কলকাতা: রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি (Health department Corruption) নিয়ে বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে একাধিক অভিযোগ আনলেন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা ও নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী (West Bengal LoP Suvendu Adhikari)। ২০১৬ সাল থেকে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল খোলার নামে টেন্ডারে বড়সড় দুর্নীতি হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। দাবি করেন স্বাস্থ্য দফতরের একাধিক কর্তার নামে প্রচুর বেনামি সম্পত্তি রয়েছে বলেও। স্বাস্থ্য দফতরের দুর্নীতি নিয়ে ইডিকে দিয়ে তদন্ত করানোরও দাবি জানান শুভেন্দু অধিকারী।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, "২০১২ সালের পর থেকে অনেক ভুয়ো কোম্পানি তৈরি করে টেন্ডার দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে কয়েকটা পবন অরোরা, মেনকা গম্ভীরদের কোম্পানি রয়েছে। যাঁরা ভাইপোর আত্মীয়। মূলত পাঁচটা কোম্পানি সমস্ত টেন্ডারগুলো পেয়েছে। ভুয়ো কোম্পানি তৈরি করে টেন্ডার দুর্নীতি হয়েছে। টেন্ডার পেয়ে যাওয়ার পর বন্ধ হয়ে যায় কোম্পানিগুলো। ২০১৬ সালে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালতেও টেন্ডার দুর্নীতি হয়েছে। ভাইপোর আত্মীয়ের কোম্পানির নামে এই টেন্ডারগুলো ইস্যু করা হয়েছিল। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের নামেও প্রচুর বেনামি সম্পত্তি রয়েছে। করোনা-কালে স্বাস্থ্য দফতরে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। কেন্দ্রের স্বাস্থ্য মিশনের টাকা নয়ছয় করেছে রাজ্য সরকার। এছাড়া আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ এই আত্মীয়র কোম্পানি রয়েছে সেলকন বলে তাকেও একাধিক টেন্ডার পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। এই পুরো প্রক্রিয়া প্রথমে দেবাশীষ বসু করেছেন ২০১৬ সাল থেকে। তিনি স্বাস্থ্য দফতরের একাধিক ক্ষেত্রে চেয়ারম্যান ছিলেন। পরবর্তী কালে এই কাজ করেছেন মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়। যিনি আজকে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান। এছাড়া পবন অরোরার কোম্পানিকে হাজার একর জায়গা বালি খাদানের জন্য দেওয়া হয়েছে। যে সম্পর্কিত তথ্য আমি পরে দেব। মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় ২০২৩ সালে আট কোটি টাকা দিয়ে পাঞ্জাব থেকে লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুল্যান্স কিনেছে। এর মধ্যে প্রদীপ চক্রবর্তীও আছেন। পশ্চিমবঙ্গে কোথাও টাটা, মাহিন্দ্রা বা অশোক লেল্যান্ডসের মতো কোম্পানি নেই যে পাঞ্জাব থেকে অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে আসা হয়েছে। এসব আসলে সব কাটমানি খাওয়ার ধান্ধা। মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় মেয়ের নামে নিউটাউনে ফ্ল্যাট কিনেছেন। এসবই কাটমানির টাকা। নারায়ণস্বরূপ নিগম ও সঞ্জয় বানসালের নামে প্রচুর বেনামি সম্পতি রয়েছে। বায়োমেডিক্যাল ওয়েস্ট ট্রিটমেন্টের টেন্ডারও জোন ভাগ করে করে বেআইনিভাবে দেওয়া হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে টেন্ডার ছাড়াই এগুলো দেওয়া হয়েছে। করোনার সময়ও পিপিই কিট, এন ৯৫ মাস্ক সহ বিভিন্ন জিনিস নারায়ণস্বরূপ নিগম, মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় ও সঞ্জয় বানসাল বেআইনিভাবে পবন অরোরার কোম্পানি ছাড়া প্রদীপ চক্রবর্তী ও পল্লব গুপ্তের সংস্থাকে দিয়েছে। যা নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে। এছাড়া তন্তুজের অবসরপ্রাপ্ত ম্যানেজিং ডায়রেক্টর রবীন রায়কে সামনে রেখে আগের মুখ্যসচিব ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা তিনি এই সমগ্র দুর্নীতি অর্গানইজ করেছেন। আমাদের কাছে সব নথি রয়েছে।"
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।