সমীরণ পাল, গাইঘাটা: ভোটের (Loksabha Election 2024) মুখে একশো দিনের কাজের (100 Days Work Scam) টাকা নিয়ে নতুন দুর্নীতির অভিযোগ। তবে এবার, দুর্নীতির অভিযোগ উঠল, একশো দিনের কাজে রাজ্য় সরকারের দেওয়া টাকা নিয়ে। উত্তর ২৪ পরগনার সুটিয়ার কয়েকজন বাসিন্দা দাবি করলেন, কাজ না করেও তাদের অ্য়াকাউন্টে টাকা ঢুকেছে। আর সেই টাকার সামান্য একটা অংশ রেখে, বাকি টাকা নাকি দিয়ে দিতে হয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের।



একশো দিনের কাজের টাকায় দুর্নীতির: লোকসভা ভোটের মুখে ফের একশো দিনের কাজের টাকায় দুর্নীতির মারাত্মক অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মোদি সরকারের দেওয়া টাকা তছরুপের অভিযোগ উঠেছিল আগেই। এবার রাজ্য সরকারের দেওয়া টাকা নিয়েও দুর্নীতির চাঞ্চল্য়কর অভিযোগ উঠল সেই তৃণমূলের বিরুদ্ধেই। ১০০ দিনের কাজের টাকা দেয় কেন্দ্র। উত্তর ২৪ পরগনার সুটিয়া পঞ্চায়েতের বিজেপির সদস্যের অভিযোগ, এমন অন্তত ১৫ জনের অ্যাকাউন্টে রাজ্য সরকারের দেওয়া টাকা ঢুকেছে, যাঁরা ১০০ দিনের কাজই করেননি। এরপর জবকার্ড পিছু ৫০০ টাকা রেখে বাকি টাকা তাঁদের দিয়ে দিতে বলেছেন তৃণমূলকর্মী দেবেন ঘোষ ও ডলি মণ্ডল। যিনি আবার ১০০ দিনের কাজের সুপারভাইজার।


সুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য ও বিজেপি নেতা অনুপ  বিশ্বাসের অভিযোগ, ১৫ জনের অ্যাকাউন্টে ৫ হাজার, ৬ হাজার টাকা করে ঢুকিয়েছে। সব মিলিয়ে ৮১ হাজার ৫৫৪ টাকা ঢুকিয়েছে।  সুপারভাইজার ডলি মণ্ডল এবং দেবেন ঘোষ নামে স্থানীয় তৃণমূল নেতা আছেন বলেছেন এই টাকাটা দিয়ে দেবে। নাহলে পুলিশ নিয়ে আসব।  সুটিয়া পঞ্চায়েতের বাসিন্দা ললিতা রায় বলেন, “আমাদের বলল টাকা ঢুকেছে সেই টাকাটা আমাদের তুলে দাও। বলল আমাদের সাড়ে ৪ হাজার টাকা দাও। তুমি ৫০০ টাকা রেখে দাও। ডলির হাতে টাকা দিয়ে দিয়েছি।’’ আরেক বাসিন্দা গায়ত্রী বিশ্বাস বলেন, “আমায় বলেছে টাকা ফেরত দাও ৫০০ টাকা দেব। কাজ করিনি, তাও টাকা ঢুকেছে। ৫০০ টাকা রেখে বাকি টাকা দিয়ে দিয়েছি।’’ ওই পঞ্চায়েত এলাকার আরেক বাসিন্দা সুমিত্রা মল্লিকের অভিযোগ, “সুপারভাইজার ডলি মণ্ডল জেসিবি দিয়ে পুকুর কাটিয়েছে। কিন্তু, ১০০ দিনের কাজ বলে টাকা তুলে নিয়েছে।’’


কেন্দ্রীয় বঞ্চনার জেরে বহু শ্রমিক প্রাপ্য় মজুরি পাননি বলে দাবি করে বঞ্চিত এই শ্রমিকদের বকেয়া মেটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মুখ্য়মন্ত্রী। সেই মতো অ্য়াকাউন্টে টাকা পাঠাতে শুরু করেছে রাজ্য় সরকার। চলতি ফেব্রুয়ারি মাসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “২১ ফেব্রুয়ারি, আমাদের যে ২১ লক্ষ, ১০০ দিনের কাজের কর্মচারীদের তিন বছর ধরে টাকা দেওয়া হয়নি, তাঁদের কাজের টাকাটা আমরা তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেব।’’ গাইঘাটায় চাঞ্চল্য়কর এই দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে সাফাই দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তৃণমূলের উপপ্রধান। অন্যদিকে বিডিওর দাবি, তিনি কিছু খুঁজে পাননি। আবার তদন্ত করে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাসও দিয়েছেন। গাইঘাটার বিডিও নীলাদ্রি সরকার বলেন, “মৌখিকভাবে অভিযোগ শুনেছিলাম। প্রাথমিকভাবে তদন্ত করেছিলাম, কিছু পাইনি। আরও খতিয়ে দেখবো। এটা হওয়ার কথা নয়।’’
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।   


আরও পড়ুন: Lok Sabha Election 2024: অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কার্টুন দিয়ে ফ্লেক্স, অম্বিকেশ-প্রসঙ্গ টেনে পাল্টা খোঁচা বিজেপি প্রার্থীর !