্রহ ও গ্রেফতার করছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছেন বিজেপি বিধায়ক। 


কল্যাণ বনাম দিলীপ

এই ঘটনা নিয়ে বাগযুদ্ধে জড়িয়েছে তৃণমূল ও বিজেপি। রবিবার আসেন স্থানীয় সাংসদ ও তৃণমূল নেতা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, বহিরাগতদের নিয়ে এসে পরিকল্পিতভাবে অশান্তি করা হয়েছে। তিনি বলেন, ' গোটা রাস্তা বাইরের লোকে ভর্তি। রিষড়ার কোনও লোক নেই। শ্রীরামপুরের কোনও লোক নেই। সমস্ত বাইরের লোক নিয়ে এসেছে। সব বাইরের লোক নিয়ে এসে অশান্তি করা হয়েছে। দিলীপ ঘোষ ছিল। ঝামেলা হওয়ার একটু আগে বেরিয়ে যান।' তাঁর আরও অভিযোগ, 'দিলীপ ঘোষ প্রোভোক করে দিয়ে চলে গেছে। হি ইজ দ্য পারপিটেটর অফ দ্য ক্রাইম। ' 


পাল্টা দিলীপ ঘোষ বলেন, 'কল্যাণ গেলে গন্ডগোল হয় না। দিলীপ গেলে গন্ডগোল হয়ে যায়। কে আসবে না আসবে উনি ঠিক করবেন না আয়োজকরা ঠিক করবে?'


অন্যদিকে, রিষড়ায় অশান্তির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। চিঠিতে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অভিযোগ তুলে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তিনি। 


চন্দননগরের সিপি জানিয়েছেন, রিষড়ার পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।