কলকাতা: এবার চিকিৎসকদের আন্দোলনকে বেলাগাম আক্রমণ মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের। হাসপাতালের চিকিৎসকরাই দালালচক্র চালান বলে অভিযোগ করলেন তিনি। আন্দোলনের নামে চিকিৎসকরা কী করছেন, প্রশ্ন তুললেন তিনি। পাশাপাশি, চিকিৎসকদের কাছে এত টাকা আসছে কোথা থেকে, প্রশ্ন তোলেন। শোভনদেবকে পাল্টা জবাব দিয়েছেন চিকিৎসকরাও। (Sovandeb Chattopadhyay)
দেগঙ্গার একটি অনুষ্ঠান থেকে চিকিৎসকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শোভনদেব। তাঁকে বলতে শোনা যায়, "কোথা থেকে আসছে এই টাকা? এত টাকা আসছে কোথা থেকে? ডাক্তারবাবুরা এত টাকা পাচ্ছেন কোথা থেকে? বলছেন, আন্দোলন হচ্ছে আন্দোলন। আন্দোলনের নামে আপনারা কী করছেন? পিছন থেকে সিপিএম দখল নিয়েছে। কিসের আন্দোলন?" (RG Kar Protests)
চিকিৎসকদের দিকে আঙুল তুলে শোভনদেব বলেন, "একটা হাসপাতালে গেলে চারিদিকে দালাল ঘুরে বেড়াচ্ছে। লাইনে গেলে সিট পাবেন না। বড় বড় ডাক্তারদের দালাল ঘুরে বেড়াচ্ছে। দালাল বাইরে দাঁড়িয়ে বলবে, ৫০০০০ টাকা দিলে কেবিনে ভর্তি হয়ে যাবে। একদম পিজি হাসপাতালের পাশে বাড়ি আমার। ১০০-১৫০ দালাল ঘুরছে। ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবে, টাকা নেবে। হাফ হাফ করবে। ডাক্তারকে বেশি দেবে, নিজেরা কম নেবে। এই তো ডাক্তারদের চরিত্র হয়ে গিয়েছে!"
শোভনদেবের এই আক্রমণের জবাব দিয়েছেন চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী। তাঁর কথায়, "শোভনদেববাবু অযৌক্তিক কথা বলছেন। ওঁর মতো বর্ষীয়ান রাজনীতিকের কাছ থেকে এটা আশা করি না। চিকিৎসকদের হাতে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা, শয্যা, কখন কোথায় খালি হবে, কবে কী ঠিক হবে, এগুলি চিকিৎসকেরা ঠিক করেন না। এগুলি ঠিক করেন একশ্রেণির কর্মী। দালালচক্র নিয়ে চিকিৎসকরাই তার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন।"
টাকার প্রশ্নে সুবর্ণ বলেন, "উনি ভুলে যাচ্ছেন যে রাজ্যে চিকিৎসকের সংখ্যা ৯৪ হাজার। ২০ হাজার চিকিৎসকের প্রত্যেকে ২০০০০ টাকা করে দিলে ৪ কোটি টাকা ওঠে। বাইরে থেকে অনুদানের প্রয়োজন পড়ে না। শোভনদেববাবু ভুলে গিয়েছেন, ওঁরা যখন আন্দোলন করতেন, এখন তো আর করেন না! যে সময় করতেন, পরে যদিও জানা গিয়েছে সেগুলি ষড়যন্ত্র। সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামের সময়কার কোটি কোটি টাকার হিসেব কিন্তু দেন না! ডাক্তাররা নিজেরা টাকা দিয়েই আন্দোলন করতে পারে। আন্দোলন কোনও অপরাধ নয়, গণতান্ত্রিক অধিকার। তাই পিছনে কারা রয়েছে, সেটা না দেখলেও চলবে। বরং অপরাধ, খুন-ধর্ষণ, চুরি-ডাকাতি, দুর্নীতি, লুঠের পিছনে কোন রাজনৈতিক দল রয়েছে, তা জানতে গেলে আঙুল নিজেদের দিকে ঘোরাতে হয়। তাই এসব বলছেন।"